ক্রিকেট খেলায় একটি কথা প্রচলিত আছে ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’। আর এই ঘটনাটিই বাস্তবে ঘটে। একটি ক্যাচ মিস হলে একজন ব্যাটসম্যান তাঁর নিজের ভুল বুঝতে পারেন। এর ফলে তাঁরা আর সেই ভুল কিংবা লোভনীয় ভাবে আর শট খেলতে যাবেন না। এর ফলে ব্যাটসম্যান উইকেটে সেট হতে পারেন। আর ম্যাচে জয়ের জন্য সর্বোচ্চটা দিতে পারেন ব্যাটসম্যানরা।
ফিল্ডিংটা আলাদা একটা স্কিল। দূর্দান্ত ফিল্ডিং ঘুুরিয়ে দিতে পারে ম্যাচের গতিবিধি। তুখোড় সব ফিল্ডারদের তাই তুলনা করা যায় বাজপাখির সাথে। চোখের পলকে তাঁরা দূর্দান্ত সব ক্যাচ ধরতেন। সময়ের সাথে সাথে তাঁদের ফিল্ডিং পরিসংখ্যানও বেশ সমৃদ্ধ হয়েছে। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে, ক্রিকেট বিশ্বের সেরা ফিল্ডার জন্টি রোডস এই তালিকায় নেই। কারণ তিনি ক্যারিয়ারে এতো বেশি ম্যাচ খেলেতে পারেননি। ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলে ৩০০-এর ওপর ক্যাচ ধরেছেন তাঁদেরকে নিয়ে এবারের আয়োজন।
- মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার স্বর্ণালী সময়ের ক্রিকেটার মাহেলা জয়াবর্ধনে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক।
জয়াবর্ধনে মূলত ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং স্তম্ভ। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে বেশির ভাগ সময় ফিল্ডিং করতেন স্লিপে। স্লিপে খুব কম সংখ্যক ক্যাচই মিস করেছেন তিনি। ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ক্যাচ মুঠোবন্দি করেছেন মাহেলা জয়াবর্ধনে।
তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যাচ ধরেছেন মোট ৪৪০ টি।
- রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক রিকি পন্টিং। অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছেন দুইটি বিশ্বকাপ। এছাড়াও অধিনায়ক হিসেবে ছিলো দূর্দান্ত সব সাফল্য।
শুধু অধিনায়ক নয়, ব্যাটসম্যান হিসেবেও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় বেশ উপরের দিকেই থাকবেন রিকি পন্টিং। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটকে ব্যাট হাতে অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি।
তিনি ক্রিকেট মাঠে ছিলেন দূর্দান্ত একজন ফিল্ডার। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় ফিল্ডিং করেছেন ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে। এছাড়াও স্লিপ এবং মিড অনেও ফিল্ডিং করতে দেখা যেত তাকে।
রিকি পন্টিং ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলে খেলেছেন ৫৬০ ম্যাচ। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৩৬৪ টি ক্যাচ মুঠোবন্দি করেছেন।
- রস টেইলর (নিউজিল্যান্ড)
সবচেয়ে কম আলোচিত একজন ক্রিকেটার হলেন রস টেইলর। নীরবে দিনের পর দিন পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেটের সব সংস্করণে শতাধিক ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞতা আছে তাঁর।
টেইলর নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। নিউজিল্যান্ড দলের মিডল অর্ডারের ভরসার নাম রস টেইলর। তাকে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ফিল্ডিং করতে দেখা যায় স্লিপে।
এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ খেলছেন ৪৪৩ টি। এই সময়ের মধ্যে বল মুঠোবন্দী করেছেন ৩৪৪ বার।
- জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হলেন জ্যাক ক্যালিস। তিনি ক্রিকেট মাঠে ছিলেন সত্যিকারের অলরাউন্ডার। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং সব দিক থেকেই তিনি ছিলেন অন্যতম সেরা ক্রিকেটার।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন আপের অন্যতম ভরসার নাম ছিলেন জ্যাক ক্যালিস। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিশ হাজারের উপর রান এবং পাঁচশ এর বেশি উইকেট শিকার করেছেন।
তিনি ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলে খেলেছেন ৫১৯ ম্যাচ। এই সময়ের মধ্যে তিনি ৩৩৮ টি ক্যাচ নিয়েছেন।
- রাহুল দ্রাবিড় (ভারত)
‘দ্য ওয়াল’ খ্যাত রাহুল দ্রাবিড় মূলত একজন সেরা ব্যাটসম্যান। টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। রাহুল দ্রাবিড় ওয়ানডে ক্রিকেটে অনেক দিন ভারতীয় দলে উইকেট রক্ষকের ভূমিকা পালন করেছেন।
রাহুল দ্রাবিড়কে মূলত দেখা যেত স্লিপে ফিল্ডিং করতে। তিনি ফিল্ডার হিসেবেও বেশ ভালো ক্যাচ নিতে পারতেন।
ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে তিনি খেলেছেন মোট ৫০৯ ম্যাচ। এই সময়ের মধ্যে তিনি নিয়েছেন ৩৩৪ উইকেট।
- স্টিফেন ফ্লেমিং (নিউজিল্যান্ড)
নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের অন্যতম সেরা অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং। নিজে ক্রিকেটার হিসেবে খুব বেশি সাফল্য পান্নি। ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রায়ই সেট হয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসার রেকর্ড ছিলো তাঁর নামে।
তবে অধিনায়ক এবং ফিল্ডার হিসেবে ছিলেন সময়ের অন্যতম ফিল্ডার। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলেছেন মোট ৩৯৬ ম্যাচ। এই সময়ের মধ্যে ৩০৬ টি ক্যাচ নিয়েছেন।