আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের ১৫ সদস্যর স্কোয়াড ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি। দলের সাথে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে যাচ্ছেন তিন ক্রিকেটার। তবে, দল ঘোষণার পর থেকেই থেকেই ভালো সময় যাচ্ছে না পিসিবির।
দল ঘোষণার পরই পাকিস্তানি সমর্থকদের একটা বড় অংশ দল নিয়ে করছেন আলোচনা-সমালোচনা। খুশদিল শাহ, আসিফ আলীদের দলে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেক ক্রিকেট সমর্থকরা। সেই সাথে ফখর জামানকে মূল স্কোয়াডে না রাখা নিয়েও হচ্ছে বেশ সমালোচনা। অপরদিকে, শোয়েব মালিককে দলে না রাখাতেও সমর্থকদের একাংশ বেশ নাখোশ হয়েছেন।
সবমিলিয়ে দল নিয়ে যখন সমালোচনায় সয়লাব বিভিন্ন মাধ্যম; তখনি সিদ্ধান্ত আসে নিজেদের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রধান কোচ মিসবাহ উল হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুস। চলতি মাসের ১১ তারিখ পাকিস্তানের মাটিতে ১৮ বছর পর সফরে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড দল। দেড় মাস বাদেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসর। ঠিক এমন মূহুর্তে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন মিসবাহ ও ওয়াকার।
অবশ্য তাঁদের পারফরম্যান্সও বেশ কিছু সময় ধরেই ছিলো সমালোচনার বৃত্তে। পাকিস্তানি সমর্থকদের অধিকাংশই এই দুইজনকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে মেনে নিতে পারছিলেন না। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন কারণে সমালোচনায় ছিলেন এই দুইজন। প্রধান নির্বাচক এবং হেড কোচ – এই দুই পদেই মিসবাহ থাকায় বিতর্কের তীরটা ছিলো তার দিকেই। সম্প্রতি তাঁদের বিকল্প খোজা নিয়েও বেশ কিছু খবর বের হয় গণমাধ্যমে।
পদত্যাগপত্রে মিসবাহ জানান, ‘আমি জ্যামাইকায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় থেকে বিগত ২৪ মাসের সময়টা এনালাইসিস করেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের শিডিউল অনুযায়ী বুঝতে পারছি আমাকে লম্বা সময় পরিবার থেকে দূরে বায়োবাবলে থাকতে হবে। এই কারণে আমি প্রধান কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানি এখন পদত্যাগের সময়টা সঠিক নয়। কিন্তু আমি মনে করি না যে সামনের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য আমি সঠিক মানসিক অবস্থায় আছি। আর আমার মনে হয় এখনই সময় নতুন কাউকে দায়িত্ব নিয়ে দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’
এদিকে ওয়াকার ইউনুস তাঁর পদত্যাগের বার্তায় জানান, ‘মিসবাহ তাঁর সিদ্ধান্ত এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমার সাথে শেয়ার করার পর মনে হয়েছে, আমারো পদত্যাগ করা উচিত। আমরা একসাথে প্রায় ২৪ মাস ধরে কাজ করেছি। যেহেতু একসাথে কাজ শুরু করেছিলাম তাই মনে করি একসাথেই বিদায় নেওয়া উচিত। পাকিস্তানি বোলার ও তরুনদের সাথে কাজ করাটা আমার জন্য বেশ গৌরবের। কারণ তাঁদের প্রত্যেকেই উন্নতি করছে।’
তবে, বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে হঠাৎ করেই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে দলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছেন এমনটাই মনে করছেন অনেক ক্রিকেট সমর্থকরা। আরো এক বছর দায়িত্বের মেয়াদ থাকলেও বিশ্বকাপের দল ঘোষণার দুই ঘন্টার মধ্যেই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন মিসবাহ ও ওয়াকার।
তাদের পরিবর্তে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বে থাকবেন সাকলাইন মুশতাক ও আব্দুল রাজ্জাক। সম্ভাব্য নিউজিল্যান্ড সফরের পর বিশ্বকাপেও দলের দায়িত্বে থাকবেন মুশতাক ও রাজ্জাক। এমন অবস্থায় বিশ্বকাপের দলের ওপর বাজে প্রভাব পড়তে পারে। আর বিশ্বকাপের আগে এমন একটা ঘটনা কোনো ভাল বার্তাও বহন করে না। পাকিস্তান ক্রিকেট অতীতে অনেক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিয়েছে। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে – তখনও ড্রেসিংরুমে অশান্তি!