মুশফিকুর রহিম, বাংলাদেশের ক্রিকেটের আস্থাভাজন এক ক্রিকেটার। বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে অনেক গৌরবময় অধ্যায়ের রচয়িতা মুশফিকুর রহিম। তবে বিগত বছর দুয়েক ধরে ব্যাট হাতে ধারাবাহিক পারফর্ম করতে না পারায় টাইগার সমর্থকদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশ তো বটেই সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রিকেট বিশ্বের ফ্লপলিস্টের প্রথম দিকে ছিলেন।
সমর্থকদের সমালোচনার জবাব ব্যাট হাতে দিতে চাইলেও সর্বশেষ এশিয়া কাপের ব্যর্থ হওয়ায় নিজের ফেসবুক পেইজে পোষ্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। অবসরের পরেও মুশফিক সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন মাঠের বাইরের বিষয় নিয়ে। এবার মাঠের খেলার প্রেক্ষিতে আবারো আলোচনায় সাবেক বাংলাদেশী এই অধিনায়ক। এশিয়া কাপের পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মাঠে নেমেই দারুন শুরু করলেন মুশফিকুর রহিম। জাতীয় লিগে ঢাকা মেট্রোর বিপক্ষে ম্যাচে সেঞ্চুরি করে স্বরণীয় করে রাখলেন প্রত্যাবর্তন ম্যাচ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দামামার মধ্যেও জাতীয় লীগের ম্যাচ চলমান। দ্বিতীয় পর্বের খেলার দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠেয় টায়ার-২ এর রাজশাহী বিভাগ বনাম ঢাকা মেট্রোর ম্যাচে মুশফিকুর রহিম রাজশাহী বিভাগের হয়ে মাঠে নামেন। ম্যাচের প্রথম দিন রাজশাহীর বোলারদের তোপের মুখে মাত্র ১৩৪ রানে অলআউট হয় ঢাকা মেট্রো। ঢাকা মেট্রোর হয়ে আবু হায়দার রনির ৪৭ ছাড়া বলার মতো স্কোর কেউ করতে পারেননি। নাহিদ রানা ও ফরহাদ রেজা তিনটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭২ রানে ২ উইকেট হারায় রাজশাহী বিভাগ। দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের দিনের সাথে মাত্র ১৭ রান যোগ করতেই তৌহিদ হৃদয়ের উইকেট হারায় রাজশাহী। আসাদুল্লাহ গালিবের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ৩৬ রান করেন এই ব্যাটার। তৌহিদ হৃদয়ের আউটের পর মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম।
অপর প্রান্তে দারুন ব্যাটিং করতে থাকা জুনায়েদ সিদ্দিকীকে নিয়ে দলীয় শতরানের কোটা পার করেন তিনি। অর্ধশতক পূরণের পর পরই স্পিনার শরিফুল্লাহর বলে প্লেইড অন হয়ে জুনায়েদ সিদ্দিকী আউট হয়ে যান। এরপর উইকেটে আসা প্রীতম কুমারকে নিয়ে দলের বড় সংগ্রহের এগোতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু দলীয় ২২৬ রানে অর্ধশতক করা প্রীতম কুমার রাকিবুলের বলে ও ২২৮ রানে নতুন ব্যাটসম্যান এসএম মেহরব রান আউটে কাটা পড়েন।
তবে মুশফিকুর রহিম ব্যাট হাতে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।ঢাকা মেট্রোর বোলারদের কোনোরূপ সুযোগ না দিয়ে নিজের শতকের দিকে এগিয়ে যান মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের ১১২ তম ওভারে আবু হায়দার রনির বলে দুই রান নিয়ে ২২৭ বলে শতরান পূর্ন করেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটার। তাঁর এই শতকটা খানিকটা ভিন্ন, অন্যসব ইনিংস থেকে। কেননা এবারে এনসিএলে খেলা হচ্ছে ডিউক বল দিয়ে। এর আগে অবশ্য কুকাবুরা বল দিয়েই খেলা হত ঘরোয়া ক্রিকেট।
ডিউক বলে ঘরোয়া লিগের প্রতিটা ব্যাটার বেশ ধুকছেন। এমনকি তামিম ইকবালের মত ব্যাটারও খাবি খাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে মুশফিকের এই শতক নিশ্চয়ই অনন্য। কঠিন মুহূর্তে আবারও নিজের ব্যাটে রান ফিরে পেয়ে নিশ্চয়ই বেশ আত্মবিশ্বাসী মুশফিকুর রহিম। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্যে নিজেকে প্রস্তুতে কোন কমতি নিশ্চয়ই রাখতে চাইবেন না মিস্টার ডিপেন্ডেবল।