জয়রথ ছুটছেই ব্রাজিলের।
গতকালকের ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও কাসেমিরোর শেষ মুহুর্তের গোলে ২-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছে সেলেসাওরা। এ জয়ের ফলে টানা ম্যাচ জিতে পূর্ণ নয় পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই রইলো ব্রাজিল।
তিতে দায়িত্ব নেবার পর ৫২ ম্যাচে কেবল চারবার পরাজয়ের মুখ দেখেছে ব্রাজিল। ম্যাচ হারার স্বাদ প্রায় ভুলতে বসা ব্রাজিলকে আজকে কলম্বিয়া হারিয়েই দিচ্ছিলো। কিন্তু তিতের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়ায় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
আগের ম্যাচে জয় পেলেও এদিন একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে তিতের শিষ্যরা। সম্ভবত বিশ্বকাপের আগে আর কোনো বড় টুর্নামেন্ট না থাকায় কোপাকেই প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন তিতে। গোলবারের নিচে আজকে দাঁড়ান ওয়েভারটন। এ নিয়ে তিন ম্যাচে তিন গোলরক্ষক খেললো ব্রাজিলের। সর্বশেষ কবে এরকম ঘটনা ঘটেছে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সেটা মনে করা দুষ্কর। এছাড়াও একাদশে ফেরেন অ্যালেক্স সান্দ্রো, থিয়াগো সিলভা, এভারটন রিবেইরো, কাসেমিরোরা।
ম্যাচ শুরুর আগে কলম্বিয়ান কোচ রেইনালদো রুয়েদা সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন নেইমারকে আটকানোই তাদের মুল পরিকল্পনা। প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই তার পরিকল্পনার সফল প্রয়োগ করে গেছে তার শিষ্যরা, কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। ম্যাচের দশ মিনিটের মাথায় ডান প্রান্ত থেকে কুয়াদ্রাদোর দারুন ক্রসে লুইস ডিয়াস ওভারহেড কিকে গোল করে পুরো স্টেডিয়ামকে নিস্তব্ধ করে দেন।
টানা ছয় ম্যাচ ক্লিনশিট রাখা ব্রাজিল দল জেগে উঠে এরপরই। কিন্তু ইয়েরি মিনা- ডেভিনসন সানচেজ-কুয়াদ্রাদোরাও তো ছেড়ে দেবার পাত্র নন, দাঁতেদাঁত কামড়ে আক্রমণ সামলে যান তারা। নেইমারকে আজকে পুরো বোতলবন্দী করে রেখেছিল কলম্বিয়ার ডিফেন্স, স্বভাবজাত ড্রিবলিং করার সুযোগ নেইমারকে দেয়নি তারা। কখনো নেইমারকে চার-পাঁচজন মিলে ঘিরে রেখেছেন আবার কখনো পাসিং জোন ব্লক করে গেছেন। ফলে কলম্বিয়ার গোল অভিমুখে একটি শটও নিতে পারেননি নেইমার।
গোলের আশায় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এভারটনকে তুলে ফিরমিনোকে নামান তিতে। কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে খুব বেশি সময় নেননি এই লিভারপুল তারকা, বাঁ প্রান্ত দিয়ে রেনান লোদির ক্রসে দারুণ হেড করে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান তিনি। গোলের পরই ক্ষোভে ফেটে পড়ে কলম্বিয়া, রেফারির সাথে তর্ক জুড়ে দেন ওসপিনা-কুয়াদ্রাদোরা। ক্রস করার আগে বল রেফারির গায়ে লাগায় সেটা নিয়েই আপত্তি ছিল তাদের। কিন্তু রেফারি ভিডিও অ্যাসিট্যান্ট রেফারির সহায়তা নিলেও নিজের গোলের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। ফলে সমতায় ফিরে ব্রাজিল। সমতায় ফেরার পর আক্রমণের ধার বাড়ায় ব্রাজিলিয়ানরা।
কাসেমিরো শুরু থেকে খেলেছেন এমন ম্যাচে এখনো জয় ব্যতীত অন্য কোনো ফলাফল নিয়ে মাঠ ছাড়েনি ব্রাজিল। ম্যাচ শেষ হবার ঠিক আগ মুহূর্তে সম্ভবত সেটাই মনে পড়েছিল এই মিডফিল্ডারের। যোগ করা সময়ের দশম মিনিটে নেইমারের কর্নার থেকে হেড করে বল জালে জড়ালে জয় নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের। গোলের পর বাঁধভাঙা উল্লাসে মাতেন ব্রাজিলের ফুটবলাররা অন্যদিকে কলম্বিয়ার ফুটবলারদের চোখেমুখে তখন রাজ্যের অন্ধকার।
এই জয়ের ফলে বি গ্রুপে তিন ম্যাচে পূর্ণ নয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত করলো ব্রাজিল। আগামী ২৮ তারিখ ইকুয়েডরের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে সেলেসাও শিবির।