গ্রেগ চ্যাপেল তাঁর প্রজন্মে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান ও কিংবদন্তি ক্রিকেটার। তিনি তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সফল হলেও ভারতের প্রধান কোচ থাকাকালীন তিনি শুধু ব্যর্থই ছিলেন না, তার সময়ে তৎকালীন ক্রিকেটারদের মতে ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে কালো অধ্যায় ছিলো।
তাঁর অনেক কাণ্ড কারখানা দিয়ে তিনি সব সময় বিতর্কে ও সমালোচনার মুখে থাকতেন। সেই সময়ে ভারত দলের অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে গ্রেগ চ্যাপেলের আচরণ কেমন ছিলো সেটা সবার জানা।
কিন্তু অন্যান্য ক্রিকেটার বিশেষ করে সেই সময়ের সিনিয়রদের সাথেও তার খারাপ সম্পর্ক বিভিন্ন ঘটনায় বারবার প্রকাশ পেয়েছে। সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমানে ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের এক বক্তব্যে নতুন করে গ্রেগ চ্যাপেলের আরেক কুখ্যাত কাণ্ড সামনে এলো।
ঘটনাটি ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে সেই সময়ের ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ও সিনিয়র ক্রিকেটার ভিভিএস লক্ষ্মণকে গ্রেগ চ্যাপেল রীতিমত বকাঝকা করেছিলেন। হারারেতে টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন সময় কোন কারণে আঙুলে চোট লাগায় এক বদলি ফিল্ডারকে মাঠে নামিয়ে নিজে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান আঙুলে বরফ লাগাতে।
তারপর সেই ফিল্ডার একটা ক্যাচ মিস করায় রেগে যান চ্যাপেল। তিনি লক্ষ্মণকে তখন জিজ্ঞাসা করেন যে মাঠ না ছাড়লে কি চোটের জন্য তিনি মারা যেতেন? স্বাভাবিকভাবেই কোচের এই কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন লক্ষ্মণ।
সঞ্জয় মাঞ্জরেকার তার বক্তব্যে বলেন, ‘হারারেতে টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন গ্রেগ চ্যাপেল কয়েকজন রিজার্ভ ক্রিকেটারদের নিয়ে প্র্যাকটিস সেশনে গিয়েছিল। ৩০-৪০ মিনিট পরে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় ও দেখে স্লিপে একজন বদলি ফিল্ডার ক্যাচ মিস করে। মাঠে বদলি ফিল্ডার দেখে অবাক হয় কোচ। কে মাঠের বাইরে রয়েছে,সেটা জানতে উৎসূক ছিল চ্যাপেল।’
সঞ্জয় আরো বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে ঢুকে চ্যাপেল দেখে লক্ষ্মণ কফি নিয়ে বসে আছে। বেশ রাগের সঙ্গেই জিজ্ঞেসা করে লক্ষ্মণকে কেনো ও মাঠের বাইরে রয়েছে। লক্ষ্মণ বলে ওর চোট লেগেছে, তাই চোটের জায়গায় বরফ লাগানোর জন্যই মাঠ ছাড়ে। তখন চ্যাপেল আরো রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, চোট কি এতটাই গুরুতর ছিল যে মাঠ না ছাড়লে মারা যেত পারতো? লক্ষণ বুঝে ওঠতে পারছিলো না কি বলবে। পরে চ্যাপেল বলে পরের বার থেকে প্রাণ সংশয় না থাকলে যেনো মাঠ না ছাড়ে।’
গ্রেগ চ্যাপেলের এরকম ব্যবহার সবার সাথেই কম বেশি ছিল। তাই সেই সময় ভারতীয় দলের সব ক্রিকেটারই এরকম নানান ঘটনায় তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। বিশেষ করে সিনিয়রদের মধ্যে তাঁর প্রতি অসন্তোষ চরম আকার ধারণ করে।