নিলামঘর নয়, মাঠ কাঁপান তাঁরা

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ডামাডোল বেজে গিয়েছে। নতুন দুই দলের সংযুক্তি ও মোটামুটি নিশ্চিত। অন্যদিকে আগের থেকে থাকা আট দলের খেলোয়াড় রিটেনশন তালিকাও সুনিশ্চিত। আট দলের মোট ৩২জন খেলোয়াড় রিটেইন করার সুযোগ থাকলেও দলগুলো মোট ২৭জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছেন।

বাকি ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে তিন জন করে খেলোয়াড়কে নিলামের আগেই দলে ভেড়াতে পারবে নতুন দুই ফ্রাঞ্চাইজি। এ সকল পরিসংখ্যানকে পাশে রেখে অন্য এক বিষয় নিয়ে আলোচনা রয়েছে আজকে। সেখানে থাকছেন আইপিএলে নিয়মিত পারফর্ম করা সত্ত্বেও নিলামে উপেক্ষিত হওয়া খেলোয়াড়েরা।

  • শিখর ধাওয়ান (ভারত)

প্রথমেই থাকছেন ভারতীয় বা-হাতি ওপেনার শিখর ধাওয়ান। ভারত জাতীয় দলের ওয়ানডে ফরম্যাটের বেশ এক ভরসা নাম শিখর। তাছাড়া গেলো মৌসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকার পরও তাঁকে রিটেইন করেনি ফ্রাঞ্চাইজিটি। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক শিখর ধাওয়ান করেছিলেন ৫৮৭ রান। খেলেছেন ১৬টি ম্যাচ। তাঁর মধ্যে করেছেন তিনটি অর্ধশতক। প্রায় ৩৬ গড়ে নিয়মিত আইপিএলে রান করার পরও নিলামে খুব বেশি আকর্ষনীয় চুক্তিতে আবদ্ধ হতে পারেননি উপেক্ষিত এই ওপেনার।

  • নিতিশ রানা (ভারত)

আইপিএলে উপেক্ষিত হওয়ার তালিকায় নতুন নাম হিসেবে যুক্ত হতে পারেন গত মৌসুম কোলকাতা নাইট রাইডার্সে কাটানো নিতিশ রানা। ২০১৭ সালের পর প্রায় প্রতিটি মৌসুমেই তিনি করেছেন ৩০০ রানের বেশি। তাছাড়া বা-হাতি মিডেল অর্ডার ব্যাটার রানা কোলকাতার বিগত বেশকিছু মৌসুমে সাফল্যের অন্যতম কারণ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে দলে রাখেনি কোলকাতা।

আসন্ন ২০২২ আইপিএল নিলামকে সামনে রেখে তাঁকে ছেড়ে দেয় ফ্রাঞ্চাইজিটি। যদিও নিতিশ একজন ধারাবাহিক পারফর্মার তবুও নজড়কাড়া পারফর্মেন্সের দেখা খুব একটি মেলেনি তাঁর কাছ থেকে। সুতরাং নিলামে তাঁর জন্যে বিপুল অংকের অর্থ খরচ করবে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো তা ভাবা বোকামির সামিল।

  • দেবদূত পাদ্দিকাল (ভারত)

দেবদূত পাদ্দিকালের আইপিএল যাত্রা শুরু হয় ২০২০ সালে। অভিষেক মৌসুমেই তিনি বনে যান দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। সেই মৌসুম তিনি শুরু করেছিলেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে। ১৪ ম্যাচে করছিলেন ৪১১ রান। সেই সাথে দূর্দান্ত এক শতকও হাঁকিয়েছিলেন তিনি।

দারুণ পারফর্ম করার পরও তাঁকে আর দলের রাখেনি ব্যাঙ্গালুরু ফ্রাঞ্চাইজি। যদিও ২০২২ আইপিএলের মেগা নিলামের আগে তাঁদের কাছে সুযোগ ছিলো খেলোয়াড় রিটেইন করানোর এবং তাঁদের একটি রিটেইনশন স্পট খালিও ছিলো। অতএব ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিলামে নিজের নামটি লিখিয়েছনে উপেক্ষিত দেবদূত পাদ্দিকাল।

  •  হার্শাল প্যাটেল (ভারত)

উপেক্ষিতদের তালিকার সবচেয়ে বড় আফসোসের নাম হার্শাল প্যাটেল। রয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে কি অসাধরণ একটি বছর কাটানোর পরও তাঁর ঠায় হয়নি দলের রিটেইন করা খেলোয়াড়দের তালিকায়।

গত বছর ৩২টি উইকেট নিয়ে ‘পার্পেল ক্যাপ’ জেতার পাশাপাশি তিনি এক মৌসুমে সর্বাধিক উইকেট শিকার রেকর্ডের যৌথ ভাগিদার। সবচেয়ে আক্ষেপের বিষয় বিগত দশটি মৌসুম আইপিএল খেলেও হার্শাল কেবল মাত্র ৬৩টি ম্যাচে অংশ নিতে পেরেছেন। আন্ডাররেটেড খেলোয়াড় হিসেবেই তিনি আবারো যাচ্ছেন আইপিএলের মেগা অকশনে।

  • জেসন হোল্ডার  (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

খানিক অবাক হয়ত হয়েছেন ক্যারিবিয়ান কোন এক খেলোয়াড়কে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক এক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আন্ডাররেটেড খেলোয়াড়দের তালিকায় দেখে। হবারই কথা। ফরম্যাট বিবেচনায় জেসন হোল্ডার বেশ কার্যকরি একজন অলরাউন্ডার।

দারুণ পেস বোলিং করার পাশপাশি ব্যাট হাতে পেশির জোড়টা ঠিকঠাক কাজে লাগাতে জানেন তিনি। গেলো মৌসুমে মাত্র আটটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন হোল্ডার। ছিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদে। সেই আট ম্যাচেই প্রায় ১৫.৪৩ গড়ে উইকেট নিয়েছেন ১৬টি। তবুও তাঁকে দলে রেখে দেয়নি ফ্রাঞ্চাইজিটি। আইপিএলের পাঁচটি মৌসুম খেলেও নিজের সামর্থের প্রমাণ রাখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন হোল্ডার। উপেক্ষিত না হওয়ার নতুন আশা নিয়ে তিনিও হয়ত চেয়ে রইবেন ২০২২ এর মেগা অকশনের দিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link