আগোছালো সোহানের ব্যাটিং কিংবা ক্যারিয়ার

নুরুল হাসান সোহানের ক্যারিয়ারটা যেন ক্রিজে এসে শুক্রবার খেলা প্রথম শর্টটার মতোই অগোছালো আর অপ্রাপ্তিতে ভরা।

নুরুল হাসান সোহান, তাঁর ব্যাটিংয়ে ততটা সৌন্দর্য নেই। তাঁর বেশ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবুও তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের যতটুকু রয়েছে তা দিয়েই লড়াইটা করে যাচ্ছেন। সেই লড়াইয়ের মঞ্চ হিসেবে এবার তিনি বেছে নিয়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগকে।

সোহান নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন। কেননা তিনি তাঁর টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যানের কারণে বার বার বাদ পড়ে যান জাতীয় দলের ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে।  নিজের সবচেয়ে পছন্দের ফরম্যাট তো ওয়ানডে ক্রিকেটই। সোহান ওয়ানডেতে কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, সেটা তাঁর পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়।

ওয়ানডেতে সোহানের ব্যাটিং গড় ৮২.৫। যেখানে বাংলাদেশ দলে ফিনিশারদের স্টাইকরেট নিয়ে এত কথা সেখানেও সফল সোহান। জাতীয় দলের জার্সিতে ব্যাট করেছেন ৯৫ স্টাইকরেটে। তবুও ওয়ানডে ফরম্যাটের টিম কম্বিনেশনে সর্বদাই ব্রাত্য সোহান। অবশ্য সোহান নিজেকে খুব একটা প্রমাণ করতে পেরেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে, সেটি বলারও সুযোগ নেই। কিন্তু পর্যাপ্ত সময় তিনি পেয়েছেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধা থেকেই যায়।

নুরুল হাসান সোহানের ক্যারিয়ারটা যেন ক্রিজে এসে শুক্রবার খেলা প্রথম শর্টটার মতোই অগোছালো আর অপ্রাপ্তিতে ভরা। এই যেমন সোহান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খারাপ পারর্ফম্যান্স করেছেন। তবুও তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সেই সিরিজে একটা ম্যাচও না খেলিয়ে আবার সোহানকে আয়ারল্যান্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে বাদ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

এই অগোছালো ক্রিকেট ক্যারিয়ারে খানিকটা স্বস্তি বইয়ে দিতে যেন তিনি ডিপিএলকে বেছে নেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শুক্রবারের ম্যাচে সোহানের অবদান ৬৪ বলে ৬৬ রান। ৫ চার ও ১ ছক্কার সাথে সবচেয়ে দারুন যে ব্যাপারটা ছিলো সেটা হলো স্টাইক রোটেশন করা।

সোহান খেলেছেন মাত্র ২৩ শতাংশ ডট বল। যেখানে পেসার আর স্পিনার সবার বিপক্ষেই সোহান ছিলেন সাবলীল। ১০০ এর বেশি স্টাইকরেটে তিনি সমানতালে ব্যাটিং করেছেন পেস আর স্পিনের বিপক্ষে। তবে সাকলাইন সজীবের বলে অহেতুক ডাউন দ্য ট্র্যাকে আসতে গিয়েই তিনি নিজের উইকেটটি স্রেফ বিলিয়ে এসেছেন।

ঠিক এখানটায় সোহান যেন পিছিয়ে যান অনেক দূর। তিনি নিজের সীমাবদ্ধতার সামনে খুব দ্রুতই এক্সপোজ হয়ে যান। তিনি যখন আউট হয়ে ফেরেন তখন শেখ জামালের সামনে সুযোগ ছিল বড় সংগ্রহ গড়ার। হাতে বেশকিছু ওভারও বাকি ছিল। তবুও সোহান শেষ করে আসতে পারেননি দলের ইনিংস। তিনি অপ্রয়োজনীয় এক শট খেলতে গিয়ে নিজের উইকেটটি খুইয়ে এসেছেন।

তিনি টিকে গেলে অন্তত ৩০০ রানের গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলতে পারত শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। অথচ তাদের দলীয় ইনিংস থেমেছে ২৮৭ রানে। সোহান নিজের অগোছালো ক্যারিয়ারটা গোছাতে হলে বাইশ গজে আগে গোছাতে হবে নিজেকে। সে কাজটা নিশ্চয়ই দ্রুত করতে চাইবেন নুরুল হাসান সোহান।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...