রেফারির বাঁশি তখন বেজে উঠবে উঠবে, ম্যানচেস্টার সিটির আশার প্রদীপ তখন নিভু নিভু। শেষ ভরসা হিসেবে মাতেও কোভাচিচ শট নিলেন কিন্তু লাভ হলো না। ভাগ্য তখন বোধহয় মুচকি হেসেছে, কেননা কোভাচিচের শট ডিফ্লেক্ট হয়ে চলে যায় জন স্টোনসের পায়ে। একেবারে বিনা বাধায় বল জালে জড়ান স্টোনস – নিজদের সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়ে এক পয়েন্ট পায় ম্যানসিটি।
এতটুকুতে হয়তো আপনার মনে হবে পেপ গার্দিওলার দল বুঝি সংগ্রাম করেছে আর্সেনালের বিপক্ষে, কিন্তু পুরো ম্যাচের গল্প পড়লে বদলে যাবে। ৭৮ ভাগ বলের দখলে রেখেছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা! গোলমুখে শট নিয়েছে ৩৩টি, বিপরীতে হজম করেছে পাঁচটি – পরিসংখ্যান দেখে বোঝার উপায় নেই দুই পরাশক্তির লড়াই হয়েছে। মনে হয় বুঝি এফএ কাপে তৃতীয় টায়ারের কোন দলের বিপক্ষে খেলেছে প্রিমিয়ার লিগের জায়ান্টরা।
অবশ্য মানদণ্ডের বিচারে রক্ষণশীল হলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কিন্তু অধিকাংশ সময় ছিল গানার্সদের হাতে। ধৈর্য ধরে নিজেদের ঘর সামলে আক্রমণে ওঠার পরিকল্পনায় পুরোপুরি সফল হয়েছে তাঁরা।
শুরুতে যদিও হেডলাইন দখলে নিয়েছিলেন আর্লিং হাল্যান্ড, ম্যাচের মাত্র নবম মিনিটে গোলের দেখা পান তিনি। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে এটি তাঁর শততম গোল, এবং চলতি লিগে তাঁর গোলসংখ্যা দুই অঙ্কের ঘরে প্রবেশ করলো এর মধ্য দিয়ে। কিন্তু তাঁকে ছাড়িয়ে লাইমলাইটে আর্সেনালের নিউ সাইনিং রিকার্ডো ক্যালাফিওরি।
অবিশ্বাস্যের জন্ম দিয়ে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন, প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাম পায়ের মাপা শটে পরাস্ত করেন এডারসনকে। সেই মোমেন্টাম ধরে রেখে বিরতির ঠিক আগে লিড পেয়ে যায় সফরকারীরা। বুয়াকো সাকার কর্নার কিক থেকে গোল করেন আরেক ডিফেন্ডার গ্যাব্রিয়েল।
রক্ষণভাগের দুই সেনানীর গোলে এগিয়ে গিয়েছে দলটি, তবে সেটা রক্ষণভাগের ওপর আরও চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে অলআউট অ্যাটাক শুরু করে ম্যানসিটি, লিওনার্দো ট্রসওয়ার্ডের লাল কার্ড সেই কাজটা আরও সহজ করে দিয়েছে। তবু আকাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি সহজে, অপেক্ষা করতে হয়েছে। এরপরই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, অন্তিম মুহূর্তে গোল করে আর্সেনালের হৃদয় ভেঙে দেন স্টোনস।