সিরাজের বিকল্প: ইশান্ত নাকি উমেশ!

২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের হয়ে অন্তত ১০ টি টেস্ট খেলেছেন এমন ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কম বোলিং গড় ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদব। এই সময়ের মধ্যে ইশান্তের বোলিং গড় ২১.৩৭ এবং উমেশের বোলিং গড় মাত্র ২১.২৬। তবুও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্টে কেউই একাদশে সুযোগ পাননি। শুধু এটুকুই প্রমাণ করে ভারতের পেস বোলিং আক্রমণের গভীরতাটা কতটুকু।

দলের সেরা পারফর্মারও একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে নিশ্চিত নন। কেননা বাকি যে পেসাররা আছেন তাঁরা সবাই যখন সুযোগ পাচ্ছেন তখনই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ফলে পেস আক্রমণে কাকে রেখে কাকে খেলাবে এমন মধুর সমস্যায় পড়েছে ভারত।

প্রথম দুই ম্যাচে সুযোগ না হলেও এই দুই পেসার প্রস্তুত ছিলেন। তাঁরা জানতেন যেকোনো সময় তাঁদেরও মাঠে নামতে হতে পারে। আর নামলে নিজেকে প্রমাণ করাটা যেন বাধ্যতামূলক। ওদিকে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে দুজনের অন্তত একজন সুযোগটা পেতে পারেন।

ভারতের আরেক পেসার মোহাম্মদ সিরাজ পড়েছেন ইনজুরিতে। তৃতীয় ম্যাচের আগে তিনি সেরে উঠতে পারবেন কিনা সেটি এখনো নিশ্চিত নয়। ফলে ইশান্ত কিংবা উমেশের একজন হয়তো মাঠে নামবেন ভারতের হয়ে। তবে এই দুজনের মধ্যে কে খেলবেন সেটি নিয়েও আছে প্রশ্ন।

এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে আরেকটি টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারত। সেই ম্যাচে ইশান্ত ও মোহাম্মদ শামি দুজনকেই বিশ্রাম দিতে হয়েছিল। ফলে সেই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন উমেশ যাদব। ওই টেস্টে মাঠে নেমে নিজেকে নতুন করে পরিচয় করিয়েছিলেন এই পেসার। দুই ইনিংসেই নিয়েছিলেন তিনটি করে উইকেট। ওই একটা ম্যাচে উমেশ প্রমাণ করেছিলেন গত কয়েকবছরে নিজেকে কতটা এগিয়ে নিয়ে এসেছেন এই পেসার।

২০১৮ সালে উমেশ নিয়েছিলেন মোট ২০ উইকেট। ওই বছর ভারতের হয়ে ৫ টেস্ট খেলে তাঁর বোলিং গড় ছিল মাত্র ২১.৪০। পরের বছর মাত্র ১৩.৬৫ গড়ে নিয়েছিলেন ২৩ উইকেট। ২০২১ সালেও তিন টেস্ট খেলে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। ফলে উমেশ যাদব যে নতুন করে নিজেকে তৈরি করেছেন তা এই সংখ্যা গুলোতেই স্পষ্ট। এছাড়া উমেশ যে দেশ ও দেশের বাইরে দুই জায়গাতেই সমান কার্যকর সেটাও প্রমাণ করেছেন গত তিন বছরে।

ওদিকে ইশান্তও ভারতের হয়ে টেস্টে আছে দুর্দান্ত ফর্মে। এছাড়া ভারতের এই পেস বোলিং আক্রমণের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলারও তিনি। ভারতের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সফল পেসার ইশান্ত। এছাড়া দেশের বাইরে ইশান্ত সবসময়ই ভারতের সেরা পারফর্মার। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০৪ টি উইকেটই নিয়েছেন বিদেশের মাটিতে।

ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কিভাবে কাজে লাগাতে হয় সেটাও খুব ভালো করেই জানেন এই পেসার। ওদিকে ২০১৮ সাল থেকে তিনিও আছেন দুরন্ত ফর্মে। ২০১৮ সালে ভারতের হয়ে ১১ টেস্ট খেলে একাই নিয়েছিলেন ৪১ উইকেট। পরের বছর মাত্র ১৫.৫৬ বোলিং গড়ে নিয়েছিলেন ২৫ উইকেট। গত বছর খুব বেশি ম্যাচ না খেললেও তার ঝুলিতে আছে ১৪ উইকেট।

ফলে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে কোন পেসারকে খেলানো হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তাতেই আছে ভারত। কেপ টাউনে এই টেস্ট সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও বটে। ফলে নিজেদের সেরা শক্তিই ব্যবহার করতে চাইবে ভারত। ফলে কে খেলবেন সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ভারত হয়তো শেষ মুহূর্ত পর্যন্তই অপেক্ষা করবে। কেপ টাউনের উইকেট, কন্ডিশন বিচার করেই হয়তো একজনকে মাঠে নামাবে ভারত।

 

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link