গত বারের আইপিএলে বাজে সময় কাটালেও এবারের মৌসুমে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে নিজেদের পুরনো রূপে ফিরেছে চেন্নাই সুপার কিংস। এক বছরের ব্যবধানেই যেন চেন্নাইয়ের খোলনলচে বদলে দিয়েছেন এই তারকা। অস্ট্রেলিয়ায় সাবেক ব্যাটার ম্যাথু হেইডেনের মতে, ধোনি একজন ম্যাজিশিয়ান যার ছোঁয়ায় বদলে গেছে পুরো দল।
ধোনির নেতৃত্বে ভর করেই আইপিএলে ১৪ আসরের মাঝে দশম বারের মতো ফাইনালে উঠলো চেন্নাই। অথচ মৌসুমের শুরুতে দুর্বল বোলিং লাইন আপের কারণে চেন্নাইকে কেউ শিরোপা দৌড়ে রাখেনি। এছাড়া গোটা মৌসুম জুড়ে ইনজুরি সমস্যা তো ছিলই। বড় একটা সময়জুড়ে মাঠের বাইরে ছিলেন বেন স্টোকস, দীপক চাহার, মুকেশ চৌধুরীরা। কিন্তু তাঁদের ছাড়াই একদল তরুণের ভেতর থেকে সেরাটা বের করে এনে আরও একবার ফাইনালে তুলেছেন চেন্নাইকে।
তাছাড়া টি-টোয়েন্টিতে এক প্রকার বাতিল হয়ে যাওয়া শিভাম দুবে এবং আজিঙ্কা রাহানেকেও গোটা মৌসুমে ব্যবহার করেছেন দারুণভাবে। এছাড়া ধোনি নিজেও পুরো মৌসুমজুড়ে হাঁটুর ইনজুরিকে সঙ্গী করেই মাঠে নেমেছেন। ফলে আগামী মৌসুমে তাঁকে আইপিএলের মঞ্চে দেখা যাবে কিনা সে নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। যদিও সিদ্ধান্ত নেবার আগে আরও আট-নয় মাস সময় পাচ্ছেন এই তারকা।
হেইডেন বলেন, ‘ধোনি একজন ম্যাজিশিয়ান। সে অন্য দলের বাতিল খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়েও তাঁদের থেকে সেরাটা আদায় করে নিতে জানে। সে সবসময় ইতিবাচকভাবে চিন্তা করে। তাছাড়া তামিলনাড়ু ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং চেন্নাই ফ্যাঞ্চাইজির সাথেও তাঁর সম্পর্ক দারুণ। পুরো দলটা ঠিকভাবে সাজাতে সে সময় নেয়, পুরো পদ্ধতিতে সে নিজে অংশ নেয়। ভারতের হয়েও সে একই কাজ করেছে, চেন্নাইয়ের হয়েও একই পদ্ধতিতে এগিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সে আগামী বছর খেলবে সেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটা প্রশ্ন। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় না সে খেলবে, কিন্তু নামটা যেহেতু ধোনি আপনি কিছুতেই আগে থেকে অনুমান করতে পারবেন না। যেকোনো কিছুই হতে পারে।’
এদিন কেবল ধোনি নয়, বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের উত্থান নিয়েও কথা বলেন এই অজই তারকা। তিনি বলেন, ‘তিন ফরম্যাটেই খেলার দিনগুলো ফুরিয়ে এসেছে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে ঘিরে সবার উন্মদনা বুঝিয়ে দেয় টেস্ট ক্রিকেট আজও দর্শকদের কাছে সমান আবেগের। এর বাইরে টি-টোয়েন্টিটাই তো সবাই খেলছে।’
৫১ বছর বয়সী এই তারকার মতে, বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে ফ্যাঞ্চাইজিদের সাথে বছরব্যাপী চুক্তিতে যাওয়া মোটেই অনৈতিক কিংবা দোষের কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘আগামী দিনে যারা ক্রিকেটে আসবে, তাঁরা মূলত টি-টোয়েন্টিই খেলবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের কথাই ধরুন, আশির দশকের সেই সোনালী দিনগুলো তাঁরা হারিয়েছে। অথচ ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদেরই রাজত্ব। নিকোলাস পুরানের কথাই ভাবুন, সে নিশ্চিতভাবেই ফ্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট ছেড়ে টেস্ট খেলতে আগ্রহী হবে না। অতীতে ডোয়াইন ব্রাভোও একই কাজ করেছেন। শুরুতে কয়েকদিন টেস্ট খেললেও দ্রুতই অবসর নিয়ে নেন।’
তিনি বলেন, ‘এমন আরও শতশত উদাহরণ দেয়া যাবে। অস্ট্রেলিয়াতে ডেভিড ওয়ার্নার ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে নিশ্চিতভাবেই টি- টোয়েন্টির চাইতে টেস্টকে বেশি গুরুত্ব দেবেন না।’