ভেট্টোরি নয়, নিজেই ‘চ্যাম্পিয়ন তাইজুল’

ভেট্টোরি বাংলাদেশে আসার আগেই তাইজুল প্রতিষ্ঠিত টেস্ট বোলার। অন্তত ঘরের মাটিতে বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচে তার কোনো বিকল্প ছিলো না। কিন্তু সমস্যাটা হলো, যে অ্যাকশনে টেস্টে সাফল্য পাচ্ছিলেন, সেই অ্যাকশনে তার সীমিত ওভারের ক্রিকেটে খুব সাফল্য আসছিলো না। ফলে ভেট্টোরি বললেন, অ্যাকশন বদলাও।

তাইজুল ইসলাম কখনোই বেশি কথা বলেন না। সেদিনও বলেননি। শুধু আলতো ভাবে বলেছিলেন, নতুন অ্যাকশনে কম্ফোর্ট ফিল করলে আবার পুরোনো অ্যাকশনে ফিরে যাবো।

তাইজুলের চোখেমুখে সেদিন ছিলো দারুন একটা দ্বিধা।

শুরুটা হয়েছিলো বাংলাদেশের স্পিন কোচ হয়ে ড্যানিয়েল ভেট্টোরি আশার পর থেকে। দুই বার এই সময়ে অ্যাকশন বদলালেন তাইজুল। মাঝে কিছুদিন নিজেকে এ জন্য খুজেই পাচ্ছিলেন না যেনো। অবশেষে আবার নিজের পুরোনো অ্যাকশনে ফিরে গেছেন। আর তাতে জাতীয় লিগেই বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন যে, পুরোনো তাইজুল ফিরে এসেছেন। এবার পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ লণ্ডভণ্ড করে বুঝিয়ে দিলেন, তাইজুল ফুরায়নি।

ভেট্টোরি বাংলাদেশে আসার আগেই তাইজুল প্রতিষ্ঠিত টেস্ট বোলার। অন্তত ঘরের মাটিতে বড় দৈর্ঘের ম্যাচে তার কোনো বিকল্প ছিলো না। কিন্তু সমস্যাটা হলো, যে অ্যাকশনে টেস্টে সাফল্য পাচ্ছিলেন, সেই অ্যাকশনে তার সীমিত ওভারের ক্রিকেটে খুব সাফল্য আসছিলো না। ফলে ভেট্টোরি বললেন, অ্যাকশন বদলাও।

বদলালেন। কিছুদিন নেটে করার পর হুবহু ভেট্টোরির অ্যাকশনে কিছু আর্ন্তজাতিক ম্যাচও খেললেন। কিন্তু একদমই কাজ হচ্ছিলো না। ফলে আবার একটু বদল। এবার স্ট্রাইডে কিছু পরিবর্তন আনলেন তাইজুল। কাজের কাজ হলো না।

উইকেট পাচ্ছিলেন। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতেও ৫ উইকেট পেয়েছেন। কিন্তু তাইজুলের চেনা আক্রমনাত্মক বোলিংটা দেখা যাচ্ছিলো না। অবশেষে তাইজুল সিদ্ধান্ত নিলেন আবার নিজের অ্যাকশনেই ফিরে যাবেন।

সিদ্ধান্তটা যে অসাধারণ ছিলো, তা এবার জাতীয় লিগেই বোঝা গেলো।

জাতীয় লিগে সর্বশেষ ৩ ম্যাচে তার ১৯ উইকেট! বিষ্ময়কর এই পরিসংখ্যানই কেবল অবলম্বন ছিল না। এর সাথে তাইজুল দারুন সব ফ্লাইট দিয়ে, বাউন্স পেয়ে তাইজুল দুর্দান্ত বলে খেলা দেখা এক নির্বাচক বলছিলেন।

তবে আসলটা এই চট্টগ্রামের জন্য জমিয়ে রেখেছিলেন।

আগের দিনই ভালো বল করেছেন। কিন্তু আজ সকাল থেকে যেটা করলেন, সেটা অবিশ্বাস্য। বোলিং ভেরিয়েশন এবং এক জায়গা দিয়ে আক্রমণ করে যাওয়া। ফ্লাইট দিয়ে কুপোকাত করছিলেন পাকিস্তানের বোলারদের।

আসাদ শফিককে আউট করলেন বল স্কিড করিয়ে। পরের বলেই সোজা ডেলিভারিতে আজাহার আলী আউট। ফাওয়াদ আলমকে আউট করা বলটা একটু ঢুকেছিলো। আবিদ আলীকে আউট করা বলটা অসাধারণ ছিলো। সাধারণ টার্নের বদলে আবাসের পাওয়া অ্যাঙ্গেলে বিভ্রান্ত হলেন আবিদ। আর হাসান আলী আউট হলেন বেরিয়ে যেতে থাকা বলে।

বুঝতেই পারছেন, কেমন আক্রমনাত্মক ও বৈচিত্রময় ছিলেন তাইজুল। নিজের অ্যাকশন, নিজের জগতেই সেরা আমাদের তাইজুল।

চট্টগ্রামের তৃতীয় দিনে চা বিরতির আগে তাইজুল শেষ করেছেন ১১৬ রানে সাত উইকেট নিয়ে। পাকিস্তান অলআউট হয়েছে ২৮৬ রানে। বাংলাদেশ যে মহাগুরুত্বপূর্ণ ৪৪ রানের লিড পেল তা ওই তাইজুলের সৌজন্যেই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...