মোহাম্মদ মিঠুনের ওয়ানডে অভিষেক হয় ২০১৪ সালের ১৭ ই মার্চ।
ভারতের বিপক্ষে সে ম্যাচ থেকে এখন অবধি মিঠুন ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছেন ২৯ ম্যাচে। এই ম্যাচের মধ্যে আজকেই নিজের ক্যারিয়ারের ইনিংস সর্বোচ্চ ম্যাচটা খেলে ফেলেছেন তিনি। করেছেন অপরাজিত ৭৩ রান। তা অপরাজিত ৭৩ রান একজন ব্যাটসম্যান করতেই পারেন। সেটা আলোচনার বিষয় না। আলোচনার বিষয় হল তিনি এই রানটা করছেন যেখানে সেটা নিয়ে।
মিঠুনের অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংসটা এসেছে নিইউজিল্যান্ডের মাটিতে, যেখানে শুধু বাংলাদেশ নয় উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্যেই রান করাটা কঠিন। মজার ব্যাপার হল, এই কঠিন কাজ তিনি আজই প্রথম করেননি।
মোহাম্মদ মিঠুন নিজের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত নিউজিল্যান্ড সফরে যান ২০১৯ সালে। আর সেখান থেকেই মিথুনের এই নিউজিল্যান্ড রহস্যের শুরু। সেবার নেপিয়ারে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই হেনরি-বোল্ট-ফার্গুসন-নিশামে সাজানো আক্রমণাত্মক বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে তিনি করেন ৬২ রান, যেটা কিনা ঐ ম্যাচে ছিল বাংলাদেশের সেরা ইনিংস।
সবাই যখন ভাবছিল এটা হয়তো ফ্লুক, তখন দ্বিতীইয় ম্যাচেও আবারও বাজিমাত মিঠুনের। ক্রাইস্টচার্চের সে ম্যাচে তিনি করেন ৫৭ রান! নিউজিল্যান্ডের মত কন্ডিশনে দুই ম্যাচে টানা দুই ফিফটি। ইনজুরিসমস্যার কারণে ডানেডিনের তৃতীয় ম্যাচটা অবশ্য তিনি খেলতে পারেননি, নাহলে হয়তো তিন ম্যাচে তিন হাফ সেঞ্চুরিও দেখা যেত!
এ তো গেল উনিশের আলাপ। একুশে এসেও কিন্তু মিঠুন নিজের নিউজিল্যান্ডপ্রীতি ধরে রেখেছেন সমানতালে। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে নিজেদের মধ্যে একটা প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করে বাংলাদেশ। আর সেখানেও ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন মিঠুন। সেই ইনিংসের পর প্রথম ওয়ানডেতে অবশ্য দুর্ভাগ্যজনক রান-আউটে তিনি খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আবারও বাজিমাত মিঠুনের- খেলেছেন অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস! যেটা নিয়ে মিথুনের পরিসংখ্যা দাঁড়াল- নিউজিল্যান্ডের মাটিতে খেলা শেষ ৪ ওয়ানডের ৩ টাতেই হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
অবস্থা যেটা দাঁড়াচ্ছে, মিথুন চাইলে নিউজিল্যান্ডকে নিজের ‘সেকেন্ড হোম’ দাবি করতেই পারেন। দেশের মাটিতে যেখানে তাঁর ব্যাটিং গড় ৪৬.৫০, নিউজিল্যান্ডের মাটিতেই সেটা ৬৭! শুধু তাই না, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উপমহাদেশের মাত্র ছয়জন ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং গড় ষাট বা ষাটের ওপরে। মিঠুন সেখানে আছেন ৬৭ গড় নিয়ে আছেন চতুর্থ স্থানেই। তবে তালিকার এক আর দুইয়ে থাকা লোকেশ রাহুল আর শ্রেয়াস আইয়ার অবশ্য ম্যাচ খেলেছেন মিঠুনের চাইতেও কম!
২০১০ এ ওয়ার্ল্ড ডিজনী একটা অ্যানিমেশন রিলিজ করেছিল- অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড। মিঠুন চাইলে সেটার নিজের ভার্সন ‘মিথুন ইন নিউজিল্যান্ড’ দাবি করতেই পারেন এসব ইনিংসকে!