পুরো বিশ্বকাপটাই চাই পাকিস্তানের

ভারত এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্বের ভূ-রাজনীতিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখন পর্যন্ত চারবার এই দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়েছিল। শুধু সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে নয়, বরং সব দিক দিয়েই একে অপরের চেয়ে সেরা হতে চায় প্রতিবেশী এই দুই দেশ। একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এই যে মানসিকতা – এটিই ক্রিকেটের মাঠে পাক-ভারত লড়াইকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।

যতবারই ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামে পাকিস্তান ততবারই রোমাঞ্চের ঢেউ উঠে পুরো ক্রিকেট বিশ্বে। তবে বিশ্বকাপে সেই রোমাঞ্চ শুধুই কাগজে-কলমে; মাঠের খেলায় পাকিস্তানকে কোন সুযোগই দেয়নি প্রতিবেশীরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ভারতকে হারাতে পারেনি ‘ম্যান ইন গ্রিন’।

ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারানোর লক্ষ্যে এবারের বিশ্বকাপে আরো একবার ক্রিকেটীয় দ্বৈরথে অবতীর্ণ হবে বাবর আজমের দল। মঞ্চটা এবার খোদ ভারতেই; সিংহের গুহাতেই সিংহকে পরাজয়ের লজ্জা দিতে নিশ্চয়ই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাঁরা। তবে দলটির এক্সপ্রেস পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি শুধু ভারত ম্যাচে সব মনোযোগ দিতে চান না। তিনি মনে করেন পাকিস্তানের স্বপ্ন আরো বড় কিছু হওয়া উচিত।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম আহমেদাবাদে ১৫ অক্টোবর মুখোমুখি হবে বিরাট, বাবররা। সর্বশেষ বিশ্বকাপে ২৭৩ মিলিয়ন দর্শক উপভোগ করেছিল ইন্দো-পাক ম্যাচ। এশিয়া কাপ নাটকীয়তার কারণে এবার সেই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

তবে হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচকেই নিজেদের একমাত্র লক্ষ্য বানাতে চান না শাহীন শাহ আফ্রিদি। তিনি চান তাঁর দল পুরো টুর্নামেন্টে সমানভাবে মনোযোগী হোক।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শুধু ভারত বনাম পাকিস্তান লড়াই নিয়ে চিন্তা করা বন্ধ করা উচিত, কেননা এটি শুধুমাত্র একটি ম্যাচ। বরং কীভাবে বিশ্বকাপ জিততে হয় সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে এবং দল হিসেবে এটাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

নতুন বলে সবচেয়ে সেরা পেসারদের একজন শাহীন শাহ। ইনসুয়িং ডেলিভারি কিংবা টো ক্র্যাশিং ইয়র্কার দিয়ে ব্যাটারের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলাটা বেশ সহজই তাঁর জন্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের টপ অর্ডার একই ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাই এবারও ভারতের বিপক্ষে এই তরুণের দিকে থাকবে আলাদা নজর।

যদিও ইনজুরির কারণে লম্বা একটা সময় পুনর্বাসনে থাকতে হয়েছিল পাক পেসারকে; এখন আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার জন্য অপেক্ষায় আছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে সবুজ জার্সিতে মাঠে ফিরবেন তিনি।

লাল বলের খেলা নিয়ে বেশ আগ্রহী শাহিন শাহ আফ্রিদি। এ ব্যাপারে তিনি জানান, ‘এক বছর পর পাকিস্তান টেস্ট দলে ফিরতে পেরে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। আমি টেস্ট ক্রিকেটকে খুব মিস করেছি এবং এই ফরম্যাট থেকে দূরে থাকা আমার জন্য কঠিন ছিল। আমি একটি স্মরণীয় প্রত্যাবর্তন করতে উন্মুখ হয়ে আছি।’

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের মাটিতে খেলেছিল পাকিস্তান। সেবার নিরাপত্তার অজুহাতে ধর্মশালা থেকে কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। ২০২৩ বিশ্বকাপেও ভারত, পাকিস্তান সেমিফাইনালে মুখোমুখি হলে সে ম্যাচ মুম্বাইয়ের পরিবর্তে ইডেন গার্ডেন্সে অনুষ্ঠিত হবে।

গোলাবারুদ বিহীন পাক-ভারত যুদ্ধের স্বাদ নিতে উদগ্রীব হয়ে আছে বিশ্বের সব ক্রিকেট সমর্থক। রাজনৈতিক সহিংসতা দূরে রেখে হাই ইন্টেন্সিটি ম্যাচ উপহার দিবে দুই দল এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link