‘পান্ডবদের ছাড়া জেতায় আনন্দটা বেশি’

সৈকত আলীর ব্যাটিং ঝড়ের পর একসময় বরিশালের শিরোপা জয়টা শুধু সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। তবে এরপর আস্তে আস্তে পাল্টে যায় পাশার দান। সাকিবের উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কুমিল্লা আস্তে আস্তে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে বরিশাল। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১০ রান। তবে কুমিল্লার পেস সেনসেশন শহিদুল ইসলাম মাত্র  ৮ রান খরচ করে ট্রফিটা ফিরিয়ে নিল নিজেদের ঘরেই।

পুরো টুর্নামেট জুড়ে মাঠের ক্রিকেটে দাপট দেখানো দুই দলই মুখোমুখি হলো ফাইনালে। কাগজে কলমেও বিপিএল ২০২২ আসরের সবচেয়ে শক্তিশালি দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশাল। ফাইনাল ম্যাচের একেবারে পুরো রসটাই পেল ক্রিকেট ভক্তরা। কুমিল্লা ও বরিশালের শিরোপার লড়াই হয়েছে তুঙ্গে।

সবমিলিয়ে বিপিএলে সর্বোচ্চ তিনটি শিরোপা জয়ের রেকর্ড ছিল ঢাকার। আর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ঘরে তুলেছিল দুই শিরোপা। আজ বরিশালকে হারিয়ে আবারো শিরোপা কুমিল্লার ঘরে। সর্বোচ্চ তিন শিরোপা জয়ের রেকর্ড এখন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও। ওদিকে বরিশালের একটা বিপিএল শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বেড়েই চললো।

ওদিকে অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলের দ্বিতীয় শিরোপা জিতলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। পুরো আসরে তেমন ছন্দে না থাকলেও দলকে ঠিকই শিরোপা এনে দিলেন এই ক্রিকেটার। পরপর দুই আসরে বিপিএলের শিরোপা জিতে এখন মাশরাফি বিন মর্তুজার পরের বিপিএলের সফলতম অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ওদিকে পুরো আসর ব্যাটে, বলে দারুণ পারফর্ম করেও শিরোপাটা জেতা হলো না সাকিব আল হাসানের।

পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটারকে ছাড়া দল সাজিয়েই শিরোপা জিতলো কুমিল্লা। এই বিষয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক নাফিসা কামাল বলেন, `আমরা চেয়েছিলাম তরুণ একটা দল গড়তে। আমাদের দলে কিন্তু কোন পান্ডব ছিল না। এক দলে তিনজন পান্ডব ছিল, রানার্স আপ দলেও একজন ছিল। ফলে এত পান্ডবদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমাদের জন্য বেশি আনন্দের।’

ওদিকে শেষ ওভারে দারুণ বল করে দলকে ম্যাচ জিতিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। তরুণ এই পেসারকে নিয়ে কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস বলেন, `আমি শেষ ওভারে শহিদুলকে বলেছিলাম এটাই তোমার হিরো হওয়ার সময়। আর শহিদুলও অসাধারণ বল করেছে।‘

ওদিকে সহজ জয়ের সু্যোগ কাজে লাগাতে পারেননি বরিশালের ব্যাটসম্যানরা। সহজ ম্যাচ শেষ করে না আসতে পারায় শান্ত, সোহানদের উপর দারুণ ক্ষীপ্ত বরিশালের কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি বলেন, `আমি জানিনা ম্যাচে এসে কেন ওরা পারেনা। নেটে তো সবাই দারুণ শট খেলে। ওরা কোয়ালিটি ক্রিকেটার। তবে এই ম্যাচটা প্রমাণ করে যে আমাদের ক্রিকেটারদের গেম সেন্সের কত অভাব। এই লেভেলে এসে তো আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনি কাকে মারবেন আর কাকে মারবেন না।‘

তবে বরিশালের এবার খুঁজে পেয়েছে দারুণ এক ওপেনারকে। শেষদিকে দলটির হয়ে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মুনিম শাহরিয়ার। ভয়ডরহীন ব্যাটিং করে ইতোমধ্যেই প্রশংসা কুড়াচ্ছেন এই ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে এই ক্রিকেটারকে নিয়ে ভাবার সময় এসেছে কিনা এমন প্রশ্নও ছিল সংবাদ সম্মেলনে।

এই বিষয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘মুনিম আসলে ফিয়ারলেস ক্রিকেটটা খেলে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে জন্য এমন ব্যাটসম্যান কিন্তু বাংলাদেশে সহজে আসে না যে ১৬০ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে পারে। আর আমি মনে করিনা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য অভিজ্ঞতা খুব প্রয়োজন। ফলে আজ কিংবা কাল এই ফরম্যাটে তাঁকে নিয়ে ভাবা উচিৎ।’

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link