পাকিস্তান জুনিয়র লিগ বা পিজেএল – একটি নতুন নাম, নতুন এক ধারণা, নতুন এক সম্ভাবনা। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার প্রচেষ্টা। এমন নজির ক্রিকেট দুনিয়ায় বিরল। না শুধু বিরল না, প্রথম। পাকিস্তানের ক্রিকেটে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন এক মাত্রা। ক্রিকেটের সার্বিক উন্নয়নই যেখানে মূল প্রত্যাশা।
আগামী এক বছরের জন্যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাঁদের জাতীয় নারী ও পুরুষ দলের সকল খেলার দিনক্ষণ ঠিক করে পঞ্জিকা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেখানে সবার চোখটা আটকে গেছে অক্টোবর মাসের দিকে। সে মাসেই তো প্রথমবারে মত অনুষ্ঠিত হতে চলেছে পাকিস্তান জুনিয়র লিগ। একেবারেই নতুন এক পরিকল্পনা নিয়ে হাজির পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা।
বয়সভিত্তিক পর্যায়ে ক্রিকেটারদের আরও বেশি সুযোগ সুবিধা এবং বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের সাথে ক্ষুদে ক্রিকেটারদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আয়োজিত হতে চলেছে পিজেএল। ১৫-১৯ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের নিয়ে হবে এই আয়োজন।
পাকিস্তানে এই বয়সের খেলোয়াড়দের নিয়ে ওয়ানডে ও তিন দিনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলমান। তবে আধুনিক ক্রিকেটের সাথে পাল্লা দিয়ে যেন পাকিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ দিনের কাণ্ডারিরা গড়ে উঠতে পারে সে চিন্তা থেকেই এমন আয়োজনের পদক্ষেপ। পাকিস্তানের ক্ষুদে খেলোয়াড়দের পাশপাশি বিভিন্ন দেশের বয়সভিত্তিক খেলোয়াড়দের সুযোগ থাকছে এই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করার।
নিজেদের এই আয়োজন নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা। তিনি বলেন, ‘আমরা বেশ রোমাঞ্চিত এবং উচ্ছ্বসিত দীর্ঘ পরিকল্পনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আমরা পাকিস্তান জুনিয়র লিগের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে পেরেছি। এই ক্যাটাগরিতে এমন টুর্নামেন্ট আয়োজন সর্বপ্রথম।’
একেবারে পুরোদস্তুর নীতিমালা গড়ে তবেই পিজেএলের দিনক্ষণ প্রকাশ করেছে পিসিবি। শুধু দিনক্ষণ প্রকাশেই ক্ষান্ত নন তাঁরা। এই টুর্নামেন্টের আয়োজনে কোন গাফিলতি রাখতে নারাজ সংস্থাটি। তাইতো স্পন্সরশীপের জন্যে দরপত্র আহ্ববান করেছে পিসিবি। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে চারটি ভিন্নখাতে স্পন্সর করার জন্যে আহবান করা হয়েছে। টাইটেল স্পন্সরের পাশাপাশি, লাইভ স্ট্রিমিং পার্টনার, টিম ফ্রাঞ্চাইজির জন্যেও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পিসিবি।
মাঠের ক্রিকেট থেকে শুরু করে, টিভির পর্দায় প্রচার কোথাও কোন কমতি রাখতে চাইছে না পিসিবি। পরিপূর্ণ ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আবহাওয়াতে ক্ষুদ্রে ক্রিকেটারদেরকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে চাইছে তাঁরা। টুর্নামেন্ট নিয়ে রাজা বলেন, ‘এটা শহর কেন্দ্রিক একটা লিগ হবে। যেখানে প্লেয়ার ড্রাফটের মাধ্যমে খেলোয়াড়দেরকে দলে ভেড়াতে হবে। ড্রাফটে বিদেশি ক্ষুদ্রে ক্রিকেটাররাও থাকবে।’
শুধু যে বিদেশি ক্রিকেটাররা থাকছেন না। প্রতিটি দলের সাথে পাকিস্তানের কিংবদন্তিদের যুক্ত করা হবে, কোচ কিংবা মেন্টর হিসেবে। যেন তাঁদের মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিজ্ঞতাও ছড়িয়ে দেওয়া যায়। তাছাড়া এই টুর্নামেন্টের সম্প্রচার নিয়েও বেশ তৎপর পিসিবি। দলের ফ্রাঞ্চাইজি সত্ত্ব কেনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফ্রাঞ্চাইজিরা।
তবে দলগুলোর নাম পাকিস্তানের অন্যসব শহরের নামে হবে বলে জানিয়েছে পিসিবি। এমন দারুণ এক আয়োজন সত্যিকার অর্থেই বিশ্ব ক্রিকেটে এক বিশাল বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তাছাড়া আশা করা যায় যথাযথভাবে যদি এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যায় তবে ক্রিকেটের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেটের দারুণ উন্নতি সাধিত হবে। পাকিস্তানের দেখানো পথ অনুসরণ করে নিশ্চয়ই আরও বেশকিছু দেশ ক্ষুদে ক্রিকেটারদের ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টের পথে হাঁটবে।