শেষ বিকেলের হাসি

দলকে ম্যাচ জেতাতে কে না চায়। যে ম্যাচ জেতায়, মানে ম্যাচের সেরা পারফরমারকেই দেওয়া হয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই এই পুরস্কার হাতে নেওয়াটা স্মরণীয় এক মুহূর্ত। আর সেই মুহূর্তটা যদি আসে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে? তাহলে তো কথাই নেই।

দলকে ম্যাচ জেতাতে কে না চায়। যে ম্যাচ জেতায়, মানে ম্যাচের সেরা পারফরমারকেই দেওয়া হয় ম্যাচ সেরার পুরস্কার। যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই এই পুরস্কার হাতে নেওয়াটা স্মরণীয় এক মুহূর্ত।

আর সেই মুহূর্তটা যদি আসে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে? তাহলে তো কথাই নেই।

ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটায় সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হওয়াটা যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই পরম আরাধ্য একটা ব্যাপার। তবে, যেকোনো ফরম্যাটে নিজেদের শেষ ম্যাচে সেরা নির্বাচিত হয়েছেন – এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। তাঁদের নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।

  • জেসন গিলেস্পি (অস্ট্রেলিয়া)

সাবেক অজি পেসার জেসন গিলেস্পি টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে খেলতে নেমেই ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন! আর সেটাকে স্বরণীয় করে রাখতে ওই টেস্টের পরই অবসরের ঘোষণা দেন তিনি।

তাঁর দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য বেশ সুনাম থাকলেও ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে সেই ডাবল সেঞ্চুরি এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই টেস্টে তিনি বল হাতে তিন উইকেটও শিকার করেন। আর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টেই লাভ করেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

  • মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)

সম্প্রতি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা টেস্টে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রায় ১৬ মাস পর সাদা পোশাকে দলে ফিরেই দেড়শো রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন তিনি। ওই টেস্টের মাঝেই সাদা পোশাকে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দেন রিয়াদ।

তাঁর খেলা ২৭৮ বলে ১৫০ রানের হার না মানা ইনিংসে বাংলাদেশ জয় পায় ২২০ রানের বিশাল ব্যবধানে। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতে শেষটা স্বরণীয় করে রাখলেন এই অলরাউন্ডার। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা একই সাথে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সেরা ইনিংসও বটে।

  • ইরফান পাঠান (ভারত)

সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান ছিলেন দলের জন্য একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তাঁর অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে বেশ কয়েকবার দলের জয়ে অবদান রেখেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী আসরে দলের শিরোপা জয়ে অনবদ্য অবদান রাখেন তিনি।

এর পাঁচ বছর পরেই অবশ্য তাঁর ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। ২০১২ সালের ৪ আগস্ট শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন তিনি। যেখানে একাই শিকার করেন পাঁচ উইকেট, সেই সাথে ব্যাট হাতেও করেন ২৯ রান। আর নিজের শেষ ওয়ানডেতে ম্যাচ সেরা হয়ে ক্যারিয়ারের শেষটা করেন স্বপ্নের মতো।

  • প্রজ্ঞান ওঁঝা (ভারত)

সাবেক ভারতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝাও ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শচীন টেন্ডুলকারের ফেয়ারওয়েল ম্যাচই ছিলো প্রজ্ঞান ওঝাঁর শেষ ম্যাচ।

ওই ম্যাচে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হন তিনি। এরপর তাঁর বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হলে আর জাতীয় দলে ফিরতে পারেননি এই স্পিনার। তবে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ম্যাচ সেরা হয়েছেন এই সুখস্মৃতি টাই হয়তো দিনশেষে তাঁর মুখে হাসির রেখা টানবে।

  • সুব্রামানিয়াম বদ্রিনাথ (ভারত)

সুব্রামানিয়াম বদ্রিনাথ ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষিক্ত হন তিনি। ওই ম্যাচই ছিলো তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ! ওই ম্যাচে ব্যাট হাতে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হন তিনি।

তবুও আর কখনোই টি-টোয়েন্টিতে ভারতের জার্সি গায়ে জড়াতে পারেননি এই দূর্ভাগা ব্যাটসম্যান। ভারতের হয়ে দুই টেস্ট, সাত ওয়ানডে ও এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন তিনি।

  • স্যার অ্যালিস্টেয়ার কুক (ইংল্যান্ড)

সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টেয়ার কুক ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ই ওপেনার হিসেবে খেলেছেন। ২০১৮ সালে ভারতের বিপক্ষে তিনি টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। ওই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৭১ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন।

তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইংলিশরা ওই ম্যাচে দারুণ এক জয় পায়। আর ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে অনবদ্য পারফরম্যান্স করে কুক জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...