একটাই স্ট্যাম্প। একেবারে ঠিকঠাক ইয়র্কার লেন্থ। সোজা গিয়ে কোন এক নি:সঙ্গ তালগাছের মত দাঁড়িয়ে থাকা স্ট্যাম্পেই আঘাত করল। কি অনায়াসে এমন দারুন এক ইয়র্কার লেন্থের বল করে ফেলেন আন্দ্রে রাসেল। অভিজ্ঞতার ঝুলিতে এমন বল তো হাজার খানেক রয়েছে।
সেটা বেশ ভাল করেই জানা তরুণ পেসার মুশফিক হাসানের। তিনি হয়ত জানেন না, তবে আন্দাজ করতে পারেন ঠিক কতটুকু অভিজ্ঞতায় পূর্ণ আন্দ্রে রাসেল। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের এই দামামার মাঝেও সঠিকভাবে নিজের কাজটা কিভাবে করতে হয়, তা রাসেলের মত খেলোয়াড়দের যেন আঙুলের ডগায় অবস্থান করে।
তাদের কাছ থেকে যে শেখার থাকে অনেক কিছু। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেক উঠে আসা রাসেল যে পুরো পৃথিবীকেই যেন এক বিশাল দ্বীপপুঞ্জে পরিণত করেছেন। পৃথিবীর এই প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত, সমস্তটাই তো চষে বেড়িয়েছেন। বিরূপ সব পরিবেশের সাথে মানিয়ে পারফর্ম করে গেছেন। শিখেছেন নানামুখী টোটকা।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত এই ক্রিকেট দুনিয়ায় টিকে থাকার সকল রসদ নিজে একটু একটু করে জমা করেছেন রাসেল। তাইতো বয়স বাড়লেও তার কদর কমেনি এক ছটাক। যেখানেই ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট সেখান থেকেই ডাক চলে আসে রাসেলের।
ব্যাট আর বলে ফ্রাঞ্চাইজির হয়ে ম্যাচ জেতাই যেন তার মূল কাজ। তাইতো ইয়র্কার ঠিক কেমন করে করতে হয়। কোন কোন দিকে খেয়াল রাখতে হয়। সব কিছুই রপ্ত করে রেখেছেন রাসেল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে সেসবই ঝালাই করে নিয়েছেন রাসেল।
এরই মাঝে একটু সংশয় নিয়ে যেন মুশফিক এগিয়ে এলেন। তিনি রাসেলকে আবদারের সুরে অনুরোধ করলেন যেন ইয়র্কারের সমস্ত টেকনিক শিখিয়ে দেন। রাসেলও ঠিক তাই করলেন। একেবারে দৌড় শুরু করে ল্যান্ডিং পজিশন এমনকি সিমের অবস্থান কেমন হবে সবকিছুই শিখিয়ে দিয়েছেন। আর খুবই মনোযোগী ছাত্রের মত করেই সেসব মস্তিষ্কে যুক্ত করে নিয়েছেন মুশফিক।
তরুণ এই বোলারের এবারের বাংলাদেশে প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) যাত্রাটা মোটেও সুখকর ছিল না। প্রথম ওভারেই ১৯ রান হজম করতে হয়েছিল। তিনি নিজেই অবশ্য বলেছিলেন যে খানিকটা উন্মাদনা কাজ করছিল তার প্রথমবার যখন বল হাতে বাইশ গজে এলেন। কেননা এবারই যে প্রথমবারের মত খেলছেন তিনি। সে স্নায়ু-চাপ সামলে নিতে খুব বেশি সময় নেননি মুশফিক।
পরবর্তী ম্যাচ গুলোতেই ছন্দ ফিরে পেতে শুরু করেন। সেই সাথে ধরা দিতে শুরু করে উইকেটও। পাশাপাশি বেড়েছে তার উইকেটের ক্ষুধাও। ঠিক সে কারণেই পিনপয়েন্ট ইয়র্কার রপ্ত করতে চাইছেন মুশফিক। আর রাসেলের থেকে ভাল শিক্ষক এই মুহূর্তে অন্তত পাওয়া মুশকিল।
তাইতো সুযোগ লুফে নিয়েছেন মুশফিক। এমন সব সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হবে তরুণ ক্রিকেটারদের। সে উদ্দেশ্যেই তো বিপিএল আয়োজন।