চোখের ঠিক সামনেই ফাঁদ পাতা। সেই ফাঁদে স্বেচ্ছায় লাফ দিলেন মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ক্রিকেটটা খেলছেন তিনি। অভিজ্ঞতার ঝুলিটা তো টইটুম্বুর। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতার ঝুলির মুখটাও সম্ভবত বন্ধ। তাইতো চোখের সামনেই পরিকল্পনার পুরো ছক থাকা সত্ত্বেও মুশফিক আটক।
শর্ট মিড অন অঞ্চলে একটা ফিল্ডার দাঁড়া করানো। স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা খাটো লেন্থে বল ফেলবেন জিম্বাবুয়ের ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। একেবারে খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে পুরো পরিকল্পনা। নেই কোন লুকোচুরি। মুশফিককে খাটো লেন্থের বল ছুড়লেন মাসাকাদজা। মুশফিক চাইলেই বলটাকে আলতো টোকায় লেগ সাইডে ঠেলে দিতে পারতেন।
কিন্তু কি মনে করে যেন তিনি পুল শট খেললেন। বল গিয়ে জমা পড়ল সেই শর্ট মিড অনের ফিল্ডারের তালুতে। টেস্ট ক্রিকেট কি করে খেলতে হয়, সেটা মুশফিকের চাইতে তো কারও বেশি জানার কথা নয়। বৈরি পরিস্থিতিতেও তো তিনি কম সময় পার করেননি। কিন্তু এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন শটের পক্ষে মুশফিকের যুক্তি কি?
এমনিতেই সেট ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত এমন অহেতুক শট খেলে আউট হয়েছেন, মুশফিকের হাতে অঢেল সময় রয়েছে। তবুও তিনি যুক্তিহীন এক শট খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন। জবাবদিহিতার উর্ধ্বে চলে গেলেই কি এমন অবান্তর কাজ করা যায় বাইশ গজে!
শেষ ১২ টেস্ট ইনিংসে একটি ফিফটিও নেই। তবুও তিনি একাদশের ‘অটোচয়েজ’। তিনি তো নিশ্চিতরুপেই জবাবদিহিতার উর্ধ্বে। ক’দিনই বা আর খেলবেন- এমন সহানুভূতিও রয়েছে তার পক্ষে। ঠিক সে কারণেই সম্ভবত মুশফিক নির্ভার। মস্তিষ্কের ব্যবহার আর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে চোখ বুলানোর বিন্দুমাত্র প্রয়োজন বোধ করেন না তিনি।
শেষ বেলায় নিজেকেই কি কলুষিত করে ফেলছেন না তিনি? মুশফিকে এমন নিরর্থক শট সিলেকশন দেখে তাকে ঠেকছে অবসাদগ্রস্থ। তার বিশ্রাম প্রয়োজন। তার অবসর প্রয়োজন। তার শরীরি ভাষাও যেন সেটাই বলতে চাইছে। তবুও কোন প্রকার যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়াই লম্বা হচ্ছে মুশফিকের ক্যারিয়ার। একটা ডেডরাবার টেনেই চলেছেন মুশফিক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট।