এহসান খান, হংকংয়ের জন ট্রাইকোস

একটা চমক কিন্তু হংকং দেখিয়েই দিল। ভারতের হয়ে ইনিংসের শেষ দিকে সুরিয়াকুমার যাদব ওমন দানবীয় ব্যাটিংটা না করলে হয়ত ম্যাচের ফলাফলটা ভিন্ন হতে পারত। কেননা হংকংয়ের ব্যাটারদের ভয়ডরহীন ব্যাটিং বেশ মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। একটা বার্তা দিয়ে গেছে, সহযোগী দেশগুলোর আরও বেশি সুযোগ চাই। তাহলে বোধহয় তারাও ক্রিকেটটাকে আরেকটু জমজমাট বানাতে সহয়তা করতে পারত।

একটা চমক কিন্তু হংকং দেখিয়েই দিল। ভারতের হয়ে ইনিংসের শেষ দিকে সুরিয়াকুমার যাদব ওমন দানবীয় ব্যাটিংটা না করলে হয়ত ম্যাচের ফলাফলটা ভিন্ন হতে পারত। কেননা হংকংয়ের ব্যাটারদের ভয়ডরহীন ব্যাটিং বেশ মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। একটা বার্তা দিয়ে গেছে, সহযোগী দেশগুলোর আরও বেশি সুযোগ চাই। তাহলে বোধহয়  তারাও ক্রিকেটটাকে আরেকটু জমজমাট বানাতে সহয়তা করতে পারত।

হংকংয়ের বেশকিছু খেলোয়াড় ভারতের বিপক্ষে নজর কেড়েছে। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম শক্তিধর একটা দলের বিপক্ষে লড়াই করার মানসিকতা তো আর সব দলের মাঝে থাকে না। তবে এমন লড়াকু মানসিকতার জন্যে প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য খেলোয়াড়দের মধ্যে এহসান খান অন্যতম।

৩৭ বছর বয়সী ডানহাতি অফস্পিন বোলার এহসান খান। পাকিস্তান বংশদ্ভুত এই খেলোয়াড় হংকং জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। সে জায়গাটা অবশ্য তিনি নিজে তৈরি করে নিয়েছেন। নিজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং পারফরমেন্স দিয়ে।

বয়সটা কম হয়নি। এই বয়সে অধিকাংশ খেলোয়াড়দের পরিকল্পনার একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে অবসর। ঠিক তখন এহসান চলে এসেছেন মহাদেশীয় লড়াইয়ে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে। তিনি যেন দিলেনও। বড় মঞ্চ। স্নায়ুচাপ। বড় দল- এসব কিছুকে একটা পাশে রেখে তিনি যেন নিজের কাজটা করে গেলেন।

এহসান একজন অফস্পিনার হয়েও তিনি নিজ ইচ্ছায় ইয়োর্কার বল করতে পারেন। তিনি জানেন যে কখন তাঁর বলটা পায়ের আঙ্গুলগুলোকে আঘাত করতে পারে। নিজের সে অস্ত্র দিয়েই তিনি শেষ দিকে খানিকটা বিপাকে ফেলেছিলেন ভারতীয় দুই দুর্ধর্ষ ব্যাটারদের। তাছাড়া নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থ। সেই সাথে নিজের ইচ্ছা শক্তির পূর্ণ ব্যবহার, এসব মিলিয়ে বেশ কার্য্যকরী একজন বোলার এহসান খান।

আধুনিক টি-টোয়েন্টি যুগে এসেও তিনি বেশ ইকোনমিকাল বোলিং করতে পারেন। তাঁর এসব গুণ মনে করিয়ে দেয় আশি-নব্বই  দশকে ক্রিকেট মাঠ কাঁপানো একজন কিংবদন্তির কথা। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটকে আলোকিত করা স্পিনার জন ট্রাইকোসও ছিলেন বয়সের ভারে নুইয়ে না পড়া এক অদম্য যোদ্ধা। লিকলিকে গঢ়নের এই স্পিনারও নিজের লাইন-লেন্থের বিষয় ছিলেন বেশ সতর্ক। ২২ বছরের একটা নির্বাসনে ছিল জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট। সে নির্বাসন পেরিয়েও জিম্বাবুয়ে দলের হয়ে ৪৫ বছর বয়সে মাঠে নেমেছিলেন ট্রাইকোস।

খুব বেশি লম্বা ছিল না ট্রাইকোসের ক্যারিয়ার। তবে তা যথেষ্ট ছিল তাঁকে মনে রাখবার। তেমনই একটা ছাপ যেন ফেলে রেখে যেতে চান এহসান। সেটার প্রচেষ্টাই তো দেখা গেল ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচে। তিনি পূর্ণ চার ওভার করে ছিলেন উইকেট শূন্য। তবে রান দিয়েছেন ২৬টি। তার থেকেও বড় বিষয় তিনি ডেথ ওভারেও বল করে নিজের ইকোনমি রেটটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছিলেন।

ইনিংসের ১৭তম ওভারে তিনি বল করতে এসে খরচ করেছেন কেবল চার রান। তখন বাইশ গজে ভারতের দুই অভিজ্ঞ ও সেট ব্যাটার বিরাট কোহলি ও সুরিয়াকুমার যাদব। যাদব তো রীতিমত রোলার মেশিন চালাচ্ছিলেন। তবুও এহসানের বিপক্ষে এই দুই ব্যাটারকে থাকতে হয়েছে সংযত। একেরপর এক ইয়োর্কারে নাভিশ্বাস উঠে যাওয়ার মত উপক্রম ছিল ভারতীয় ব্যাটারদের।

নিজের শেষ ওভারটা এহসান করেছেন ইনিংসের ১৯তম ওভার। সে ওভারেও মাত্র একটি বাউন্ডারি ছাড়া আর কিছুই আদায় করতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটাররা। এহসান প্রমাণ করে গেলেন যে সহযোগী দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যেও রয়েছে প্রতিভা। তারাও সময় সুযোগ ঠিকমত পেলে হতে পারেন বিশ্বসেরা।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...