ফিনিশার কিংবা পাওয়ার হিটার নিয়ে বাংলাদেশের আক্ষেপ অনন্তকালের। কত কতজন আশা দেখিয়েছিলেন, কিন্তু কেউই টিকতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। এরই মাঝে নতুন সম্ভাবনার আলো নিয়ে এসেছেন জাকের আলী অনিক। শুধু তাই নয়, যতটুকু সুযোগ পেয়েছেন তার সবটা কাজে লাগিয়েছেন তিনি; সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার শতভাগ উজাড় করে দিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখানো আরেকটি ইনিংস।
গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে জাতীয় দলে আগমন ঘটেছিল এই ব্যাটারের। প্রথম ম্যাচেই দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়েছিলেন তিনি। দলকে জেতাতে না পারলেও লঙ্কানদের কাঁপিয়ে দিয়েছিল তাঁর পারফরম্যান্স। স্বাভাবিকভাবেই দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমী ভরসা ভাবতে শুরু করেছিল তাঁকে।
সেই ভরসার প্রতিদানেই দলের প্রয়োজনে ৩৪ বলে ৪৪ রান করেছেন এই তরুণ। তিন চার ও দুই ছয়ে সাজানো ইনিংসটি সংখ্যার হিসেবে খুব আহামরি না হলেও ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রশংসনীয় বটে। তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে তাঁর ৮৭ রানের জুটির কল্যাণেই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ।
এদিন পাঁচ নম্বরে নেমেছিলেন জাকের, দলের রান সে সময় মাত্র ৬০। ফলে শুরুর দিকে খানিকটা রয়েসয়েই খেলেছিলেন তিনি, অন্যপ্রান্তে সেট ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গ দেয়ার কাজটাই করেছিলেন। তবে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তাঁর রান তোলার গতি বাড়তে থাকে, শেষদিকে অবশ্য ব্লেসিং মুজরাবানির দুর্দান্ত ইয়র্কারে হাফ সেঞ্চুরি থেকে ছয় রান দূরে থামতে হয় তাঁকে।
স্ট্রাইক রেট খুব বেশি না হলেও এই ডানহাতি যেভাবে ব্যাট করেছেন সেটা সত্যিই আশাব্যাঞ্জক। জায়গায় দাঁড়িয়ে লং অনের ওপর দিয়ে দুই দুইটি ছক্কা হাঁকানো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিরল কিছুই। তবে ইনিংস বড় করা শিখতে হবে তাঁকে, সেট হয়ে ডেথ ওভারে আউট হওয়া যেকোনো ব্যাটারের জন্যই আক্ষেপের বিষয়।
যদিও এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জাকের আলীর পথ চলা। মাত্র শুরু। পারফর্ম করার পাশাপাশি নতুন নতুন বিষয় শিখবেন, ঘাটতির জায়গা গুলো নিয়ে কাজ করবেন সেটাই প্রত্যাশিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, ধারাবাহিকতা। তিনি ধারাবাহিক হতে পারলে সাত নম্বর সমস্যার একটা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হবেই।