বাংলাদেশ বরাবরই স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। বিশেষ করে বাঁ-হাতি স্পিনারদের পাইপলাইন সব সময়ই সমৃদ্ধ থাকে বাংলাদেশ দলের। তবে, সময় পাল্টেছে। এখন আর সেই মানের বাঁ-হাতি স্পিনার বের করতে পারছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আবার যারা আছেন, তাঁরাও খুব বড় টার্নার নন।
ফলে, একজন স্পিন বোলিং কোচ হন্যে হয়ে খুঁজছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিশেষ করে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট সিরিজের পর স্পিনারদের কার্য্যকারিতা নিয়ে সংশয় বিস্তর। এমনকি শ্রীলঙ্কার মাটিতে লঙ্কানদের অভিষিক্ত প্রাভিন জয়াবিক্রমার পারফরম্যান্সও ছিল বাংলাদেশের অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের চেয়ে উজ্জ্বল।
তাই, সমস্যা সমাধানে লঙ্কান এক গ্রেটেরই দ্বারস্থ হতে চলেছে বিসিবি। বিসিবি সূত্র জানিয়েছে, সাবেক শ্রীলঙ্কান বাঁ-হাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বোলিং কোচ করার ব্যাপারে কিছুটা এগিয়েছে সংস্থাটি। তবে, এই ব্যাপারে এখন অবধি কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
শুধু স্পিন বোলিং কোচ নয়, ব্যাটিং কোচের পদেও বদল আসতে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইংলিশ ব্যাটিং কোচ জন লুইসের কাজে মোটেও খুশি নন ক্রিকেটাররা। তাঁর জায়গায় যাকে বিসিবি ভাবছে – তাঁর নামটা শুনলে চমকে উঠতে পারেন। তিনি হলেন জেমি সিডন্স। সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার বাংলাদেশের প্রধান কোচের ভূমিকায় ছিলেন একটা সময়। তাঁর অধীনেই ২০১১ সালের বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাজের ব্যাপারে তিনি ছিলেন খুবই সিরিয়াস। পরিবার নিয়েই তিনি চাকরির সময় বাংলাদেশে থেকেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যাদের সাথে আলোচনা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে এই দু’জনও আছেন। তবে, খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা। এখনো টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন নিয়েও আলোচনা এগোয়নি। তাই, এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না।’
বিসিবি নিজে অবশ্য আনুষ্ঠানিক এখনো এই আলোচনার ব্যাপারে এখন অবধি কিছু জানায়নি। তবে, রঙ্গনা হেরাথ নিজে জানিয়েছেন বিসিবিরি সাথে তাঁর আলোচনা চলছে। সর্বশেষ এই পদে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রেট ড্যানিয়েল ভেট্টোরি।
ভেট্টোরি বছরে ১০০ দিন কাজ করার চুক্তিতে যোগ দিয়েছিলেন বিসিবিতে। তবে, নানা কারণে কখনোই তাঁকে সম্পূর্ণ ব্যবহার করতে পারেনি বিসিবি। সেজন্য হেরাথের ক্ষেত্রে এই বাৎসরিক কাজের মেয়াদটা বাড়াতে চায় বিসিবি। ভাবনা আছে, বছরের ২০০ দিনের জন্য হেরাথকে নিয়োগ দেওয়ার। তবে, হেরাথ নিজে নাকি ১২০ দিন সময় দিতে চান।
হেরাথের কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা অবশ্য খুব বেশি নেই। তবে, আন্তর্জাতিক ভাবে তিনি খুবই অভিজ্ঞ। ৯৩ টি টেস্ট খেলে ৪৩৩ টি উইকেট পাওয়া কারো সামর্থ্য নিয়ে নিশ্চয়ই প্রশ্ন ওঠার কথা নয়।
অন্যদিকে, খেলোয়াড়ি জীবনটা খুব বর্ণাঢ্য না হলেও এক ওয়ানডের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জেমি সিডন্স কোচ হিসেবে খুবই অভিজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশের কোচ হওয়ার আগেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সেন্টার অব এক্সিলেন্সের দায়িত্বে ছিলেন। ছিলেন অস্ট্রেলিয়া দলের সহকারী কোচও।