টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তান দল এবং তাঁদের ‘মিডল অর্ডারের ক্রাইসিস’ যেন একসূত্রে বাঁধা। সেই এশিয়া কাপ থেকেই মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার দিকটি ভোগাচ্ছে তাঁদের। এই সমস্যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাত ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজেও। সতেরো বছর পর পাকিস্তানে খেলতে গিয়ে ইংরেজরা। পাকিস্তানকে তাঁদের ঘরের মাটিতেই ৪-৩ ব্যবধানে ধরাশায়ী করে ফিরছে। পাকিস্তানের বিশ্বকাপ মিশনের প্রাক্বালে এই সমস্যা দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানের ভক্ত সমর্থকদের। এই সমস্যার সমাধান খুঁজে না পেলে পাকিস্তানকে নড়বড়ে একটি দল নিয়ে মিশনে নামতে হবে।
পাকিস্তানের সাবেক বোলার আকিব জাভেদও এই ‘মিডল অর্ডার ডিসঅর্ডার’ নিয়ে বেশ চিন্তিত। এই সমস্যার সমাধানের পথও বাতলে দিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে পাকিস্তানকে তাদের মিডল অর্ডার সমস্যার সমাধান করতে হলে অধিনায়ক বাবর আজমকে চার নম্বর পজিশনে নামাতে হবে।
সাবেক এই ক্রিকেটার আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের চার নম্বরে বিরাট কোহলি নেই। পাকিস্তানের সেই পজিশনে খেলার মতো কেউ নেই। তাহলে এক্সপিরিমেন্ট করতে সমস্যা কি? বাবর ও রিজওয়ানের ওপেনিং জুটির ওপর পাকিস্তান অনেকটাই নির্ভরশীল। তাদের বাদ দেয়া হলে লোকেরা স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যায়। সমস্যা সমাধান করার জন্য, দলে বাবরকে চার নম্বরে আনতে হবে। তারপরে আপনি দেখতে পাবেন যে দলটি মিডল অর্ডারেও স্থিতিশীলতা পাবে।’
তিনি আরও মত দেন, ‘আমাদের তিনজন প্রধান ফাস্ট বোলারের অনুপস্থিতিতে, পাকিস্তানের হাতে থাকা বাকি বোলারদের ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নেই। মাথায় রাখতে হবে আপনি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাত্র কয়েকজন খেলোয়াড়ের উপর নির্ভর করতে পারবেন না।’
এদিকে পাকিস্তানের এককালের মিডল অর্ডারের ভরসা আসিফ আলীর রানের খাতাও বেশ নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। এই ব্যাটার রানের দেখা পাচ্ছেন না এশিয়া কাপের পর থেকেই। ছক্কা হাকানোর জন্য বিখ্যাত আসিফ আছেন বিরাট রান খরা। তাঁর মত একজন পাওয়ার হিটার যখন অফফর্মে থাকেন দলের জন্য সেটা বেশ দুশ্চিন্তার। আসিফ আলী প্রসঙ্গে আকিব জাভেদ বলেন, ‘তাহলে দুই-চার ওভার বাকি থাকলে আসিফ আলী ছয় নম্বরে আসতে পারেন এবং তাঁর খেলা খেলতে পারেন।’
গেল মাসেও একবার বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ানের ওপেনিং জুটির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন আকিব জাভেদ। তখন তিনি কিভাবে কোনও ভালো বিকল্প ছাড়াই শোয়েব মালিককে জোরপূর্বক দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাছাড়া ইফতেখার আহমেদ, আসিফ আলী এবং খুশদিল শাহ বারবার ব্যর্থ হওয়া স্বত্বেও ঘুরেফিরে তাঁদের খেলানোর জন্য নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের বিকল্প চিন্তা করার পরামর্শও দিয়েছিলেন।
সবমিলিয়ে পাকিস্তান দল অনেকগুলো আশঙ্কা নিয়েই বিশ্বকাপ মিশনে যাবে। তার আগে আপাতত পাকিস্তানের পরবর্তী মিশন নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ; কিউই কন্ডিশনে অন্তত চারটি ম্যাচ খেলবে তাঁরা। এই সুযোগে নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা; কিংবা মিডল অর্ডারে বদল আনবে কিনা; বাবর আজমকে চার নম্বরে খেলাবে কিনা; সবমিলিয়ে বিশ্বকাপ মিশন সফল করতে কি কি নতুন পরিকল্পনা করে সেটাই দেখার পালা।