‘আমি গেম-চেঞ্জার। আমি গেম-চেঞ্জার, অবশ্যই আমি গেম-চেঞ্জার।’ এভাবেই বেশ জোড় দিয়ে নিজেকে ক্রিকেটকে পরিবর্তনকারী বলে দাবি করেছেন ‘দ্য ইউনিভার্স’ খ্যাত ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিস গেইল।
গেইল আরো দাবী করেন তিনিই ক্রিকেটের খেলার চিন্তা ধারায় এনেছেন পরিবর্তন এনেছেন। তিনি বলেছেন কি করে ক্রিকেটের মাঠেও জীবনকে উপভোগ করা যায় তাঁর পন্থা শিখিয়েছেন তিনি। ক্রিকেটের মূলভাবনাটায় পরিবর্তন আনতে পেরেছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন ক্রিস গেইল।
সত্যিই তো তিনিই তো শিখিয়েছেন ক্রিকেটের মাঠে কি করে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সাথেও সৌহার্দ্য বন্ধনে আবব্ধ হওয়া যায়। এইতো সেদিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে যখন মিশেল মার্শের উইকেট নেওয়ার পর কি অদ্ভুত এক উদযাপন করলেন তিনি খোদ মার্শকেই জড়িয়ে ধরে। অথচ দলের তখন খুবই বেগতিক অবস্থা, সেই অবস্থাতেও হাস্যজ্জ্বল দ্য ইউনিভার্স বস। তিনি আসলেই উপভোগ করেন ক্রিকেটের মাঠটাকে ক্রিকেট খেলাটাকে।
তাছাড়া তাঁর ব্যাটে যখন রান আসে তখন তা শুধু তাঁর উপভোগের বিষয় থাকে না তা হয়ে যায় সার্বজনীন বিনোদনের অন্যতম সেরা বিষয়। আবুধাবিতে চলমান টি-টেন লিগে খেলছেন টিম আবুধাবিতে। সেখানে বসে ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরো বলেন তিনি কি কর ক্রিকেটকে উপভোগ করার পাশাপাশি তা ঠিকঠাক খেলা যায় তাও শিখিয়েছেন। তা তিনি শিখিয়েছেন এতে দ্বিধাবোধ থাকবার কথা নয়। হাস্যজ্জ্বল দানবীয় ব্যাটিং-এ দিয়ে কতশত ম্যাচ যে তিনি তাঁর দলকে জিতিয়েছে, গড়েছেন কত রেকর্ড তাঁর ইয়ত্তা করা এক কঠিন কাজ।
তাঁকে কি দেখা যাবে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে অস্ট্রেলিয়াতে এমন প্রশ্নের জবাবে গেইল বলেছেন, ‘আমি সেখানে কোন না কোন ভাবে থাকবোই।’ তিনি হয়ত একজন সাধারণ দর্শক কিংবা ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট অন্যকোন কাজে হয়ত থাকবেন বিশ্বকাপের অষ্টম আসরে।
তাঁকে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে মাঠে ঝড় তুলতে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে খোদ গেইলই রয়েছেন দ্বিধায়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাকে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ তাতে খানিক আঁচ করা যায় দ্য ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলকে বৈশ্বিক কিংবা আন্তর্জাতিক দ্বিপাক্ষিক কোন টুর্নামেন্ট আর মাঠ ছাপিয়ে পুরো বিশ্বের দর্শকদেরকে মাতিয়ে রাখতে দেখা যাবে না।
এই মারকুটে ব্যাটারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেকে অবসর না নেওয়ার একটা গুঞ্জন উঠেছিলে তাঁর করা একটি টুইট বার্তার হয়ত ভুল ব্যাখা বের করায়। তিনি তাঁর সেই বার্তায় লিখেছিলেন, ‘আমি যাচ্ছি না। দ্য ইউনিভার্স বস ইজ ব্যাক।’ আবুধাবি টি-টেন লিগে তাঁর ব্যাটে হেসে ওঠার পরমুহূর্তে তিনি এমন টুইট বার্তা দিয়েছিলেন। হায়! আমরা বোকা দর্শকেরা ভেবে বসলাম তিনি হয়ত আবার ফিরবেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে।
তিনি ক্রিকইনফোতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর অবসরের ঘোষণার পরিকল্পনার কথাও বলেছেন। তিনি যোগাযোগ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের সাথে। গেইল অবসর নিতে চান তাঁর ঘর জামাইকার মাটিতে। সাবিনা পার্ক স্টেডিয়ামে তিনি নিতে চান অবসর। বোর্ডও সম্মতি জানিয়েছে এবং তাঁরা চেষ্টা করছে আসন্ন ঘরের মাঠের যেকোন সিরিজে দ্য ইউনিভার্স বসের মনোবাসনা পূরণ করবার। যিনি ক্রিকেটকে দিয়েছেন তাঁর দু’হাত ভরে গড়ে গেছেন অনবদ্য সব রেকর্ড তাঁর সম্মানে তাঁর সাম্মান্য ইচ্ছেটুকু পূরণ করাই যায়।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে গেইলের অবসর মোটামুটি নিশ্চিত হলেও তিনি এখনই ক্রিকেট থেকে বিদায় নিচ্ছেন না এ বিষয়ে আবারও তিনি নিশ্চিত করেছেন আবুধাবি টি-টেন লিগ চলাকালে ক্রিকেট বিষয়ক গণমাধ্যম ক্রিকইনফোকে দেওয়া সে সাক্ষাৎকারে। তিনি বেশ ক’বারই বলেছেন, ‘আমি যাচ্ছি না। আমি যাচ্ছি না।’