রাজশাহীর গরমকে পিছনে ফেলে ব্যাট হাতে নামছেন অনূর্ধ্ব ১৯ দলের দুই বন্ধু আকবর আলী ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। না এই দুইজন ওপেন করতে নামছেন না তবে নিজেদের ইনিংসটা নতুন করে সাজানোর দায়িত্ব পড়েছে এই দুইজনের কাঁধে। ব্যাট হাতে আকবরের দায়িত্বশীলতা সবাই জানে। আর আকবরকে যোগ্য সঙ্গই দিচ্ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মৃত্যুঞ্জয়।
দেশের অন্যতম পেস সহায়ক উইকেটে দুজনই নিজেদের দলকে টেনে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্স বিসিবির আলাদা দুটি বিভাগ। দুটি ব্যানারেই চলছিল আলাদা করে ক্যাম্প। বাংলাদেশ টাইগার্সে আছে জাতীয় দলে থেকে বাদ পড়া ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকারদের মত তারকারা। আর এইচপিতে আছেন আকবর, মৃত্যুঞ্জয়দের মত উঠতি তারকারা।
এবার তাদের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে চারদিনের ম্যাচ। আজ রাজশাহীর বিভাগীয় স্টেডিয়ামে শুরু হয় বাংলাদেশ টাইগার্স ও হাই পারফর্মেন্সের এই ম্যাচ। পেস সহায়ক এই উইকেটে বল করতে নেমেই বাংলা টাইগার্সের হয়ে আগুন ঝড়ান হাসান মাহমুদ। গতি, বাউন্স ও নিয়ন্ত্রণে হাই পারফর্মেন্সের ব্যাটসম্যানদের হাঁপিয়ে তুলেন কিছুদিন আগেই ইনজুরি থেকে সেরে উঠা এই পেসার।
বাংলাদেশ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও যাবার কথা ছিল এই পেসারের। তবে শেষ মুহূর্তে তাকে আর দলের সাথে নেয়া হয়নি। জাতীয় দলে ডাক পেয়েও তাই ফেরা হলো না এই পেসারের। তবে রাজশাহীতে হাসান মাহমুদের এই বোলিং মাঠে বসেই দেখেছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। তরুণ এই পেসারের বোলিং দেখে হাবিবুল বাশার সুমনের চোখে মুখে যেন উচ্ছ্বাস ভেসে উঠছিল।
এই নির্বাচক হয়তো হাসান মাহমুদকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ না পাঠানোর আক্ষেপেই পুড়ছিলেন। তবে এই পেসারকে নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন হাবিবুল বাশার সুমন। জানা যায় হাসান মাহমুদকে বাংলাদেশ দল সারাবছরই তাদের সংস্পর্শে রাখতে চায়। এছাড়া ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা এই পেসারকে আরেকটু সময়ও দিতে চায় বাংলাদেশ।
আজ সকালেই হাই পারফর্মেন্সের বিপক্ষে তিন উইকেট তুলে নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। তার বোলিং তোপে চা বিরতির আগেই ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে এইচপি। এরপর আবার বৃষ্টির বাঁধায় খেলা খানিকক্ষণ বন্ধ ছিল। এরপরই এইচপির হাল ধরেন মৃত্যুঞ্জয় ও আকবর। দিন শেষে মৃত্যুঞ্জয় ৩০ ও আকবর ১৪ রানে অপরাজিত আছেন।
এই দুজনের ব্যাটে চড়েই আবার ম্যাচে ফিরে আসতে চাইছে এইচপি। যদিও আজ বৃষ্টির কারনে দিনের খেলা পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪০ মিনিট আগেই খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে আগামী সকালে পেসারদের জন্য ভীষণ সহায়ক উইকেটে আবার কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে এই দুই ব্যাটসম্যানকে।
সবমিলিয়ে রাজশাহীতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের যেন এক মেলা বসেছে। একদিকে নাঈম ইসলাম, ইমরুল কায়েসদের মত ফিরে আসার লড়াই করতে থাকা ক্রিকেটাররা। আবার আরেকদিকে আকবর আলী ও মৃত্যুঞ্জয়দের নিয়ে গড়া ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখানো একটি দল। তবে দুই দলের মধ্যে ক্রিকেটীয় লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে।
নিজেদের মধ্যে এমন সব ম্যাচ গুলো নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটকেই এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তাইতো দলগত পারফর্মেন্সের চেয়ে ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সে বেশি নজর সবার। কেননা এখান থেকেই তো প্রয়োজন হলে ডাকা হবে জাতীয় দলে। সেজন্যই প্রতিটি ক্রিকেটারের উপর বিশেষ নজর রেখেছেন দুই নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাক।