২০ জুন। ভারতীয় ক্রিকেটের সোনালী এক দিন। ক্যালেন্ডারের পাতায় এই দিনেই সাদা পোশাকে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় তিন উজ্জ্বল নক্ষত্রের। তিনজনই ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা তারকা। স্রেফ ভারতের নয়, বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকাদের একজন হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠিত করেন সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড় ও বিরাট কোহলি।
- সৌরভ গাঙ্গুলি
২০ জুন ১৯৯৬। লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি ভারত। ক্রিকেটের ঐতিহাসিক এই ভেন্যুতেই ভারতের জার্সি গায়ে টেস্টে ক্রিকেটে অভিষেক ‘প্রিন্স অব কলকাতা’ খ্যাত সৌরভ গাঙ্গুলির। প্রথম টেস্টে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে ডাক পান সৌরভ। অধিনায়ক আজহারউদ্দিনের সাথে বিবাদে জড়িয়ে হুট করে দল ছেড়ে নভজ্যেৎ সিং সিধু দেশে ফিরে যান। ভাগ্য খুলে যায় সৌরভের।
প্রথম ইনিংসে দ্রুত দুই উইকেট হারানোই তিনে ব্যাট করতে পাঠানো হয় সৌরভকে। ক্রিস লুইস, ডমিনিক কর্ক, পিটার মার্টিনদের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ইংলিশ বোলারদের উপর দাপট দেখিয়ে ১৩১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে লর্ডসের মাটিতে নিজেকে জানান দিয়েছিলেন সৌরভ। সৌরভ ও দ্রাবিড়ের দুর্দান্ত অভিষেক ইনিংসে ওই টেস্ট ড্র করে ভারত। এরপর সেখান থেকে সৌরভ বনে যান ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকাদের একজন।
- রাহুল দ্রাবিড়
সৌরভের সাথে ওই একই টেস্টে ইংলিশদের বিপক্ষে লর্ডসের মাটিতে অভিষেক হয় দ্য ওয়াল খ্যাত রাহুল দ্রাবিড়ের। ইংলিশ পেসারদের সামনে বাকিরা যেখানে দাঁড়াতে পারেননি, সেখানে সৌরভের সাথে অসাধারণ এক ইনিংস উপহার দেন দ্রাবিড়। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলেন ৯৫ রানের সেঞ্চুরিবঞ্চিত আক্ষেপময় এক ইনিংস।
লর্ডসের মাটিতে অভিষেকেই সৌরভ গাঙ্গুলি সেঞ্চুরির দেখা পেলেও মাত্র ৫ রানের আক্ষেপ পুড়তে হয়েছিল দ্রাবিড়কে। লর্ডসের ব্যালকনিতে দ্রাবিড়ের সেঞ্চুরিতে শুভেচ্ছা জানাতে অপেক্ষারত সৌরভ সহ বাকি সতীর্থদের একাংশ। কিন্তু সেদিন ভাগ্য সহায় হয়নি দ্রাবিড়ের। ব্যক্তিগত ৯৫ রানে ক্রিস লুইসের আঘাতে ফিরে যান তিনি।
২০ জুন। ভারতীয় ক্রিকেটের সোনালী এক দিন। ক্যালেন্ডারের পাতায় এই দিনেই সাদা পোশাকে ভারতের হয়ে অভিষেক হয় তিন উজ্জ্বল নক্ষত্রের। তিনজনই ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা তারকা। স্রেফ ভারতের নয়, বিশ্বক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকাদের একজন হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠিত করেন সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড় ও বিরাট কোহলি।
সেই যে শুরু, সেখান থেকে তিনি বনে যান সাদা পোশাকের কিংবদন্তি তারকা; টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ঘন্টার পর ঘন্টা মাটি কামড়ে পড়ে থাকতেন উইকেটে। প্রতিপক্ষের মনবল ভেঙে দিতেন ঘন্টার পর ঘন্টা উইকেটে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে। ১৬২ টেস্টে ৫২ গড়ে তিনি ১৩ হাজারের বেশি রানের মালিক।
- বিরাট কোহলি
২০১১ সালের এই দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কিংস্টনে টেস্ট অভিষেক হয় বিরাট কোহলির। যুব দল থেকেই ভারতের ভবিষ্যত তারকার তকমা গায়ে জড়ান। প্রতিভা আর সামর্থ্যের জানান দিয়ে তিনি এখন সময়ের অন্যতম সেরা তারকা। তবে, দ্রাবিড়-সৌরভের মত অভিষেক টেস্টটা মোটেও আপন রঙে রাঙাতে পারেননি বিরাট। দুই ইনিংসেই পেসার ফিদেল অ্যাডওয়ার্ডসের আগ্রাসনের কাছে পরাস্থ হয়ে হতাশা নিয়েই ফিরেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৪ রানে উইকেটের পেছনে কার্ল্টন বাফের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রায় একই ভাবে বাফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হন বিরাট। অবশ্য সুরেশ রায়না, রাহুল দ্রাবিড়দের কল্যানে ওই টেস্টে বড় জয় পায় ভারত।
অভিষেক হতাশাও কাটিয়ে ফেলেন অল্পতেই। সেখান থেকেই ঘুরে দাঁড়ান বিরাট। টেস্ট ক্রিকেটে এখন তিনি একশোর বেশি টেস্টে প্রায় পঞ্চাশ গড়ে আট হাজারের বেশি রানের মালিক।