মার্কো ইয়ানসেন, ভবিষ্যতের জ্যাক ক্যালিস?

উচ্চতা প্রায় ছয় ফুট নয় ইঞ্চি। মাঠের সবচেয়ে লম্বা মানুষ। রূপক অর্থে দিনের সবচেয়ে লম্বা মানুষটাও ছিলেন মার্কো ইয়ানসেন। ভারত যতবারই মুখ লুকাতে চেয়েছে, ততবারই তাঁর বিশাল ছায়া তাড়া করেছে।

পরিচয় মূলত বোলার। তবে তৃতীয় দিনে তাঁর ব্যাটার সত্ত্বাটা বেশি প্রয়োজন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। তিনি সেই কাজটাই করলেন। ১৪৭ বলে ৮৪ রান- কে বলবে সে একজন লোয়ার অর্ডার ব্যাটার! যোগ্য সমর্থনটাই দিয়ে গেলেন ১৮৫ রান করা ডিন এলগারকে।

নিচের দিকের ব্যাটারদের মূল দায়িত্ব সেট ব্যাটারকে যত বেশি স্ট্রাইক দেওয়া। অবশ্য ইয়ানসেনকে দেখে মনেই হয়নি তিনি এলগারের পরে নেমেছেন। জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ, শার্দূল ঠাকুর, প্রসিধ কৃষ্ণার মতো বোলারদের খেললেন অনায়াসে।

এক একটা কভার ড্রাইভ, ফ্লিক, পুল শট যেভাবে খেলছিলেন তা যেন চোখের প্রশান্তি। তার শান্ত মুখভঙ্গি তার আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটিয়েছে প্রতি মুহূর্তে। এমনকি স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকেও দারুণ শটে বাউন্ডারি মারতে পিছুপা হননি। লম্বা ব্যাটাররা সাধারণত ক্রিজে থেকে ড্রাইভ করেন স্পিনারদের। কিন্তু এদিন ইয়ানসেন সাহস দেখালেন সামনের পায়ে এসে।

বিশ্বকাপে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। ধারাবাহিকভাবে উইকেট নিয়ে এসেছেন পাদপ্রদীপের আলোয়। এই টেস্টে অবশ্য প্রথম ইনিংসে আহামরি কিছু করতে পারেন নি- মাত্র এক শিকার।

জানসেন ফিরলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। উইকেটগুলো একবার দেখুন- বিরাট কোহলি, শুভমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ার। কোহলি ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন। তাঁকে ৭৬ রানে না থামানো গেলে ম্যাচের চিত্র উল্টো হতে পারত।  ইকোনোমি একটু বেশি পাঁচের ঘরে হলেও তাই তাঁর বোলিং ফিগার দারুণ- ৩৬ রানে ৩ উইকেট।

ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাসটা বোলিংয়েও টেনে এনে তাঁর অলরাউন্ডার সত্ত্বাটাই তুলে ধরলেন আরও একবার। হয়তো এখনই জ্যাক ক্যালিস হয়ে ওঠেননি, তবে ভবিষ্যতে তাঁর পথ অনুসরণ করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মার্কো জানসেন এই ম্যাচ দিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link