ইমাদের স্রেফ মুখেই বড় বড় কথা

বছর দুয়েক আগে এমন হুঙ্কারই দিয়েছিলেন ইমাদ ওয়াসিম।

‘তারা যদি কোন কারণ দর্শানো ছাড়া আমাকে বাদ দেয় তবে আমি তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেবো।’ বছর দুয়েক আগে এমন হুঙ্কারই দিয়েছিলেন ইমাদ ওয়াসিম। এরপর তো তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরও নিয়ে নেন। এরপর আবার ফিরেও আসেন। মাঝের সময়টায় তিনি ছিলেন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের কট্টর সমালোচক, কোন কোন ক্ষেত্রে নিন্দুক।

‘আমি একটি কারণে ফিরে এসেছি। আমি ফিরেছি শেষবারের মত চেষ্টা করতে এবং বিশ্বকাপ জিততে।’ ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে জায়গা পাওয়ার পর এমন মন্তব্যই করেছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি নিজের সেই বক্তব্যের স্বপক্ষের ইমাদ ওয়াসিমকে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না।

টানা দুই ম্যাচ হেরেছে পাকিস্তান। বাবর আজমের দলের বিশ্বকাপ যাত্রা এক প্রকার শেষ বলে দেওয়াই যায়। তেমন পরিস্থিতি থেকে ইমাদ বাঁচাতে পারতেন দলকে। কিন্তু তিনি যেন ছিলেন উট পাখির মত মাটিতে মুখ গুজে। অথচ অবসর ভেঙে ফেরার পর তিনি বড় গলায় বলেছিলেন অনেক কিছুই।

‘সত্যি বলতে কেউ সেমিফাইনালিস্ট ও ফাইনালিস্টকে মনে রাখে না। সবাই চ্যাম্পিয়নকে মনে রাখে।’ ইমাদ দলে ফেরা মাত্রই এমন তীর্যক কথার বাণ ছুঁড়েছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি তার শরীরী ভাষায় লড়াই করবার বিন্দুমাত্র প্রয়াশও চোখে পড়েনি।

পাকিস্তানি পেসারদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে মাত্র ১১৯ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত। সেখান থেকে জয় পাওয়া খুব কঠিন কিছু হওয়ার কথা নয়। অন্তত ইমাদরা ছিলেন বলেই হয়ত পাকিস্তানের সমর্থকরা খানিকটা নির্ভার ছিলেন। কিন্তু একেবারে দৃষ্টিকটু এক বিষয়ের মঞ্চায়ন ঘটালেন ইমাদ।

তিনি যখন ক্রিজে আসেন তখন পাকিস্তান জয় থেকে ৪৭ রান দূরে। হাতে তখনও ৭ ওভারের মত বাকি। আরেক প্রান্তে ছিলেন ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেখান থেকে ম্যাচ দ্রুত শেষ করবার দিকেই থাকার কথা ছিল ইমাদের নজর। কিন্তু উইকেটে এসে প্রথম চার বলে কোন রানই নিতে পারেননি ইমাদ।

তা না হয় একটা পর্যায় পর্যন্ত মেনে নেওয়া যায়। কেননা নিউ ইয়োর্কের উইকেট বেজায় দ্বিধাগ্রস্ত করে দেয় ব্যাটারদের। সে দিক থেকে শুরুটা ধীর গতির হতেই পারে। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে ইমাদ হয়েছেন আরও ধীর। একটা পর্যায়ে পাকিস্তানের হাত থেকে ম্যাচ ফসকে যেতে শুরু করে। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২ ওভারে ২১ রান।

সেই সময়ে ২০ বলে ১৩ রান নিয়ে স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছিলেন ইমাদ। এরপরে যখন পাকিস্তানের এক ওভারে ১৮ রান প্রয়োজন তখন তার রান ২২ বলে ১৫। শেষ অবধি ২৩ বলে ১৫ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। মাঝে সিঙ্গেলস নিতেও তার অনীহা দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। জোর করেই তাকে খেলানো হচ্ছে- এমন এক বার্তাই যেন দিতে চাইলেন।

সে কারণে নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে দলের অন্দরমহলের অস্বস্তি। পাকিস্তান দলের বাইরে থাকাকালীন বহুবার বাবরকে কটুকথা শুনিয়েছিলেন ইমাদ। তাতে করে সম্পর্ক স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে- সেটা ভেবে নেওয়া বোকামি বটে। সেই কোন্দলই শেষ অবধি হয়ত ডুবিয়েছে পাকিস্তানকে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...