বর্তমান যুগের সেরা বোলার কে? এমন প্রশ্নে হয়তো অনেকেই মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জাসপ্রিত বুমরাহ বা ট্রেন্ট বোল্টের নাম বলবেন। তবে ভারতের সেরা বোলার যে জাসপ্রিত বুমরাহ সে বিষয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়। বোলার হিসেবে তিনি যে জাহির খান বা জাভাগাল শ্রীনাথের থেকেও কার্যকারী তার প্রমান তিনি দিয়েছেন বারবার। বোলার হিসেবে তিনি একজন ম্যাচ উইনার যেমনটা ব্যাট হাতে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি।
বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচে নিজের শেষ ওভার করে বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করতে ফিরে আসেন বুমরাহ। তখন গ্যালারিতে বসা প্রতিটি দর্শক তাদের আসন থেকে উঠে তাঁর আরেকটি অসাধারণ পারফরম্যান্সের সম্মান প্রদর্শন করেন। ক্যামেরা যখন বুমরাহের দিকে ঘোরানো হয় তখন তিনি হাত নাড়িয়ে তাঁর চিরচেনা হাসি দেন।
যারা গত ১ মাসে বুমরাহকে দেখেছেন তাঁদের কাছে বুমরাহ এর প্রতিটি উইকেট শিকার হয়তো মনে গেথে গেছে। উইকেটগুলি দখল করতে তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ধরণের বল। তাঁর প্রতিটি উইকেটই যেন ছিল এক একটি শিল্প। যা ভারতের বিশ্বকাপ যাত্রার গল্প তুলে ধরে। বুমরাহ তার জাদুকরী স্পেলগুলোর মাধ্যমে প্রতিটি ভক্তের মনে জায়গা করে নিয়েছেন ।
এমন একটি কঠিন ফরম্যাটে একজন বোলারের পক্ষে এতোগুলি দুর্দান্ত বল করা অসম্ভব বলে মনে হলেও বুমরাহ তা করে দেখিয়েছেন। সব ধরণের ফরম্যাটের কথা ভাবলেও এমন বড় মঞ্চে ১৯৯৯ সালে শেন ওয়ার্নের কীর্তি ও ১৯৯২ সালে ওয়াসিম আকরামের জাদুতেই স্মৃতি থেমে যাবে সবার । আর এই বিশ্বকাপটি ছিল অদ্ভুতভাবে অসমমাত্রায় বুমরাহের বিশ্বকাপ।
বর্তমানে সাদা বলের টুর্নামেন্টগুলিকে বলা হয় ব্যাটারদের টুর্নামেন্ট। মাঠের আকার থেকে শুরু খেলার ধরণ পর্যন্ত সব কিছুই যেন ব্যাটারদের জন্যই। তবুও টুর্নামেন্ট যে বোলররা জেতায় তারই প্রমাণ দিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ। এমন নয় যে ভারতে আগে কখনো ভাল মানের বোলার আসেনি। কিন্তু কোনো বোলারই বিশ্ব মঞ্চে তাঁর মতো মনোযোগ আকর্ষন করাতে পারেননি।
বুমরাহ শুধু ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ বোলারই নন, বরং সম্ভাব্য সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তিনি হয়তো দেশের ব্যাটারদের মতো বিশাল পরিংখ্যান এবং রেকর্ড নিয়ে অবসর নিতে পারবেন না। তবে তিনি সাবেক শচীন, যুবরাজ কিংবা হালের বিরাট, রোহিতের মতো কিংবা তাঁদের থেকেও উপরে সেরা ম্যাচ বিজয়ী হিসেবে শেষ করতে পারবেন।