আইপিএলের মঞ্চে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দেখা মিলেছিল একটি মাত্র আসরেই। সেটা প্রথম আসরে, সেই ২০০৮ সালে। সে আসরে সর্বোচ্চ ২২ উইকেট নিয়ে ‘পার্পল ক্যাপ’ মাথায় চড়িয়েছিলেন পাকিস্তানেরই একজন পেসার, সোহেল তানভীর।
তবে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএলে অংশগ্রহণের শুরুটা যেবারে, শেষটাও হয় সেই আসরেই। এরপরের আসরগুলোতে আর দেখা যায়নি তাদের। মূলত দুই দেশের কূটনৈতিক বৈরীতায় পরবর্তীতে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জন্য আইপিএলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়।
অবশ্য এর পিছনে ভয়ানক এক ইতিহাসও রয়েছে। ২০০৮ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় বিখ্যাত তাজমহল হোটেল। সে সময় ভারত সরকারের তদন্তে বেরিয়ে আসে, পাকিস্থানের এক সন্ত্রাসী গ্রুপ এই হামলা ঘটিয়েছে। এরপরই ভারতের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্কের আবারো অবনতি ঘটতে শুরু করে। আর এর মাশুল দিতে হয় পাকিস্তানি ক্রিকেটাদের।
আইপিএলের মঞ্চে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের নিয়মিত দেখা গেলে, কেমন হতো এ টুর্নামেন্টের চেহারা? পাকিস্তানিদের অংশগ্রহণে কি আইপিএলে ভিন্ন একটা মাত্রা যোগ করতো? আর আইপিএলে পাকিস্তানিদের জন্য দুয়ার খুলে গেলে কারাই বা থাকতেন নিলামের টেবিলে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে? এমন অসংখ্য প্রশ্ন, ভাবনায় বছর জুড়েই ডুবে থাকে ক্রিকেট সমর্থকরা।
এমনকি সে সব সম্ভাব্য ভাবনা কিংবা বিশ্লেষণ বেরিয়ে আসে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের কাছ থেকেও। সেই ধারাবাহিকতায় এবার জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশ্লেষক সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার আর টম মুডি আইপিএলে পাকিস্তানিদের ব্যাপারে জানিয়েছেন নিজস্ব ভাবনা।
এই সময়ে এসে কোন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আইপিএলে দল পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকতেন, সেটি নিয়েই মূলত নিজেদের মতামত দিয়েছেন এ দুই ক্রিকেট বিশ্লেষক। সঞ্জয় মাঞ্জেরেকারের মতে, পাকিস্তানি ব্যাটারদের চেয়ে বোলারই মূলত আইপিএলের নিলামে এগিয়ে থাকতেন। সে ক্ষেত্রে শাহীন আফ্রিদি আর হারিস রউফরা দল গুলোর জন্য হতে পারতেন হটকেক।
তবে ব্যাটারদের মধ্যে সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার আলাদা ভাবে ফখর জামানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি পেসাররাই নিলামে বেশি গুরুত্ব পেত। তবে ব্যাটারদের মধ্যে ফখর জামানও অনেক দলের জন্য আগ্রহের কারণ হতে পারেন।’
বাবর আজম, রিজওয়ানদের কথা টেনে মাঞ্জেরেকার আরো যুক্ত করে বলেন, ‘মোহাম্মদ রিজওয়ান অ্যাঙ্করিং প্লে ভাল করতে পারে। সে হিসেবে সেও কিছু দলের জন্য পছন্দের কারণ হতে পারে। তবে একই সাথে টি-টোয়েন্টিতে বাবর-রিজওয়ানের ব্যাটিং দেখাটা আমার জন্য ভয়াবহ হবে।’
অজি কোচ টম মুডি অবশ্য মনে করেন, এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সিংহভাগ ক্রিকেটারই আইপিএল খেলার যোগ্যতা রাখেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘শাহীন আফ্রিদি, হারিস রউফ, বাবর, রিজওয়ান, শাদাব খান — এরা সবাই আইপিএল খেলার যোগ্য। তবে আমাকে যদি একজন প্লেয়ারকে বেছে নিতে বলে, আমি শাহীন আফ্রিদিকে নিবে। আইপিএলের নিলামে সে-ই হবে আমার প্রথম পিক।’