একটি জুটি। স্রেফ একটি জুটি বদলে দিতে পারে পুরো ম্যাচের চিত্রনাট্য। ঠিক তেমনই এক জুটি যেন গড়ে গেল সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই ব্যাটার। তরুণ তৌহিদ হৃদয়কে সাথে নিয়ে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম দেখালেন নিজের মুন্সিয়ানা। বুঝিয়ে দিলেন কেন ঠিক তিনি ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’।
জয় কিংবা পরাজয় খুব একটা প্রভাব ফেলবে না সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্যে। তবে রংপুর রাইডার্সের সামনে সুযোগ থাকছে প্রথম প্লে-অফ খেলার সুযোগ অর্জন করার। এমন একটি সমীকরণ নিয়েই মাঠে নেমেছিল দুই দল। এদিন সিলেটের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় মুশফিকুর রহিমকে। তবে টস ভাগ্য সহায় হয় রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের পক্ষে। তিনি প্রথমে বোলিং করবার সিদ্ধান্ত নেন।
মিরপুরের স্লো উইকেট বোলারদের বেশ সহয়তাই করতে থাকে শুরুর দিকে। ফর্মের তুঙ্গে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়রা হিমশিম খেতে থাকেন রান তুলতে। ধারাবাহিক মারকুটে ব্যাটিং দিয়েই আলোচনায় এসেছেন হৃদয়। তিনিও যেন এদিন শুরুটা একটু ধীরস্থিরভাবেই করলেন। রান তোলার গতি তখন বেশ করুণ। এভাবেই ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন সিলেটের ব্যাটাররা।
৪৩ রানে শান্ত ও ৫৯ রানে জাকির হোসেন আউট হওয়ার পরই শুরু হয় মুশফিকুর রহিম ও তৌহিদ হৃদয়ের ইনিংস মেরামতের কাজ। এই দুই ব্যাটারই থিতু হওয়ার কাজটা সেরে নিয়ে, নিজেদের স্বরুপে ফেরেন। এই গোটা টূর্নামেন্ট জুড়েই ভীষণ ধারাবাহিক হৃদয়। তিনি এবারের বিপিএলে পেয়ে যান পঞ্চম অর্ধশতকের দেখা। সেই অর্ধশতকের পথে তিনি এগিয়েছে কচ্ছপ গতিতে।
তবে এরপর নিজের আসল রুপে ফিরে আসেন হৃদয়। হাত খুলে মারতে শুরু করেন। ৪০ বলে ৩৯ রান করা হৃদয়, ৪৪ বলে পৌঁছে যান ৫৪ রানে। শেষ অবধি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৭ বলে ৮৫ রান। শুরুর দিকে বাড়তি বল নষ্ট করেও তিনি পরের দিকে পুষিয়ে দিয়েছেন। ১৪৯ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেন হৃদয়।
এই আস্থাটুকু নিশ্চয়ই জুগিয়ে গেছেন অপরপ্রান্তে থাকা মুশফিকুর রহিম। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানানো মুশফিক এদিন যেন নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন। নবম আসরে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান মুশফিকুর রহিম। এদিন শুরুতে খানিকটা সময় নিলেও, পরবর্তীতে তিনি আগ্রাসন দেখাতে শুরু করেন।
প্রায় ১৫৭ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। অধিনায়কের দায়িত্ব কাঁধে আসার পর দারুণ এক ইনিংসে তিনি জানান দিলেন এখনও তিনি ভরসাযোগ্য। তরুণ হৃদয়কে পথ দেখিয়ে তিনি দলের রান বাড়াতে থাকেন দ্রুতগতিতে। মাঠের চারিপাশে তিনি শট খেলার প্রচেষ্টা চালান। সফলও হয়েছেন বেশকিছু সময়ে।
দলীয় ৫৯ রানে জুটি শুরু করা হৃদয়-মুশফিক থামেন ১৭০ রানে। ৫৬ বলে এই জুটি সংগ্রহ করে ১১১ রান। শেষ অবধি তাঁরা দুইজন দলের জন্যে দারুণ এক সংগ্রহ নিয়ে প্যাভিলনের পথ ধরেন। এই পার্টনারশীপই শেষ অবধি সিলেট স্ট্রাইকার্সকে স্বস্তিজনক একটি জায়গায় নিয়ে যায়।