টেস্টের নেতৃত্বকেও কোহলির বিদায়

টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বিরাট ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ৬৮টি টেস্ট ম্যাচে। সাদা পোষাকের এই ফরম্যাটে বিরাটের জয়ের পাল্লাটা বেশ ভারী। শতাংশের হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ৫৮.৮২। জয়ের শতকরা হিসেবে তাঁর উপরে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি দুই অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও স্টিভ ওয়াহ। ম্যাচে সংখ্যা বিবেচনায় রিকি এগিয়ে থাকলেও জয়ে পরিসংখ্যানে সবার উপরে রয়েছেন ওয়াহ ৭১.৯২%। এই দিক বিবেচনায় বিরাটকে সফলতম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে গন্য করাই যায়।

প্রায় অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা ঘটে গেল ভারতীয় ক্রিকেট অঙ্গনে। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে থেকে বিরাট কোহলির অধিনায়ক পর্বের ইতির কথা হয়ত সকলের জানা। সে নিয়ে তো আর ঘটনা, তার পেছনের ঘটনার অভাব রইলো না। আলোচনা-পর্যালোচনা, চর্চা, নিন্দা কোন কিছুর কমতিও ঘটেনি। সেই বিরাট কোহলি এবার দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ শেষে সাদা পোষাকেও অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন।

২০১৪ সালে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল টেস্ট অধিনায়কের। সেই থেকে ২০২২ এর এই শুরু অবধি প্রায় সাত বছরের এক দীর্ঘ যাত্রা শেষে বিরাট নিজেকে দলনেতার দায়িত্ব থেকে মুক্ত করলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে এক বার্তায় তিনি দায়িত্ব ছাড়ার কথাটি জানান।

সেই টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, ‘সাত বছর অনেক পরিশ্রম, ঘাম, আর বিরতিহীন চেষ্টায় দলকে একটা নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনায় নিয়ে গিয়েছি। কাজটায় আমি শতভাগ সততা দেখিয়েছি, ছাড় দেইনি এক বিন্দুও। তবে, সব কিছুরই শেষ আছে। আমার ভারতের অধিনায়ক হিসেবেও এখানেই ইতি। এই লম্বা যাত্রায় অনেক উত্থান-পতন এসেছে। তবে, কখনো নিজের প্রতি বিশ্বাস হারাইনি। আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি, আমি দলের জন্য নিজের ১২০ ভাগ ঢেলে দিয়েছি। আমার হৃদয়ে স্বচ্ছতা ছিল, দলের প্রতি আমি সৎ ছিলাম।’

বিদায় বেলায় কোহলি ধন্যবাদ জানালেন সংশ্লিষ্ট সবাইকে। বিশেষ করে মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবি শাস্ত্রীকে, ‘দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আমি বিসিসিআইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। সতীর্থদের ধন্যবাদ জানাই, কারণ কেউই ওরা হাল ছাড়তে জানে না। সতীর্থদের জন্যই যাত্রাটা সুন্দর হয়েছে। দলটার চালিকা শক্তি ছিল রবি (শাস্ত্রী) ভাই সাপোর্টিং গ্রুপ। সবাই দলটাকে টেস্ট ক্রিকেটে আরো উপরে তুলতে সাহায্য করেছে। সর্বশেষ ধন্যবাদ জানাতে চাই মহেন্দ্র সিং ধোনি, যিনি আমার মধ্যে একজন অধিনায়ককে খুঁজে পেয়েছিলেন, যিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে আমি ভারতের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বিরাট ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ৬৮টি টেস্ট ম্যাচে। সাদা পোষাকের এই ফরম্যাটে বিরাটের জয়ের পাল্লাটা বেশ ভারী। শতাংশের হিসাব করলে তা দাঁড়ায় ৫৮.৮২। জয়ের শতকরা হিসেবে তাঁর উপরে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি দুই অধিনায়ক রিকি পন্টিং ও স্টিভ ওয়াহ। ম্যাচে সংখ্যা বিবেচনায় রিকি এগিয়ে থাকলেও জয়ে পরিসংখ্যানে সবার উপরে রয়েছেন ওয়াহ ৭১.৯২%। এই দিক বিবেচনায় বিরাটকে সফলতম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে গন্য করাই যায়।

৬৮ ম্যাচের মধ্যে ৪০টি ম্যাচ জিতেছে বিরাটের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দল। এর বিপরীতে হেরেছে ১৭টি ড্র করেছে ১১টি ম্যাচ। বিরাট অধিনায়কের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে দেশ ও দেশের বাইরে সমানতালে পারফর্ম করেছে দলটি। দলের সাথে তাল মিলিয়ে বিরাটের ব্যাটও দারুণ চলেছে এই সময়কালে। ১১৩ ইনিংস ব্যাট করে তিনি রান করেছেন ৫৮৬৪ রান। টেস্ট অধিনায়কদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ রানের মালিক বিরাট কোহলি।

গড়ের দিক বিবেচনায় তিনি রয়েছেন দ্বিতীয় অবস্থানে। তাঁর ব্যাটিং গড় ৫৪.৮০। তাছাড়া অধিনায়ক থাকাকালীন সময়ে বিরাট হাঁকিয়েছেন ২০টি শতক ও ১৮টি অর্ধশতক।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...