আইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশে মুস্তাফিজ

‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজ কি নিস্তেজ হয়ে গেছেন? অনেকের মাঝে হয়ত এমন প্রশ্নের উদয় হয় কিংবা হয়েছে। তবে ২০১৫ সালে বিশ্বকে তাঁক লাগিয়ে দেওয়া মুস্তাফিজুর রহমান এখনও ফুরিয়ে যাননি। হয়ত তাঁর সেই ধার নেই। তবে তিনি আছেন। সাথে আছে তাঁর অসাধরণ বোলিং দক্ষতা। এখনও ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেটে তিনি বেশ কার্যকর একজন বোলার। এর প্রমাণ তো মিলেছেই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি প্রকাশিত বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশ-২০২১ এর তালিকা দেখে।

প্রথমবারের মতো আইসিসি প্রকাশ করেছে টি-টোয়েন্টির বর্ষসেরা একাদশ। এর বহু আগে থেকে অবশ্য বাকি দুই ফরম্যাটের বর্ষসেরা একাদশ প্রকাশ করে আসছিলো সংস্থাটি। ২০১৫ সালে বিশ্ব ক্রিকেটে পদার্পণের পরই সেই বছরের ওয়ানডের সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ। এবার তিনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও জায়গা করে নিলেন সেরাদের মাঝে। কিন্তু মুস্তাফিজ তো নেই আগের সেই মুস্তাফিজ। তো কি করে পেলেন তিনি এই সেরাদের একাদশে স্থান?

সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একটু ঘুরে আসা যাক ২০২১ সালে তাঁর বোলিং পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যান থেকে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের হয়ে ২০টি ম্যাচ খেলেছেন। স্ট্রাইক বোলার হিসেবে প্রতিটি ইনিংসেই বল করেছেন তিনি। তবে বেশকিছু ম্যাচে কোটা সম্পূর্ণ করেননি বিভিন্ন কারণে। ২০ ম্যাচে তাঁর উইকেট সংখ্যা ২৮টি। বছরে উইকেট সংগ্রাহকদের তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন তিনি।

১৪.৮ স্ট্রাইকরেটে উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি রান আটকাতে মুস্তাফিজ ছিলেন দারুণ কার্যকর। বিশেষ করে ডেথ ওভারে। ইনিংসের শেষভাগে মুস্তাফিজের দুইটি ওভার থেকে যাওয়া যেন ছিল এক অলিখিত নিয়ম। ইনিংসের শেষের দিকে সাধারণত ব্যাটারদের বড় শট খেলার প্রবণতা থাকে। সেই সময়েও বল করে দারুণ ইকোনমি রেট বজায় রেখেছেন মুস্তাফিজ। তাঁর ইকোনমি রেট ৭.০০। দারুণ এক কথায়।

মূলত রানের লাগাম টেনের ধরার পাশপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নিতে পারেন বলেই তিনি বেশ কার্যকরী একজন বোলার। তাঁর কার্যকারিতার প্রমাণ রেখেই তিনি জায়গা করে নিয়েছেন বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশে। তবে এই একাদশে একটা নাম যেন সকালের প্রথম আলোর মতো অবধারিত ছিলো। সেটা পাকিস্তানের উইকেট কিপার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের। কি অনবদ্য একটা বছর তিনি পার করেছেন ২০২১ সাল জুড়ে।

টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে হাজারের উপর রান করা একমাত্র ব্যাটার তিনি। পাকিস্তানের অপ্রতিরোধ্য যাত্রার সবচেয়ে বড় অবদান তাঁরই বলা চলে। এছাড়া তাঁর দুই সতীর্থ বাবর আজম ও শাহীন আফ্রিদিও একাদশে জায়গা পেয়েছেন। পাকিস্তানের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজন খেলোয়াড় রয়েছেন আইসিসির বর্ষসেরা একাদশে। এইডেন মার্করাম, তাবরাইজ শামসি ও ডেভিড মিলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন প্রোটিয়াদের।

তবে খানিক হতাশ হতে হবে নিউজিল্যান্ডের কোন খেলোয়াড় সুযোগ পাননি এই একাদশে। ফাইনালে উঠে শিরোপা হাতছাড়া করা ব্ল্যাকক্যাপসদের পুরো বছর জুড়েই পারফর্ম করা খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। নিউজিল্যান্ড ছাড়াও টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিং-এ দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের কোন খেলোয়াড়ও নেই ২০২১ এর বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশে।

আইসিসি বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি একাদশ (২০২১): জস বাটলার (ইংল্যান্ড), মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটকিপার-পাকিস্তান), বাবর আজম (অধিনায়ক-পাকিস্তান), এইডেন মার্করাম (দক্ষিণ আফ্রিকা), মিচেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া), ডেভিড মিলার (দক্ষিণ আফ্রিকা), তাবরাইজ শামসি (দক্ষিণ আফ্রিকা), জশ হ্যাজেলউড (অস্ট্রেলিয়া), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা), মুস্তাফিজুর রহমান (বাংলাদেশ), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link