এই তো দিন কতক পরেই ৪০ এর কোটায় পা রাখবেন। বয়সটা নিশ্চয়ই তাঁকে অভয় দেয় না ক্রিকেট খেলার। বয়স তো পরের বিষয়। হাঁটুর ইনজুরি তো আরও আগেই তাঁকে বারণ করেছে মাঠে যেতে। তবে তিনি বরাবরই অদম্য। তাঁকে যেন কোন শক্তিই মাঠে ফেরা থেকে দমাতে পারবে না। তিনি যে কেবল মাঠে ফিরছেন, তা নয়। দলের বোঝা না হয়ে বরং সম্মুখভাগে থেকে লড়াইটা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
তাইতো মাশরাফি বিন মর্তুজা এখনও কোটি বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের মনের মণিকোঠায় বাস করেন। সেই মাশরাফির ধার কমেছে। তবে কার্যকারিতা হারিয়ে যায়নি। তিনি এখনও নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে উইকেট বাগিয়ে নিতে জানেন। তিনি ব্যাটারকে ১২০ কিংবা ১২৫ গতির বলেও ভরকে দিতে পটু।
তাইতো ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও তিনি উইকেটের দেখা পাচ্ছেন। হয়ত আগ্রাসনটা নেই। তাই উইকেটের সংখ্যা খানিকটা কম। তবে ম্যাচ প্রতি দুইটি করে উইকেট রয়েছে তাঁর নামের পাশে। শুক্রবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের তিনটি উইকেট বাগিয়েছেন মাশরাফি। তাঁর নেতৃত্বই এবার লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ মাঠে নেমেছে।
যদিও দলের হয়ে একটি ম্যাচে অংশ নেননি তিনি। তবুও তাঁর দল তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে শাইনপুকুরকে থামিয়েছেন মাত্র ২০৭ রানে। তবে মাশরাফি বিন মর্তুজার কার্য্যকারিতা বোঝার সবচেয়ে ভাল উপায় তাঁর ইকোনমি রেট।
সাভারের বিকেএসপিতে শাইনপুকুরের বিপক্ষে তিনি রান দিয়েছেন পাঁচের নিচে ইকোনমি রেটে। এর আগে অগ্রণি ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে তিনি স্রেফ ২.৬২ ইকনোমি রেটে রান দিয়ে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। আরেকটি উইকেট আসে তাঁর ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে। উইকেট তুলে নেওয়ায় এখনও বেশ ধারাবাহিক তিনি। তবে রান আটকে দিতে এখনও তিনি ঠিক শুরুর মতই পারদর্শী।
এই তো কিছুদিন আগে তারুণ্য নির্ভর একটা দলকে নিয়ে তিনি খেলেছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল। এবার হয়ত তেমন কোন সাফল্যই তাঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা করছে লেজেন্ডস অব রুপগঞ্জ। সেদিকেই যেন তিনি নিয়ে যাচ্ছেন দলকে। শেষ অবধি কতদূর নিয়ে যেতে পারবে তা হয়ত সময়ই বলে দেবে।
তবে একটা প্রশ্ন নিশ্চয়ই ভাবায়। ঠিক কি করে মাশরাফি পারেন? সেই প্রশ্নের উত্তর কেবল মাশরাফিই জানেন। বছরের পর বছর তিনি ইনজুরিতে ভুগেছেন। খোড়াতে খোড়াতে তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের হাল ধরেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দলকে একটা শক্ত অবস্থানে নিয়ে গিয়েছেন। সেই তিনি ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একেবারে শেষ বেলা এসেও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।
তিনি পুরো একটা প্রজন্মকে যেন বার্তা দিয়ে যেতে চান- হাল ছেড়ো না বন্ধু, যেতে হবে অনেকটা পথ।