গত এক যুগে ভারতে নতুন ক্রিকেটার তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। নতুন ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
ফলে তরুণ ক্রিকেটাররা বেশ শক্ত একটা ভীত গড়ে আসেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। এর ফলও পাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট। কয়েক বছর ধরে ভারতীয় ক্রিকেটে তরুণ প্রতিভার অভাব নেই। এদের মোটামুটি সবাই জাতীয় দলে এসে ভালো পারফর্ম করছে। এই সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোও নতুন ক্রিকেটারদের দলে সুযোগ বেশি দিচ্ছেন।
অনেক সময় তরুণ ক্রিকেটারদের দলের অধিনায়কত্ব তুলে দিতেও আপত্তি করছেন না। বিরাট কোহলি, রোহিত শার্মারা আইপিএলে অধিনায়কত্ব করে পরবর্তী কালে ভারতের অধিনায়কও হয়েছেন। তাই অধিনায়ক তৈরিতে বড় ভূমিকা রাখছে এই আসরের। তবে আইপিএলের সব অধিনায়কই তো আর ভারতের অধিনায়ক হবার কৃতিত্ব অর্জন করতে পারেননা। কিছু ব্যতিক্রমও আছে যারা আইপিএলে অধিনায়কত্ব করলেও ভারতের হয়ে কখনো এই সুযোগ পাননি। এমনই কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে খেলা ৭১-এর আজকের একাদশ।
- শিখর ধাওয়ান
আমাদের একাদশের ওপেনার ভারতের নিয়মিত ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ২০১৪ সালে তিনি সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক হন। তবে সেই বছর দল সফল না হওয়ায় তাঁকে সড়িয়ে ড্যারেন স্যামিকে পরে অধিনায়ক করা হয়।
- মুরালি বিজয়
আমাদের আরেক ওপেনার মূলত আলোচনায় আসেন চেন্নাইয়ের হয়ে অসাধারণ পারফর্ম করে। তাঁকে ভাবা হয় বড় ম্যাচের প্লেয়ার হিসেবে। তবে পাঞ্জাবের অধিনায়ক হিসেবে তাঁর যাত্রাটা খুব একটা সুখকর না। তাঁর নেতৃত্বে ৮ ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জয় পেয়েছে দলটি।
- ভিভিএস লক্ষণ
২০০৮ সালে ডেকেন চার্জার্স দলটির সবচেয়ে পরিচিত মুখ ছিলেন এই ক্রিকেটার। তাই তাকেই দেয়া হয় অধিনায়কত্বের দায়িত্ব। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মানিয়ে নিতে বেশ ভুগতে হয়েছে এই ক্রিকেটারের। তাই তাঁর নেতৃত্বে দলের পারফরমেন্সও খুব একটা সুখকর না।
- শ্রেয়াস আইয়ার
দিল্লির অধিনায়ক হিসেবে দারুন সাফল্য দেখিয়েছেন ভারতের এই তরুণ ক্রিকেটার। শেষ দুই বছরে দলটির সাফল্যের নায়ক তাঁদের এই অধিনায়ক। গৌতম গম্ভীর ২০১৮ সালে তাঁকে দলটির অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেন। এখন পর্যন্ত ৪১ টি ম্যাচে দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।
- যুবরাজ সিং
আইপিএলের একাধিক দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ভারতের এই অলরাউন্ডার। তিনি পাঞ্জাব কিংস ও পুনে ওয়ারিয়র্সের অধিনায়ক ছিলেন। তবে পুনের অধিনায়ক হিসেবে খুব বেশি সফল নন এই ক্রিকেটার। তাঁর নেতৃত্বে মাত্র ৫০ শতাংশ ম্যাচে জয় পেয়েছিল দলটি।
- দীনেশ কার্তিক
আইপিএলের অভিজ্ঞ এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান দুটি দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রথম তিনি নেতৃত্ব দেন দিল্লি ক্যাপিটালসকে এবং পরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক হন। ভারতের হয়েও অনেক ম্যাচ খেলেছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। অসাধারণ ক্যাপ্টেন্সি স্কীল থাকার পরেও ভারতের অধিনায়ক হবার কখনো সুযোগ হয়নি তাঁর।
- পার্থিব প্যাটেল
খুব কম সংখ্যক মানুষই হয়তো মনে করতে পারবেন ঠিক কবে আইপিএলের ক্যাপ্টেন হয়েছিলেন তিনি। তবে কচি তুস্কার্স কে মাত্র একটি ম্যাচেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। তবে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে জয় পায়নি পার্থিব প্যাটেলের দল।
- রবিচন্দ্রন অশ্বিন
এই একাদশের স্পিন ডিপার্টমেন্টের ভরসা তিনি। অসাধারণ ক্রিকেট ব্রেইনের মালিক ভারতের এই স্পিনার। তাঁর ক্রিকেটীয় জ্ঞানের জন্য ২০১৮ সালে পাঞ্জাব কিংসের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁকে। দলটিকে ২৮ টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিলেও মাত্র ১২ ম্যাচে জয় পেয়েছেন।
- হরভজন সিং
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম আইপিএল ম্যাচেই দলটাকে নেতৃত্ব দেন এই স্পিনার। শচীন টেন্ডুলকার সেই ম্যাচ খেলতে না পারায় তাঁকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়। সব মিলিয়ে ২০ টি ম্যাচে দলটিকে নেতৃত্ব দেন তিনি।
- ভুবনেশ্বর কুমার
এই সময়ের ভারতের অন্যতম সেরা পেসার আছেন আমাদের একাদশেও। ২০১৯ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ তাঁকে সহ অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়। তবে কেইন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে দলটিকে নেতৃত্ব দেন এই পেসার।
- জহির খান
আমাদের পেস অ্যাটাকের নেতৃত্বে থাকবেন বাঁহাতি এই পেসার। দিল্লি ক্যাপিটালসের টিম ম্যানেজম্যান্ট ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে জহির খানের উপর ভরসা রাখে। বাঁহাতি এই পেসার ভারতের সর্বকালের সেরা বাঁহাতি পেসারদের একজন। তাই তাঁর অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করার জন্যই তাঁকে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেয়া হয়।