সীমিত ওভারে বুড়োদের বাজিমাৎ

যাদের কথা বলছি, যারা সবাই লম্বা সময় জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, একদম শেষ সময়ে গিয়েও তাঁরা প্রমাণ করেছেন কেবল অভিজ্ঞতার জোরে নয়, পারফরম্যান্স দিয়েই দলে টিকে থাকতে জানেন তাঁরা। ওয়ানডের সেই বুড়ো সেঞ্চুরিয়ানদের নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করাটা যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই বড় একটি স্বপ্ন। অন্যান্য ফরম্যাটের মতো ওয়ানডেতেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে একজন ব্যাটসম্যানের বয়স যত বাড়ে সেঞ্চুরি করাটা ততোটাই কঠিন হয়ে যায়। বয়সের চাপে অনেকেই পুরোনো সেই ফর্ম ধরে রাখতে পারে না। তবে কেউ কেউ আবার বুড়ো বয়সে সেঞ্চুরিও করেছেন।

যাদের কথা বলছি, যারা সবাই লম্বা সময় জাতীয় দলকে সার্ভিস দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, একদম শেষ সময়ে গিয়েও তাঁরা প্রমাণ করেছেন কেবল অভিজ্ঞতার জোরে নয়, পারফরম্যান্স দিয়েই দলে টিকে থাকতে জানেন তাঁরা। ওয়ানডের সেই বুড়ো সেঞ্চুরিয়ানদের নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।

  • জিওফ বয়কট (ইংল্যান্ড)

বয়স: ৩৯ বছর ৫১ দিন
ভেন্যু: সিডনি, ১৯৭৯
প্রতিপক্ষ: অস্ট্রেলিয়া
রান: ১২৪ বলে ১০৫

সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার জিওফ বয়কট রঙিন জার্সিতে সাদামাটা হলেও টেস্টে ছিলেন অসাধারণ একজন। ক্যারিয়ারে তিনি মোটে ওয়ানডে খেলেছেন ৩৬টি। যার মধ্যে করেছেন ১ টি সেঞ্চুরি। আর ওই একটি সেঞ্চুরি করেছেন ৩৯ বছর বয়সে!

সেই সেঞ্চুরিতে তিনি জায়গা করেছেন নিয়েছেন সবচেয়ে বেশি বয়সে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির তালিকায়। ১৯৭৯ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নেয় ইংল্যান্ড। সেখানে সিডনিতে অজিদের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে ইংলিশরা। সাত বাউন্ডারিতে ৩৯ বছর বয়সী বয়কট দুর্দান্ত সেঞ্চুরি তুলে নেন। ২৬৪ রানের টার্গেটে অজিদের বিপক্ষে ৭২ রানে জয় তুলে নেয় ইংলিশরা।

  • এড জয়েস (আয়ারল্যান্ড)

বয়স: ৩৯ বছর ১১১ দিন
ভেন্যু: দুবাই, ২০১৮
প্রতিপক্ষ: আরব আমিরাত
রান: ১৪৯ বলে ১১৬* রান

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই দেশের হয়ে খেলেছেন এমন একজন হলেন আইরিশ এবং ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় এড জয়েস। তবে ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়েই তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন। ৩৯ বছর বয়সে তিনি আয়ারল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করেন।

আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এক ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমে ব্যাট করে ২২২ রান করে স্বাগতিক আরব আমিরাত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আইরিশরা। সেখান থেকেই ১৩ চার ও ১ ছয়ে ১১৬ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও জেতেন তিনি।

  • ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

বয়স: ৩৯ বছর ১৫১ দিন
ভেন্যু: গ্রেনাডা, ২০১৯
প্রতিপক্ষ: ইংল্যান্ড
রান: ৯৭ বলে ১৬২

ইউনিভার্স বস খ্যাত ক্যারিবিয়ান দানব ক্রিস গেইল আছেন তালিকার তিনে। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় ইংলিশরা। প্রথমে ব্যাট করে ৪১৯ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা দাড় করায় ইংলিশরা। তখনি সবাই ভাবছিলো দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর আগেই ম্যাচ শেষ!

তবে ৩৯ বছর বয়সী ক্রিস গেইলের ৯৭ বলে ঝড়ো ১৬২ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৮৯ রান সংগ্রহ করে। ১৪ ছক্কায় সেদিন গ্রানাডা মাতিয়েছিলেন ইউনিভার্স বস খ্যাত গেইল । অবশ্য এরপর প্রায় দু’বছর গেলেও আর সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি।

  • সনাথ জয়সুরিয়া (শ্রীলঙ্কা)

বয়স: ৩৯ বছর ২১২ দিন
ভেন্যু: ডাম্বুলা, ২০০৯
প্রতিপক্ষ: ভারত
রান: ১১৪ বলে ১০৭

ওয়ানডেতে ১৩৪৩০ রানের মধ্যে ২৮টি সেঞ্চুরির মালিক সাবেক লঙ্কান গ্রেট মাতারা হ্যারিকেন খ্যাত সনাত জয়সুরিয়া। ৪০ বছর বয়সে তিনি সবশেষ সেঞ্চুরি করেন। সেই সাথে এই তালিকার দুইয়ে আছেন তিনি। ভারত সেবার শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়েছিলো।

প্রথম ওয়ানডেতেই নিজের স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিং করছিলেন জয়সুরিয়া। ১০ চার ও ১ ছয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। এরপর ব্যক্তিগত ১০৭ রানেই জহির খানের বলে বিদায় নেন তিনি। ২৪৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সহজ জয় পায় ভারত।

  • খুররম খান (আরব আমিরাত)

বয়স: ৪৩ বছর ১৬২ দিন
ভেন্যু: দুবাই, ২০১৪
প্রতিপক্ষ: আফগানিস্তান
রান: ১৩৮ বলে ১৩২*

পাকিস্তানি বংশদ্ভূত আরব আমিরাতের ব্যাটসম্যান খুররম খান আছেন এই তালিকার শীর্ষে। ক্লাব ক্রিকেটে অনবদ্য পারফরম্যান্স দেখিয়ে আরব আমিরাত দলে জায়গা করে নেন খুররম। অধিনায়ক হিসেবেও দলের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

২০১৪ সালে সবচেয়ে ‘বুড়ো’ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন তিনি। ২৮০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে চারে নেমে ১৭ চার ও ১ ছয়ে ১৩২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। এখন অবধি তাঁর এই রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেননি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...