ক্রিকেট সম্মানের পুরষ্কার

আবুধাবিতে ম্যাচের ১৮তম ওভারে তখন বল করতে এসেছেন ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদ। আর নিউজিল্যান্ডের হয়ে তখন ব্যাট হাতে জিমি নিশাম। আর অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন ড্যারেল মিশেল। আদিল রশিদের প্রথম বলটায় সিঙ্গেল নেয়া যেত অনায়াসেই।

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচের কথা। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সেই ম্যাচের উত্তেজনা তখন আকাশ ছুঁয়েছে। শেষ তিন ওভারে কিউইদের জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ৩৪ রান। সেই সময় প্রতিটা রানই নিউজিল্যান্ডের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। তবুও একটা বিশেষ কারণে সেই সময় সিঙ্গেল নেননি ড্যারেল মিশেল।

আবুধাবিতে ম্যাচের ১৮তম ওভারে তখন বল করতে এসেছেন ইংল্যান্ডের স্পিনার আদিল রশিদ। আর নিউজিল্যান্ডের হয়ে তখন ব্যাট হাতে জিমি নিশাম। আর অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন ড্যারেল মিশেল। আদিল রশিদের প্রথম বলটায় সিঙ্গেল নেয়া যেত অনায়াসেই। তবে ফলো থ্রুতে বল ধরার জন্য লাফিয়ে পড়া আদিল রশিদ চলে এসেছিলেন এপাশে। এখন মিশেলকে রান নিতে হলে বোলারের লাইন দিয়ে যেত হত।

সেমিফাইনালের মত ম্যাচে, তাও আবার শেষ মুহূর্তে যেখানে প্রতিটা রান প্রয়োজন। সেই সময় যে কেউই বোলারের লাইন দিয়েন রানটা নিত। অপর প্রান্ত থেকে নিশাম রানের জন্য কলও দিয়েছিলেন। তবে যতই প্রয়োজন হোক, ক্রিকেটের আইন তো তা মানে না। ফলে মিশেল রান নেয়ায় আপত্তি জানান। তিনি সত্যিই ওই বলটাতে রান নেননি।

যদিও ওই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করছিলেন ড্যারেল মিশেল। সেমিফাইনাল ম্যাচের পুরো চাপটা নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন ড্যারেল মিশেল। নিউজিল্যান্ডের স্বপ্নের নায়ক হয়েছিলেন সেদিন হাজির হয়েছিলেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ওপেনা করতে নেমে ৪৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবুও নিজে স্ট্রাইক নিতে অস্বীকার করেছেন শুধু ক্রিকেটের নিয়ম ভঙ্গ হবে বলে।

আর ক্রিকেটের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো ড্যারেল মিশেলের এই কান্ডকে সম্মান জানাতে ভোলেনি আইসিসি। ক্রিকেটের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা আজ পুরস্কৃত করলো এই ব্যাটিং অলরাউন্ডারকে। আইসিসি স্পিরিট অব ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড-২০২১ পেলেন তিনি।

আইসিসির স্পিরিট অব ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন এই ক্রিকেটার। পুরষ্কার পেয়ে তিনি বলেন, `আইসিসি স্পিরিট অব দ্য ইয়্যার অ্যাওয়ার্ড পাওয়াটা তো ভীষণ সম্মানের। ম্যাচের অবস্থা তখন খুবই টাফ ছিল। তবুও সেই সময় ক্রিকেটের বিরুদ্ধে যেতে ইচ্ছে হয়নি।‘

আইসিসিকে তিনি বলেন, `আমরা ক্রিকেটটাকে গর্বের সাথে খেলি, আমরা একটা দল হয়ে যেভাবে খেলি আমার মনে হয় এটাই ক্রিকেটের আসল স্পিরিট। আমরা দল হিসেবে সব ম্যাচই জিততে চাই তবে ক্রিকেটের নৈতিকতার বাইরে যেতে হয় এমন কিছু করতে আমরা রাজি নই। ক্রিকেটের স্পিরিটটা আমাদের কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আসলে দিনশেষে তো এটা একটা খেলা, আর আমরা এটার নিয়ম মেনে খেলতেই আনন্দ পাই।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...