অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ের নেপথ্যে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ভূমিকা ছিল অসামান্য। সদ্য শেষ হওয়া এ বৈশ্বিক আসরে দুই বার শতরান পেরিয়েছেন। আর সেই দুইটা ইনিংসই ঢুকে গিয়েছে ইতিহাসের পাতার। একটি ৪০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।
অন্যটি আফগানদের সামনে ২৯২ রানের লক্ষ্যে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়াকে একাই জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়া ২০১ রানের ইনিংস। বিশ্বকাপ ক্রিকেট তো বটেই, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসেও এর আগে কোনো ব্যাটার রান তাড়ায় ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়তে পারেননি। ৫২ বছরের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সেই কীর্তির শুরুটা হয়েছে ম্যাক্সওয়েলকে দিয়ে।
ম্যাক্সওয়েলের এই পরিণত ব্যাটিং স্বত্ত্বার নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকাটা রেখেছে কোন ফ্যাক্টর? অজি এই ক্রিকেটার এবার এ প্রশ্নের উত্তর নিজেই খোলাসা করেছেন।
তাঁর মতে, আইপিএলের অভিজ্ঞতাই তাঁকে বিশ্বমঞ্চে দাপুটে পারফর্ম করার শক্তি জুগিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী এ তারকার তাই আইপিএলের প্রতি রয়েছে অসীম কৃতজ্ঞতাবোধ। আর তাই যতদিন তাঁর হাঁটার শক্তি থাকবে, ততদিন এই টুর্নামেন্ট খেলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিগব্যাশ খেলার উদ্দেশ্যে মেলবোর্ন বিমানবন্দরে এক ফাঁকে এমনটাই জানিয়েছেন অজি এই অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমি যত টুর্নামেন্ট খেলব, তার মধ্যে সম্ভবত আইপিএলই হবে শেষ টুর্নামেন্ট। আমি তখনই আইপিএল ছাড়ব, যখন আর হাঁটতে পারব না।’
এরপর নিজের ক্যারিয়ারের পিছনে আইপিএলের ভূমিকা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে আইপিএল কতটা ভালো ভূমিকা রেখেছে, সেটা বলে শেষ করা যাবে না। যাদের সঙ্গে মিশেছি, যেসব কোচের অধীন খেলেছি, যেসব আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছি, সব অভিজ্ঞতাই দুর্দান্ত। আমার ক্যারিয়ারে টুর্নামেন্টটির অবদান বলে শেষ করা যাবে না।’
আইপিএল নিয়ে ম্যাক্সওয়েল আরো যোগ করে বলেন, ‘দুই মাস এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং বিরাট কোহলির সতীর্থ হলে, অন্য ম্যাচ দেখতে দেখতে তাদের সঙ্গে আলাপ হবে। শেখার জায়গা থেকে ভাবলে কোনো ক্রিকেটারের জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু আর চাওয়ার নেই। আমি অনেক কিছু শিখেছি, বুঝেছি। আর সেই বোধোদয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ কাজে দিয়েছে।’
বিশ্বকাপ জয়ের পর ফুরফুরে মেজাজেই আছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। তবে তাদের ক্ষুধার জায়গা এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর গত বছর ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করে শিরোপা ধরে রাখতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। আর তাই এবার তাদের মিশন ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে ম্যাক্সওয়েল যুক্ত করেন, ‘বিশ্বকাপ জয়ের পরই আমরা পরের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করেছি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আলাপ করেছি, ভেবেছি। আশা করছি, বিগব্যাশ তার জন্য দারুণ প্রস্তুতির মঞ্চ হবে।’