স্বদেশি খেলোয়াড়রাই কুমিল্লার সাফল্যের চাবিকাঠি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগকে (বিপিএল) ঘিরে রয়েছে অনেক অভিযোগ। তবে নিজেদের গায়ে অভিযোগের কোন দাগ পড়তে দিতে নারাজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এবারও দলটা শিরোপা নিজেদের দখলে রাখার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই  নেমেছে। বিদেশী কার্য্যকর সব খেলোয়াড়দের বরাবরই ভেড়ায় দলটি। তবে দেশীয় খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও দারুণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে চলেছে ফ্রাঞ্চাইজিটি।

দশম বিপিএলে দলটি অবস্থান করছে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে। রানরেটের ব্যবধানে রংপুর রাইডার্স এগিয়ে রয়েছে তাদের থেকে। কিন্তু দেশীয় খেলোয়াড়দের পারফরমেন্সের দিক থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দেশীয় খেলোয়াড়দের বলেই ম্যাচের ফলাফল যাচ্ছে কুমিল্লার পক্ষে।

দলের পক্ষে এই মুহূর্তে সর্বোচ্চটুকু নিঙড়ে দিচ্ছেন তাওহীদ হৃদয়, মুস্তাফিজুর রহমানরা। তাওহীদ হৃদয় তো বনে গেছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৩৪১ রান নিয়ে এই ব্যাটার রয়েছে সবার উপরে। তাছাড়া উইকেট শিকারের দিক থেকে কুমিল্লার স্বদেশি বোলাররা যেন নিজেদের মধ্যেই নেমেছেন এক সুস্থ প্রতিযোগিতায়।

১১ উইকেট নিয়ে দলটির সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার মুস্তাফিজুর রহমান। এরপরের স্থানেই রয়েছেন বা-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। তার পকেটেও রয়েছে ১১টি উইকেট। অন্যদিকে আলিস আল ইসলামও নিয়েছেন ৯টি উইকেট। অন্যদিকে দুই ম্যাচে খেলার সুযোগ পাওয়া রিশাদ হোসেনও প্রতিনিয়ত নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেই চলেছেন।

প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট সহ দারুণ বোলিং প্রদর্শন করে যাচ্ছেন ডানহাতি এই লেগস্পিনার। শুধু যে উইকেট শিকার বা রান করার দিকেই মনোযোগ কুমিল্লার খেলোয়াড়দের, বিষয়টি তেমন নয়। কার্য্যকর সব ইনিংসের দিকেই অধিকাংশ খেলোয়াড় দিচ্ছেন মনোযোগ। ডানহাতি উইকেট রক্ষক ব্যাটার জাকের আলী অনিক, প্রায় প্রতিটা ম্যাচেই দলের জন্যে নিজের মত করেই অবদান রেখে যাচ্ছেন।

দলের চাহিদা অনুযায়ী ধরে খেলার চেষ্টা করছেন, আবার প্রয়োজনের সময় আগ্রাসনের চিত্রও আঁকছেন তিনি। এছাড়াও লিটন কুমার দাস, ভাল-খারাপ মিলিয়ে পারফরম করে যাচ্ছেন কুমিল্লা জার্সি গায়ে। এছাড়াও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও একাদশে আসা যাওয়ার মধ্যে রয়েছেন। তিনিও প্রয়োজনের সময় নিজেকে প্রমাণের চেষ্টায় লেগে আছেন।

অন্যদিকে কুমিল্লার ডাগআউটে বসে আছেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি ও মুশফিক হাসানদের মত পেসার। তরুণ এই বোলাররাও নিজেদের সুযোগের অপেক্ষা করছেন। এমনকি সফলতম অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও ডাগআউটে সময় পার করছেন।

কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন অক্লপটেই শিকার করেছেন, তিনি সুযোগ সবাইকেই দিতে চান। তবে দিনশেষে ফ্রাঞ্চাইজিটি ফলাফল চায়। তারা ম্যাচ জিততে চায়। তাই চাইলেই সবাইকে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না কোচের পক্ষে।

কিন্তু প্রশংসা অবশ্যই প্রাপ্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের টিম ম্যানেজমেন্টের। কেননা, তারা নামের ভারিক্কি বিবেচনায় নিয়ে দল সাজাননি। বরং তারা ‘ইম্প্যাক্টফুল’ খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গঠন করেছেন। নামের ভার যুক্ত করছেন ভিনদেশী খেলোয়াড়দের নিয়ে।

ঠিক এসব কারণেই সম্ভবত কুমিল্লা প্রশংসায় ভাসে প্রতিনিয়ত। শিরোপা জয়ের দিক থেকেও দলটি সবার উপরে। এবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিকেই লক্ষ্য দলটির। স্রেফ দেশীয় খেলোয়াড়দের ধারাবাহিক পারফরমেন্সই প্রত্যাশিত। সেটা হয়ে গেলেই মিলে যাবে পঞ্চম শিরোপা। বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা নিশ্চয়ই হতাশ করবে না ফ্রাঞ্চাইজিটিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link