খেলোয়াড়ি জীবনে জিওফ মার্শ ছিল অতি রক্ষণাত্বক ভঙ্গিমার এক ব্যাটার। টেস্ট ক্রিকেটে ৩৫.১৩ আর একদিনের ক্রিকেটে তাঁর ৫৫.৯৩ ব্যাটিং স্ট্রাইকরেটই এই ‘রক্ষণাত্বক’ তকমার স্বপক্ষে স্বাক্ষ্য দেয়। তবে তাঁরই ছোট ছেলে মিশেল মার্শ হয়েছেন ঠিক তাঁর উল্টো।
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ ক্রিকেটকেই জীবনের অংশ বানিয়েছেন। তবে পরিচিতিটা তৈরি করেছেন একজন আক্রমণাত্বক ব্যাটার হিসেবে। এবারের বিশ্বকাপে সর্বশেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৯ বলেই তুলে নিয়েছিলেন ব্যক্তিগত অর্ধ-শতক। তাঁর ফিফটিতে অস্ট্রেলিয়া পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে তৃতীয় ম্যাচে এসে শেষ পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেছে।
বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর দিনে ম্যাচশেষে ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট সুনীল গাভাস্কারের সাথে মজার এক আলাপচারিতাতেই মেতে উঠেছিলেন মিশেল মার্শ।
আর তাতেই উঠে এসেছে জিওফ মার্শের রক্ষণাত্বক ব্যাটিংয়ের কথা। মিশেল মার্শের এমন মারকুটের ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে গাভাস্কার তাঁকে এক প্রকার মজা করেই বলে ওঠেন, ‘তোমার বাবা কি তোমাকে ঐ ভাবে ব্যাট করতে শেখাননি?’
এর উত্তরে মিশেল মার্শও চটপটে একটা উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘আমি বাবার সেই স্ট্রাইক রেট এখন পুষিয়ে দিতে এসেছি।’
দুই প্রজন্ম ধরে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের সাথে জড়িয়ে আছে মার্শ পরিবার। বাবা জিওফ মার্শের পর অজি ক্রিকেটের জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন তাঁর দুই ছেলে শন মার্শ ও মিশেল মার্শ।
১৯৮৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম বারের বিশ্বকাপ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর অজিদের সেই দলে ছিলেন জিওফ মার্শ। ২৮ বছর পর ২০১৫ বিশ্বকাপ দিয়ে নিজেদের পঞ্চম বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। আর সেই বিশ্বকাপ জয়ী দলে ছিলেন জিওফ মার্শের ছেলে মিশেল মার্শ।
আর এখানেই জন্ম হয় অনন্য এক কীর্তির। প্রথমবারের মতো কোনো বাবা, ছেলে হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়েন জিওফ মার্শ ও মিশেল মার্শ। যদিও বাবা জিওফ মার্শ একটি বিশ্বকাপ জিতলেও ছেলে মিশেল মার্শের ঝুলিতে আছে দুটি বিশ্বকাপ।
২০২১ সালে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন মিশেল মার্শ। শুধু তাই নয়, সে বিশ্বকাপের ফাইনালেও সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।