এইবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মূলত ব্যস্ত ছিল টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়েই। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলে অনেকটা সময় পার করেছে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো। এছাড়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরও বসেছিল এবার। সেটার প্রস্তুতির জন্যই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশি মনোযোগ দিয়েছিল দল গুলো।
ফলে সব মিলিয়ে এবছর ওয়ানডে ক্রিকেট খুব বেশি খেলা হয়নি। তবুও যতটুকু হয়েছে তাতেই ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ কিছু পারফর্মার পাওয়া গিয়েছে। ফলে এবছর আইসিসি ওয়ানডে ক্রিকেটার অব দ্য ইয়্যার কে হবেন সেটা নিয়েও আছো জোর আলোচনা। এই দৌড়ে যারা এগিয়ে আছেন তাঁদের নিয়েই এই তালিকা।
- মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানদের একজন মুশফিকুর রহিম। লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের মূল স্তম্ভ হয়ে আছেন। এবছরও ওয়ানডে ক্রিকেটে পরিচিত মুশফিক। দারুণ ব্যাটিং করে জায়গা করে নিয়েছেন এই তালিকায়।
এবছর ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তিনি। ৯ টি ম্যাচ খেলে ৫৮.১৪ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৪০৭ রান। এইবছর ২ টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছেন একটি সেঞ্চুরিও। বাংলাদেশ এই বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডে ক্রিকেটে হোয়াইট ওয়াশ করেছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও জিতেছে সিরিজ। ফলে বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের তালিকায় ভালোভাবেই থাকবে মুশফিকুর রহিমের নাম।
- পল স্টার্লিং (আয়ারল্যান্ড)
আয়ারল্যান্ডের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যানদের একজন পল স্টার্লিং। মূলত আপসেটের কারণেই পরিচিত আয়ারল্যান্ড দল। ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সবাইকে অবাক করেছিল দলটি। এবছর অবশ্য দল হিসেবে খুব ভালো সময় কাটেনি দেশটির। ১৪ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র ৪ টিতে।
তবে পল স্টার্লিং বেশ ভালো একটি বছরই কাটিয়েছেন। ১৪ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে করেছেন ৭০৫ রান। এই বছর তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৫৪.২৩। এছাড়া করেছেন ৩ টি সেঞ্চুরি ও ২ টি হাফ সেঞ্চুরিও। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তানের মত দলের বিপক্ষে খেলে এই রান করেছেন তিনি।
- জেনম্যান মালান (দক্ষিণ আফ্রিকা)
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবে উঠে আসছেন জেনম্যান মালান। ব্যাট হাতে দারুণ ক্রিকেট খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। এবছর ওয়ানডে ক্রিকেটেও পার করেছেন দারুণ সময়। ফলে বর্ষসেরা ক্রিকেটার হবার দৌড়ে তাঁকেও বাদ রাখার উপায় নেই।
এই বছর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মোট ৮ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানে ৮৪.৮৩ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫০৯ রান। যদিও দল হিসেবে বছরটা একেবারেই ভালো যায়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারার পাশাপাশি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে করেছে ড্র।
- ফখর জামান (পাকিস্তান)
আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম আক্রমণাত্মক ওপেনারদের একজন ফখর জামান। এবছরও ওয়ানডে ক্রিকেটে দারুণ সময় কাটিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। অবশ্য বাবর আজমদের পুরো পাকিস্তানই এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দারুণ সময় কাটিয়েছে।
এই বছর পাকিস্তানও অবশ্য খুব বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি। দেশটির হয়ে এবছর মাত্র ৬ টি ওয়ানডে মাচ খেলেছেন ফখর জামান। সেখানে ৬০.৮৩ গড়ে তাঁর ঝুলিতে আছে ৩৬৫ রান। এছাড়া এবছর ১৯৩ রানের বিশাল এক ইনিংসও খেলেছিলেন তিনি।
- মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (বাংলাদেশ)
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের আরেক ভরসার নাম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের হয়ে দারুণ সব কীর্তি করেছেন রিয়াদ। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খুব একটা ভালো সময় না কাটালেও ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন দারুণ কার্যকর তিনি।
এবছর বাংলাদেশের হয়ে মোট ৩৯৯ রান করেছেন। নিচের দিকে ব্যাটিং করেও এই রান বেশ প্রশংসনীয়। এছাড়া তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৪৯.৮৮।