গত কয়েক মাস ধরে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু ছিল এশিয়া কাপের ভেন্যু। একটা পর্যায়ে এমন পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছিল যে এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়েই সংশয় সৃষ্টি হয়েছিল। তবে সব শঙ্কার মেঘ কেটে গেছে। ভারত-পাকিস্তান দুই পক্ষের সম্মতির পর অবশেষে ঘোষিত হয়েছে এশিয়া কাপের সূচি।
পাকিস্তানের মাটিতে চারটি ম্যাচ বাদে বাকি সব ম্যাচই হবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। যে ভারতের পাকিস্তানে খেলতে না যাবার কারণে এত কিছু সেই ভারতকে শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপ খেলতে যেতে হবে না পাকিস্তানে। পুরো এশিয়া কাপের আলোচনায় পাকিস্তান বারবার বলে আসছিল ভারত এশিয়া কাপ খেলতে না আসলে তারাও এ বছরের শেষে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে খেলতে যাবে না ভারতে।
এশিয়া কাপের এমন সূচি ঘোষণায় তাই পাকিস্তানের অবস্থান কি সেই বিষয়েই আগ্রহ সবার। যদিও পাকিস্তানের অনেক সাবেক ক্রিকেটারই মনে করছিলেন, ভারত পাকিস্তানে না এলেও পাকিস্তানকে ঠিকই বিশ্বকাপ খেলতে যেতে হবে ভারতে।
কিছুদিন আগেই ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের খসড়া সূচি প্রতিটি ক্রিকেট বোর্ডে পাঠিয়েছে আইসিসি। যেখানে ১৫ অক্টোবর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবার কথা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ।
আইসিসির সেই খসড়া সূচির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। পিসিবি সভাপতি নাজাম শেঠি জানান, সেই সূচি অনুমোদন করা বা না করার পুরোটাই নির্ভর করছে পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
নাজাম শেঠি বলেন,’আমরা আইসিসিকে জানিয়েছি যে আমরা এই সূচিকে এখনই অনুমোদন বা অননুনোদন কোনোটাই দিতে পারছি না। আমাদের সরকারকেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেমনটা ভারতের সরকার করেছে। তাই আমরা আহমেদাবাদে খেলব কিনা সেটা আমাদের জিজ্ঞেস করার মানেই নেই। যখন সময় হবে তখন আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নেবে আমরা যাব কিনা। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবে আমরা কোথায় যাব। আমাদের সিদ্ধান্ত এই দুটো গুরুত্বপূর্ণ শর্তের ওপরই নির্ভর করবে।’
বিশ্বকাপের আর মাস তিনেক বাকি থাকলেও এখনো বিশ্বকাপের চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করেনি আইসিসি। ধারণা করা হচ্ছে পাকিস্তান এখনো সূচি অনুমোদন না করায় সূচি চূড়ান্ত করতে পারছে না আইসিসি।
নাজাম শেঠি জানালেন তারাই আয়োজক ভারতকে সূচি প্রকাশ করতে না করেছেন, ‘বিসিসিআই সূচি প্রকাশ করতে যাচ্ছিল কিন্তু আমরা তাদের বলেছি যে আমরা সরকারের অনুমতি ছাড়া তাদের কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না।’
এর আগে ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাবার আগেও ভারতে নিরাপত্তা প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল পাকিস্তান। তারাই ঠিক করেছিল ভারতের কোন কোন মাঠে ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান।
তবে পাকিস্তান সরকার ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে কবে সিদ্ধান্ত দেবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি পিসিবি চেয়ারম্যান শেঠি। কোনো সময় সীমার কথাও বলেননি তিনি। তবে দেরি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অক্টোবরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানে। দেশটির সরকারের এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটার কথা।
নাজাম শেঠি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তিনি সরাসরি কিছু বলেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পররাষ্ট্র কার্যালয়ের মতামতও প্রয়োজন এবং ভাবতে হবে। তাই এখন অনুমতি চাওয়াটা একটু অগ্রিম হয়ে যায়। আর তা ছাড়া আমরা জানি না তখন ক্ষমতায় কে থাকবে। তাই এখন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তবে সরকার স্থিতিশীল হওয়ার পর সময় হলেই আমরা অনুমতি চাইব।’
নাজাম শেঠি আরও বলেন, ‘আমরা আইসিসিকে বলেছি নিরাপত্তাব্যবস্থা বিবেচনা করে সরকার যদি আমাদের যাওয়ার অনুমতি দেয় তাহলে যাব, তা না হলে কিছু করার নেই। অনুমতি পেলে ভেন্যু পছন্দের বিষয়টি আসবে। কোথায় খেলব সেসব চূড়ান্ত হবে। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত, দুই বোর্ডের কিছু করার নেই। পিসিবি ও বিসিসিআই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সিদ্ধান্ত নেবে আমাদের সরকার, ২০১৬ সালে যেভাবে আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’