বার্বাডোস থেকে আইপিএল, ভায়া ইংল্যান্ড

তারকাবহুল জাতীয় দলের টপ অর্ডারে তাঁর খেলার সুযোগ কম। আইপিএলেও দিল্লী ক্যাপিটালস শুরুতে ভরসা রাখেনি তাঁর উপর। তবে একাদশে ফিরতেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিচ্ছেন ফিল সল্ট। 

তারকাবহুল জাতীয় দলের টপ অর্ডারে তাঁর খেলার সুযোগ কম। আইপিএলেও দিল্লী ক্যাপিটালস শুরুতে ভরসা রাখেনি তাঁর উপর। তবে একাদশে ফিরতেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিচ্ছেন ফিল সল্ট। 

জাতীয় দলটা ইংল্যান্ড হলেও ফিল সল্টের বেড়ে ওঠা সুদূর ক্যারিবীয় মুলুকের বার্বাডোসে। কিশোর বয়সেও বন্ধুদের সাথে ফুটবলে মেতে উঠতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন সল্ট। কিন্তু ১৬ বছর বয়সে সারের হয়ে খেলার সুযোগ পেতেই পুরোদস্তুর ক্রিকেটার বনে যান সল্ট। ফেরেন বার্বাডোস থেকে, মারকুটে ব্যাটিংয়ের গল্প লিখতে শুরু করেন দেশের মাটিতে। 

জাতীয় দলে অভিষেকের আগেই বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগগুলোর আকর্ষণে পরিণত হন সল্ট। ইনিংসের শুরুতে তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সুবাদে ফ্যাঞ্চাইজি দলগুলো তাঁকে দলে ভেড়াতে রীতিমতো মুখিয়ে ছিল। বিগ ব্যাশ, সিপিএল, শ্রীলংকা প্রিমিয়ার লিগ কিংবা পিএসএল, যে টুর্নামেন্টেই সুযোগ পেয়েছেন সল্ট, নিজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। 

লিয়াম লিভিংস্টোনের মতো অকল্পনীয় পাওয়ার হিটিং কিংবা জস বাটলারের মতো মাঠের চারদিকে শট খেলার দক্ষতা আয়ত্ত্বে নেই সল্টের। সল্ট বরং নির্ভর করেন নিখাদ টাইমিংয়ের উপর, প্রপার ক্রিকেটীয় শটে মুগ্ধতা ছড়ান বাইশ গজে।

ইনিংসের শুরুতে খানিকটা সময় নিলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে বেরোন খোলস ছেড়ে। বড় বড় সব ছক্কা হাঁকানোর পাশাপাশি দৌঁড়ে রানের চাকা সচল রাখতে পটু এই তারকা। এছাড়া উইকেটের পেছনে দাঁড়াতেও তাঁর দক্ষতা প্রশ্নাতীত, দারুণ সব স্ট্যাম্পিং কিংবা ক্যাচে অবাক করেন নিয়মিতই। 

টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে আলো ছড়ানোর সুবাদে ২০১৯ সালেই ডাক পান ইংল্যান্ড জাতীয় দলে। যদিও প্রথম দুই বছরে তারকাবহুল ইংল্যান্ড দলে সুযোগ তেমন মেলেনি, বরং বদলি হিসেবেই স্কোয়াডে থাকতে হয়েছে। তবে সল্ট হাল ছাড়েননি, জানতেন একটিমাত্র সুযোগই বদলে দিতে পারে চিত্রনাট্য। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৫৮ বলে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর আর পেছনে ফিরে তাঁকাতে হয়নি। ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে সল্টের। 

এবারের আইপিএলে দুই কোটি রুপির বিনিময়ে তাঁকে দলে ভেড়ায় দিল্লী ক্যাপিটালস। কিন্তু ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ, রাইলি রুশোদের ভীড়ে মৌসুমের শুরুতে একাদশে জায়গা মেলেনি। দিল্লীও পার করেছে কঠিন দুঃসময়, মৌসুমের শেষভাগে তাই ভরসা খুঁজেছে সল্টের কাছে। তিনিও যেন সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন, পাঁচ ম্যাচে দুই ফিফটি আর ১৭৭ স্ট্রাইকরেটে তাঁর সংগ্রহ ১৫১ রান। 

রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে ১৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিল্লীর পা হড়কানোর সম্ভাবনা ছিল প্রবল। অন্তত টুর্নামেন্টে তাঁদের অতীত রেকর্ড তাই সাক্ষ্য দেয়। তবে সল্ট যেন দলকে জিতিয়ে ফেরার প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিলেন, অপরপ্রান্তে কেউ বড় ইনিংস না খেললেও তাই সমস্যা হয়নি।

তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কোনো জবাব ছিল না সিরাজ-হাসারাঙ্গাদের কাছে। আট চার এবং ছয় ছক্কায় ৪৫ বলে ৮৭ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলে যখন সাজঘরে ফিরছেন, ততক্ষণে ম্যাচ পকেটে পুরে নিয়েছে দিল্লী। 

বছরের শেষভাগে ভারতের মাটিতেই বসবে বিশ্বকাপের আসর। সল্টের লক্ষ্য তাই ফর্মটা ধরে রেখে জাতীয় দলের বিশ্বকাপগামী স্কোয়াডে জায়গা নিশ্চিত করা। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...