রাঁচির মাহি থেকে চেন্নাইয়ের ‘থালাইভা’

বোঝাই যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির জীবন প্রভাবিত হয়েছে চেন্নাইয়ের জল-হাওয়াও, তামিল নাড়ুর সংস্কৃতিতে। তিনি এককথায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে তামিল নাড়ুর সংস্কৃতির সাথে, এখানকার মানুষদের ভালবাসার সাথে। তাইতো তিনি অপেক্ষা করতে চান সেদিন অবধি যেদিন তিনি চেন্নাইয়ের সুপার কিংসের হয়ে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবেন চেন্নাইয়ের মাটিতে। সেই অঞ্চলের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বিদায় নিতে চান ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি।

‘ক্যাপ্টেন কুল’ ক্রিকেটে এই তকমার বা ট্যাগের মালিক একজন তিনি ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। মাঠে তাঁর সঠিক পরিকল্পনায় যেমন তিনি দলকে শিরোপা জেতাতে পটু ঠিক তেমনি মাঠের বাইরে নিজের জীবনের সিধান্তগুলোও নিতে ওস্তাদ। অন্তত তিনি নিজে এমনটাই মনে করেন।

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) দল চেন্নাই সুপার কিংস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজের ব্যাপারে এমন অভিমতই প্রকাশ করছেন তিনি। মহেন্দ্র সিং ধোনির যেকোন ধরণের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর কবে নেবেন সে প্রশ্নের প্রতিউত্তরে ধোনি বলেন, ‘আমি সব সময় আমার ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ার সাজিয়েছি পরিকল্পনা মাফিক।’

তাঁর এই পরিকল্পনার উদাহরণ হিসেবে তিনি টেনে আনেন নিজের ওয়ানডে অবসরের খানিক আগের কথা, ‘আমার ভারতের মাটিতে খেলা শেষ ওডিআই ম্যাচটি রাঁচিতে খেলা।’অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে শেষবার তিনি ব্যাট হাতে নেমেছিলেন সেই শহরে যে শহর থেকে উঠে এসেই তিনি বনে গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের একজন কিংবদন্তি।

তিনি এর সাথে আরো জুড়ে দেন, ‘আমি আশা করি আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা হবে চেন্নাইতে। সেটা হতে পারে আগামী বছর কিংবা আগামী পাঁচ বছরে। আমি জানি না।’ এতে এতটুকু বুঝে নেওয়া যায় তিনি চান তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘটুক সেই মানুষদের মাঝে যারা তাঁকে অঢেল ভালবাসায় গ্রহণ করে নিয়েছে নিজেদের ছেলে হিসেবে।

২০০৮ সালে যখন আইপিএল এর প্রথম আসর বসে ঠিক সেবার থেকেই ধোনি রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংসের ডেরায়। ঠিক সেবছর থেকেই দলটির অধিনায়কত্বের দায়িত্ব একনিষ্ঠভাবে পালন করে গিয়েছেন ধোনি। প্রতিনিধিত্ব করেছেন তামিল নাড়ুর জনগণদের। তাঁদের ভালবাসায় হয়েছে সিক্ত, তাঁদের প্রতি যেন চিরকৃতজ্ঞ।

ধোনি খানিকটা স্মৃতিকাতর কণ্ঠে তাঁর প্রথম টেস্ট অভিষেকের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে তাঁর সাথে চেইন্নাইয়ে সম্পর্ক, চেইন্নাইয়ে মানুষদের সম্পর্কে গোড়াপত্তন হয়েছে তাঁর টেস্ট অভিষেকের পর থেকেই। চেন্নাই সুপার কিংসের কল্যাণে ভারতের সেই অঞ্চলের মানুষদের সংস্কৃতি খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি এমনটাই অভিমত তাঁর।

ধোনি নিজেকে একজন পরিভ্রমণকারী দাবি করে বলেন, ‘আমার বাবা-মা উত্তর প্রদেশের নিবাসী ছিলেন পরে তা হয়ে যায় উত্তরখণ্ড। আমি জন্মেছি রাঁচিতে সেটা কি না বিহারের অধিনস্ত ছিল। পরে তা হয়ে যায় ঝারখণ্ড। আমি ১৮ বছর বয়েসে চাকরি পেয়েছিলাম পশ্চিমবঙ্গের রেলওয়েতে। তারপর আমি চলে এলাম চেন্নাইতে।’

চেন্নাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই ধোনির। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি চেন্নাই আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। তামিল নাড়ু আমাকে শিখিয়েছে কি করে জীবন পরিচালনা করতে হয় কি করে খেলাটার মর্ম উপলব্ধি করতে হয়। চিপুকে খেলা প্রতিটা ম্যাচেই আমাদেরকে সমর্থকেরা প্রচণ্ড উৎসাহ দিয়ে গিয়েছে।’

বোঝাই যায় মহেন্দ্র সিং ধোনির জীবন প্রভাবিত হয়েছে চেন্নাইয়ের জল-হাওয়াও, তামিল নাড়ুর সংস্কৃতিতে। তিনি এককথায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রয়েছে তামিল নাড়ুর সংস্কৃতির সাথে, এখানকার মানুষদের ভালবাসার সাথে। তাইতো তিনি অপেক্ষা করতে চান সেদিন অবধি যেদিন তিনি চেন্নাইয়ের সুপার কিংসের হয়ে নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবেন চেন্নাইয়ের মাটিতে। সেই অঞ্চলের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বিদায় নিতে চান ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...