‘বাংলাদেশে সাকিব ভাইয়ের বিকল্প নেই’

সাকিব আল হাসান যখন নিষিদ্ধ হলেন, তখনই এই প্রশ্নটা গুরুতর হয়ে উঠেছিলো-এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের জায়গাটা পূরণ হবে কী করে?

করোনা মহামারির অভিশাপ আমাদের জন্য খানিকটা আশীর্বাদ হয়ে এলো। প্রায় এক বছর খেলা বন্ধ হয়ে রইলো। ফলে সাকিবহীন অবস্থা খুব একটা দেখতে হলো না। কিন্তু নিয়তি খণ্ডাবে কে!

ইনজুরি, পারিবারিক সমস্যা ও আইপিএল মিলিয়ে আবার কয়েকটা সিরিজ সেই সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই খেলতে হচ্ছে ও হবে বাংলাদেশকে। আবার প্রশ্নটা সামনে এলো, অমন করে ব্যাটে ও বলে কে দায়িত্ব নেবে দলে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সোজা কথা নয়। তারপরও নির্বাচকরা নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য অন্তত মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দায়িত্বটা দিতে চান।

সৈকত যেহেতু ভালো ব্যাটসম্যান এবং মোটামুটি কাজের বোলার, তাই তাকে বেছে নেওয়া। সৈকত অবশ্য কথাটা শুনে একটু বিব্রত হলেন। বললেন, সাকিবের শূন্যতা বাংলাদেশে কারোরই পূরণ করা সম্ভব না। ফলে তিনি এই ‘বিকল্প’ হওয়ার চাপ না নিয়েই খেলতে চান।

সৈকত বাংলাদেশের অনেকদিন ধরেই ভবিষ্যত বলে বিবেচিত। সীমিত ওভারে খুব বড় আস্থার প্রতিদান এখনও দিতে পারেননি। তবে টেস্টে তিনি নিজেকে প্রায় প্রমাণ করে ফেলেছেন বলেই বলা চলে। কিন্তু টেস্ট দলেই তার ইদানিং জায়গা হচ্ছে না।

এ নিয়ে কথা বলতে গেলে অবশ্য একটু অস্বস্তিতে ভুগলেন সৈকত। দায়টা নিজের কাঁধেই নিতে চাইলেন। বললেন, ‘আসলে কেনো নিয়মিত হতে পারছি না, বলা মুশকিল। সম্ভবত আমার দিক থেকে কোনো ঘাটতি আছে। আমারও মাঝে ইনজুরি ছিলো। সবমিলিয়ে সময়টা ভালো যাচ্ছিলো না। এখন আর টেস্টের কথা ভাবছি না।’

টেস্ট নিয়ে আপাতত না ভাবলেও চলছে। এখন সৈকতকে ভাবতে হবে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি নিয়ে। নিউজিল্যান্ডে এই দুই ফরম্যাটেই খেলা। সৈকতের ওয়ানডে গড় মাত্র ২৭.৪৫। এটা দিয়ে অবশ্য তার প্রভাবটা বোঝা যাচ্ছে না। বিশ্বকাপের আগে সর্বশেষ ত্রিদেশীয় সিরিজটা বাংলাদেশ জিতেছিলো মূলত এই সৈকতের ব্যাটে ভর করে। ফলে তার কাছ থেকে এরকম কিছু নিউজিল্যান্ডে আশা করাই যেতে পারে।

সৈকত বললেন, ‘এখনও জানি না, একাদশে থাকবো কি না। তবে থাকলে নিজের সেরাটা খেলবো। নিশ্চয়ই নিউজিল্যান্ড নিয়ে অনেক প্লানিং হবে। সেই অনুযায়ী খেলতে হবে আমাকে।’

নিউজিল্যান্ডে সৈকত আগেও গেছেন। ২০১৬ সালের সফরে ক্রাইস্টচার্চে ওয়ানডেতে ৪৪ বলে অপরাজিত ৫০ রানের একটা ইনিংসও খেলেছিলেন। ফলে তার এই দেশে খেলা সম্পর্কে ভালোই ধারণা আছে। সেই ধারণা থেকে সৈকত জানেন যে, এখানে খেলাটা খুব কঠিন হবে। বাউন্সি উইকেট আর বাতাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে ভালো করেই জানেন।

সৈকত অবশ্য এখনই নেতিবাচক কিছু ভাবতে রাজী নন। তিনি নিজেকে প্রস্তুত করছেন, দলে সুযোগ পেলেই যাতে কিছু অবদান রাখা যায়।

কিন্তু সৈকত খেলবেন কোথায়?

সর্বশেষ কিছুদিন ওয়ানডেতে ৭ নম্বরে খেলছিলেন। এখন দল সেখানে সৌম্য সরকারকে খেলাচ্ছে। আবার সাকিবের জায়গাটা শূন্য হওয়াতে ওপরের দিকেও ডাক পড়তে পারে। সৈকত বলছিলেন, ‘এখনও আমি ব্যাটিং অর্ডার জানি না। নিশ্চয়ই পরিকল্পনা হবে। একাদশে থাকলে তো আগেই ব্যাটিং অর্ডার জানানো হবে। আমি সাত নম্বরের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি। এ ছাড়া দলের যেখানে আমি খেললে ভালো হবে, তাই খেলবো।’

তার মানে সাকিবের দায়িত্বটাই নিতে হবে-দলের ভালোর জন্য খেলা!

সৈকত বললেন, তিনি সাকিব আল হাসানের সাথে এভাবে মেলাতে চান না, ‘সাকিব ভাই দেখেন বিশ্বসেরাদের একজন। যদি সত্যি কথা বলি, এই মুহুর্তে ওনার অভাব পূরণ করা আমাদের বাংলাদেশের কারো পক্ষেই সম্ভব না। এ জন্য আসলে সবাইকেই কাজ করতে হবে। সাকিব ভাই নাই, তাই সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি ওনার কাজটা করে ফেলবো, এভাবে ভাবা যাবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link