সময়টা মোটেও ভাল যাচ্ছে না লিটন কুমার দাসের। জাতীয় ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়েছেন সদ্যই। সে খবরের ২৪ ঘন্টা না পেরুতেই নেমেছিলেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল)। তবে সেখানেও একরাশ হতাশাই তার সঙ্গী। ২৪ মিনিটেই তার ব্যাটিং ইনিংসের ঘটে পরিসমাপ্তি।
আরাফাত সানির অফ ও মিডল স্ট্যাম্পের মধ্যখানে পিচ করা বল। টার্নের সাথে সাথে সেই বলটা হালকা বাউন্সও আদায় করে নিল। তাতে করে উড়ে যায় লিটন কুমার দাসের অফ স্ট্যাম্প। হতাশ বদনে, একরাশ অভিমান নিয়ে লিটন ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। অভিমান কিংবা রাগ, সমস্তটাই তার নিজের উপর। সেটা হওয়াই যে অবধারাতি।
লিটন কুমার দাস, দীর্ঘ প্রায় একটা বছর ধরেই ওয়ানডে ক্রিকেটে খাবি খাচ্ছেন ভীষণভাবে। জাতীয় দলে তবুও অবিচ্ছেদ্য একটা অংশ হয়েই ছিলেন তিনি। তবে কোনরকম উন্নতির দেখা অন্তত মেলেনি তার কাছ থেকে। অগ্যতা তাকে বাদ দিতেই হয়েছে ওয়ানডে দল থেকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি লিটন। ফিরেছেন শূন্যরানে। ঠিক এরপরই সমালোচনা ঘিরে ধরে লিটনকে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলও তাকে এদফা অন্তত আর ছাড় দিতে নারাজ। কেননা গেল দশ ওয়ানডে ইনিংসে যে লিটনের ব্যাট থেকে একটা হাফসেঞ্চুরিও আসেনি।
তার থেকেও হতাশার বিষয় শেষ চার আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচের একটিতেও লিটন এক অঙ্কের ঘর পার করতে পারেননি। শেষ দুইটিতে তো ফিরেছেন শূন্য রানে। তাছাড়া ২০২৩ থেকে এখন অবধি লিটনের ওয়ানডে ব্যাটিং গড় ২৫ এর আশেপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। লিটন হাজার চেষ্টা করেও সে দশার উন্নতি ঘটাতে পারেননি। তাইতো একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাকে ছাড়তে হয়েছে দল।
জাতীয় দল ছেড়েও যে সুখের সময় পার করছেন লিটন তেমনটি বলবার সুযোগ নেই। রবিবার বাংলাদেশ ক্রিড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) তিন নম্বর মাঠে ডিপিএল খেলতে নামেন লিটন। শাইনপুকুরের ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে প্রথমে বল করে আবাহনী। দস্তানা হাতে দু’টো ক্যাচ লুফে নিয়েছেন লিটন। প্রতিপক্ষকে ১৬৯ রানে থামাতে সহয়তা করেন তিনিও।
কিন্তু তার মূল দুশ্চিন্তার জায়গা যে ব্যাট হাতে। এদিন ১৭০ রানের টার্গেটে আবাহনীর হয়ে ওপেনিং করতে নামেননি লিটন। খেলেছেন তিন নম্বরে। কেননা আবাহনীর নিয়মতি ওপেনিং জুটি বেশ ভাল করছে এবারের ডিপিএলে। তাছাড়া নতুন বলে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে লিটনকে। ঠিক সেকারণেই বলের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়ার অপেক্ষাই করেছেন লিটন।
তিন নম্বরে নেমেও এদিন খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি তিনি। হাতে পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ ছিল। নিজের ইনিংসটা তাই একটু রয়েসয়ে বড় করতে চেয়েছিলেন লিটন। ব্যাটে একটু রান ফিরলেই ফিরবে আত্মবিশ্বাস। সে কারণেই প্রায় টেস্ট মেজাজে খেলে চলছিলেন তিনি।
তবে সময় খারাপ গেলে, ভাগ্যও মুখ ফিরিয়ে নেয়। নিজের খেলা ১৯ তম বলটায় বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান লিটন। ব্যাট হাতে মোটে পাঁচ রানই নিতে সক্ষম হন তিনি। অবশ্য তাতে আবাহনীর জয় পেতে তেমন বেগ পোহাতে হয়নি।