আইসিসির নিয়ম অনুসারে প্রতিবার বিমান ভ্রমণে প্রত্যেক দলের জন্য মাত্র চারটি করে বিজনেস ক্লাস বরাদ্দ রয়েছে। সাধারণত সেই চারটি সিট দলের অধিনায়ক, সহ-অধিনায়ক এবং ম্যানেজারই বসে থাকেন। কিন্তু এবারে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, কোচ তাদের পেস বোলারদের আরামের জন্য বিমান ভ্রমণে নিজেদের আরামদায়ক বিজনেস ক্লাস সীট ছেড়ে দিয়ে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রায় সব দেশের পেস বোলাররাই আলো ছড়িয়েছেন। এখন সুপার টুয়েলভ পর্যন্ত ৭৬ শতাংশ উইকেট নিয়েছেন পেসাররা। বোঝাই যাচ্ছে বিশ্বকাপে ভাল করার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে পেসাররা। তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপে ম্যাচের প্রায় ৭০% বোলিং করানো হয়েছে পেসারদের দিয়ে। এতে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে কতটা পরিশ্রম করতে হচ্ছে পেসারদের। সাথে অস্ট্রেলিয়ার বড় বাউন্ডারিতে ফিল্ডিংয়ের বিষয়টা তো আছেই। সব দিক বিবেচনা করে পরিশ্রমের দিক থেকে পেসারদের চাপ টাই বেশি পড়ছে।
সেই সব কিছু বিবেচনা করেই এবার ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, সহ অধিনায়ক, কোচ এবং সিনিয়র ক্রিকেটার বিরাট কোহলি অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। প্রতিনিয়ত তারা মাঠে বিভিন্ন রেকর্ড করে বিভিন্ন দৃষ্টান্ত তৈরি করছেন কিন্তু এবার মাঠের বাইরেও করলেন।
এবারের বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়ার ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যার ভেতরে টিম ইন্ডিয়াকে ৫ টিতে খেলতে হচ্ছে। আর এই পাঁচ শহরে যাতায়াতের জন্য আনুমানিক ৩৪০০০ কিলোমিটার দূরত্ব ভ্রমণ করতে হচ্ছে।যা খেলোয়াড়দের জন্য শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকেই কষ্টকর। বিশেষ করে পেস বোলারদের জন্য। কেননা মাঠে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম তাদের ওপরেই পড়ছে। এরপর এইসব ভ্রমণের ক্লান্তি তো রয়েছেই।
এইসব থেকে মুক্তি দিতে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা, কোচ রাহুল দ্রাবিড় নিজেদের জন্য বরাদ্দকৃত বিজনেস ক্লাস সিট ছেড়ে দিয়েছেন মোহাম্মদ শামি, ভূবনেশ্বর কুমার, হার্দিক পান্ডিয়াদের জন্য। যাতে তারা ভ্রমনে একটু বেশিই আরাম পান। ভ্রমণ ক্লান্তি যেন তাদের পারফরম্যান্সে কোন প্রভাব ফেলতে না পারে এইজন্য নিজেদের আরামের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে পেসারদের একটু বাড়তি সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে পেসারদের থেকে সেরা পারফরম্যান্স টাই বের করতে চাইছেন ভারতীয় অধিনায়ক এবং কোচ।
দলের সাপোর্ট স্টাফদের একজন বলেন, ‘এটা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই আমরা ঠিক করি। যেহেতু এবারের বিশ্বকাপে পেসারদেরকেই বেশি পরিশ্রম করতে হবে, তাই তাদের আরামের জন্য আমরা কোচ এবং অধিনায়ককে নিয়ে এই পরিকল্পনা করি।’
এখন পর্যন্ত সুপার টুয়েলভে বিপক্ষ দলের উইকেটের মোট ৬০ শতাংশ উইকেট পেয়েছেন পেসাররা।শুধুমাত্র উইকেটই না। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং দলকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ম্যাচের লাগাম টেনে ধরতে সাহায্য করেছে। তাই রোহিত শর্মার এবং রাহুল দ্রাবিড় এর ভারত দল অবশ্যই চাইবে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচ গুলোতে তাদের পেসাররা জ্বলে উঠে বিশ্বকাপটা নিজেদের করে নিতে।