ভারত ট্রফি উঁচিয়ে ধরার মধ্য দিয়ে পর্দা নেমেছে এবারের এশিয়া কাপের। পুরো আসর জুড়েই আধিপত্য দেখিয়েছে রোহিত শর্মার দল, অন্যদিকে সবাইকে অবাক করে ফাইনালে উঠেছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তান শুরুতে ভাল করলেও পরে খেই হারিয়েছে এবং বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে সর্বোপরি ভাল না করলেও একমাত্র দল হিসেবে ভারতকে পরাজিত করেছে।
বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এশিয়া কাপের গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছিল কয়েক গুণ। আর এই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটীয় লড়াইয়ে কোন দলের অর্জন কেমন সেটা এবার জেনে নেয়া যাক।
- ভারত
টপ অর্ডারে বিরাট, রোহিত, শুভমান প্রত্যেকে পারফর্ম করেছেন। ইনজুরি থেকে লোকেশ রাহুল ফিরে আসায় মিডল অর্ডারও বেশ ভারসাম্যপূর্ণ এখন – হার্দিক, ঈশান, রাহুল ত্রয়ী যেকোনো লাইন আপের বিরুদ্ধে রান করার সামর্থ্য রাখে।
বোলিংয়ে মোহাম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদবদের ফর্ম নিশ্চিতভাবেই গর্বিত করেছে সমর্থকদের। এছাড়া জাসপ্রিত বুমরাহও ছিলেন চেনা ছন্দে। লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটিং বাদ দিলে বাকি সব ক্ষেত্রেই পরিপূর্ণতা পেয়েছে ভারত, বিশ্বকাপে তাই আত্মবিশ্বাস নিয়েই নামবে দলটি।
- পাকিস্তান
উদ্বোধনী ম্যাচে নেপালকে উড়িয়ে দেয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকেও চাপে ফেলেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সুপার ফোরে হঠাৎ করেই মিইয়ে গিয়েছে বাবর আজমরা। বাংলাদেশকে হারালেও ভারতের বিপক্ষে এক তরফা ভাবে হেরেছে তাঁরা, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও জিততে পারেনি।
মূলত ইনজুরির কারণে দুই পেসার হারিস রউফ এবং নাসিম শাহকে না পাওয়াতেই এমন অবস্থা দেখতে হয়েছে তাঁদের। বিশ্বকাপেও নাসিম শাহকে পাওয়া না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি; আবার ড্রেসিং রুমে কোন্দলের খবরও শোনা গিয়েছে। তাই এশিয়া কাপ পাকিস্তানের ক্ষতি বেশি করেছে সেটা বলাই যায়।
- বাংলাদেশ
সুপার ফোরে তৃতীয় হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করলেও পেসারদের পারফরম্যান্সে অন্তত খুশি হতে পারে বাংলাদেশ। বলতে গেলে প্রথমবারের মত বড় কোন টুর্নামেন্ট পেস আক্রমণ নির্ভর বাংলাদেশকে দেখা গিয়েছে এবার। তাসকিন আহমেদ মাত্র ১৯ গড়ে শিকার করেছেন নয় উইকেট, শরিফুলও সমান গড়ে নিয়েছেন সাতটি।
অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিব নিজের শুরুটা উড়ন্তভাবে। এছাড়া হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমানও নিজের সেরাটা দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাটিং নিয়ে ভাবনায় থাকবে সাকিব আল হাসানের দল, বিশেষ করে নড়বড়ে টপ অর্ডার বিপদের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
- শ্রীলঙ্কা
এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরে গেলেও টুর্নামেন্টে নিজেদের সফল ভাবতেই পারে শ্রীলঙ্কা। তবে তাঁদের বড় প্রাপ্তি দুনিথ ওয়েলেলাগে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া এই উদীয়মান নিজেকে প্রমাণ করেছেন দারুণভাবে।
ভারতের বিপক্ষে প্রায় একাই ম্যাচ জেতানোর লড়াই করেছিলেন – বিরাট কোহলি, শুভমান গিল, রোহিত শর্মা সহ পাঁচ ব্যাটারকে আউট করার পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও করেছিলেন অপরাজিত ৪২। বিশ্বকাপে তাই মধুর সমস্যায় পড়বে লঙ্কান ম্যানেজম্যান্ট – কেননা হাসারাঙ্গা, থিকসানা আর ওয়েলেলাগের মাঝে বেছে নিতে হবে দুজনকে।
- আফগানিস্তান
রোমাঞ্চকর ম্যাচে হারার পুরনো অভ্যাস রয়েছে আফগানিস্তানের, সেই সমস্যা এবারও কাটিয়ে উঠতে পারেনি তাঁরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাতের নাগালে থাকা জয়ও মুঠো বন্দি করতে পারেনি রশিদ খানেরা, সেদিন দুই রানের হারে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছিল দলটি। চাপ নিতে না পারার এই বৈশিষ্ট্য বিশ্বকাপেও হয়তো সমস্যার সৃষ্টি করবে আফগানদের জন্য।