‘বক্সিং করার দিন’ নয় বক্সিং ডে!

খেলাধুলার যারা খোঁজ খবর রাখেন তারা কম-বেশি ‘বক্সিং ডে’ শব্দটার সাথে পরিচিত। মজার ব্যাপার হল, এই বক্সিং ডে’র সাথে বক্সিং খেলার কোনো সম্পর্ক নেই।

খেলাধুলার যারা খোঁজ খবর রাখেন তারা কম-বেশি ‘বক্সিং ডে’ শব্দটার সাথে পরিচিত। মজার ব্যাপার হল, এই বক্সিং ডে’র সাথে বক্সিং খেলার কোনো সম্পর্ক নেই।

অস্ট্রেলিয়ান শীতে বক্সিং ডে টেস্টের সুবাদে শব্দটা কমবেশি সব ক্রিকেট প্রেমীরই জানা। এমনকি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্যও বক্সিং ডে ম্যাচের অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটা মাশরাফি বিন মুর্তজার দল খেলেছিল বক্সিং ডে-তে।

এর আগেও তিনবার এর অংশ হয়েছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে দু’বারই প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। ২০০১ সালের সফরে ছিল ওয়েলিংটন টেস্ট। আর ২০০৭ সালে অকল্যান্ডে ছিল ওয়ানডে। বলাই বাহুল্য, কোনোবারই জিততে পারেনি বাংলাদেশ।

এর বাদে ২০০৮ সালেও বক্সিং ডে’তে এই ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামেও বক্সিং ডে তে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। সেই টেস্টের বিশেষত্ব হল, সেবার জাতীয় নির্বাচনের জন্য টেস্টের মাঝের একটা দিন খেলা বন্ধ ছিল। ক্রিকেটে নির্বাচনের জন্য সেবারই প্রথম বারের মত টেস্ট বন্ধের নজীর দেখা যায়।

এখন ব্যাপার হল, বক্সিং ডে কি? কমনওয়েলথভুক্ত অনেক দেশে বড়দিনের পরের দিনটি পালন করা হয় বক্সিং ডে হিসেবে। বড়দিনের মত বক্সিং ডেও বড় একটা উৎসবই বটে। বক্সিং ডে ফুটবলও আয়োজিত হয়।

অন্যান্য অনেক আয়োজনের পাশাপাশি ঐতিহ্যগতভাবে হয়ে আসছে নানারকম খেলাধুলার আয়োজনও। অস্ট্রেলিয়াতে মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট ক্রিকেট সংস্কৃতিরই অংশ হয়ে গেছে। নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকাও আয়োজন করে বক্সিং ডে ক্রিকেট ম্যাচ।

বক্সিং ডে ম্যাচ সবচেয়ে বেশি আলোচিত অস্ট্রেলিয়ায়। প্রতি বছরই ২৬ ডিসেম্বর সেখানে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আয়োজিত হয় বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচ। এবারও হচ্ছে; স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বক্সিং ডে তে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজনের চল ছিল শেফিল্ড শিল্ডে। ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে ম্যাচটা এমসিজিতে হত এই ক্রিসমাসের সময়ে। পরিবারের সাথে বড় দিন উদযাপন করতে পারতেন না বলে নিউ সাউথ ওয়েলসের ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেলার জন্য অনেক পারিশ্রমিকও পেতেন।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে মেলবোর্ন টেস্টটা হয়েছেল ২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর সময়ে। ফলে, টেস্টের তৃতীয় দিনটা ছিল বক্সিং ডে। ১৯৫৩ থেকে ১৯৬৭ অবধি ছয়টা টেস্ট এভাবেই আয়োজন করা হত। ১৯৭৪-৭৫ মৌসুমে প্রথমবারের মত বক্সিং ডেতেই মেলবোর্নে ‍শুরু হয়েছিল সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। ১৯৮০ সাল থেকে বক্সিং ডেতে টেস্ট ম্যাচ শুরু করা অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য এক রকম রীতিতে পরিনত হয়েছে।

ওয়ানডে ক্রিকেট প্রথম বক্সিং ডে ম্যাচ দেখেছে ১৯৮৯ সালে এসে। সেবার মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৩০ রানের ব্যবধানে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...