বয়স একটা বিষয় তো বটেই। তবে, স্পেনের ইতিহাসের সর্বকালের সেরাদের একজন বলে কথা। তাই স্পেন এবং প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) বর্তমান ডিফেন্ডার সার্জিও রামোসের বিশ্বকাপে না থাকাটা বিরাট খবরই বটে। বিশ্বকাপ দলে না থাকতে পারায় নিজের হতাশা লুকাননি তিনি। হতাশা জানিয়েছেন ইন্সটাগ্রামে।
দীর্ঘ ১৬ বছর রিয়াল মাদ্রিদের একনিষ্ঠ সেবক হয়ে থাকার পর গত মৌসুমেই পিএসজিতে পাড়ি জমান ৩৬ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার। গত মৌসুমের শুরতেই পায়ের পেশির ইনজুরিতে পরে মৌসুমের বেশিরভাগ সময়টাই সাইডলাইনে কাটাতে হয় রামোসকে। সেই সাথে ইনজুরি থেকে ফিরেও পিএসজির প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভরা একাদশে যথেষ্ট সুযোগ না পেয়ে সাইডবেঞ্চে বসেই কাটাতে হয় রামোসকে।তবে এই মৌসুমে রামোস যেন ঠিক আগের সময়ের রামোসের মতোই খেলছিলেন। ফ্রান্সের ঘরোয়া সব লীগ সহ লিগ ওয়ান, এমনকি চ্যাম্পিয়নস লিগেও দারুণ ছন্দে রয়েছেন।
কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তাতেও হয়ত মন ভরে নি স্পেনের কোচ লুইস এনরিকের। ২০২২ বিশ্বকাপের ২৬ সদস্যর দলে তিনি পাঁবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী এই তারকাকে রাখেননি তিনি রামোস ছাড়াও অবশ্য আরও বেশি কিছু সিনিয়র খেলোয়াড়দের দলে রাখেন লুইস এনরিকে। এর মধ্যে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলরক্ষক, ডেভিড ডি গিয়া, লিভারপুলের থিয়াগো আলকানতারা, ভিয়ারিয়ালের জেরার্ড মরেনো, বার্সেলোনার মারকোস আলানসো-সহ এমন অনেকেই আছেন। এর আগে গত বছরও স্পেনের ইউরোর দল থেকে বাদ পড়েছিলেন রামোস।
কিন্তু দল থেকে এই বাদ পড়া নিয়ে নিজের হতাশা একেবারেই লুকাননি। তিনি লিখেছেন, ‘ইনজুরির পরে সঠিক অবস্থায় ফিরে আসতে আমি আমার শরীর আত্মা সবকিছুকেই উজার করে দিয়েছি। ভাগ্য বশত, আমার নিজের কাছেই আমার মনে হয়েছে আমি ঠিক আগের লেভেলেই আছি সাথে সাথে ফুটবলটাকে আগের মত করেই উপভোগ ও করছি।’
রামোস আরও যোগ করেন, ‘বিশ্বকাপ? অবশ্যই এটা আমার সেইসব স্বপ্নের মধ্যের একটা ছিল,যেটা আমি অবশ্যই পূরণ করতে চেয়ে এসেছি। এটা আমার জন্য পঞ্চম বিশ্বকাপ হত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এখন আমাকে বাড়িতে বসেই এটা দেখতে হবে। আমার জন্য এটা মেনে নেয়া কষ্টের। কিন্তু দিন কারো জন্যই আটকে থাকে না।কিন্তু আমি আমার কোনো কিছুই পরিবর্তন করব না। না কমবে দলের প্রতি আমার আন্তরিকতা, চেষ্টা কিংবা ভালবাসা।’
সার্জিও রামোস ২০০৬ সালে স্পেনের হয়ে নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন। এটা হত তার পঞ্চম বিশ্বকাপ। ২০১০ সালে স্পেনের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী এবং ২০০৮ ও ২০১২ সালের ইউরো জয়ী দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন রামোস। এছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং পাঁচটি লা লিগা জেতা রেকর্ডও আছে তার । বিশ্বকাপে স্পেন এবার গ্রুপ ‘ই’-তে খেলবে। স্পেনের প্রথম ম্যাচ কোস্টারিকার বিপক্ষে। এছাড়াও গ্রুপের বাকি দুই দল হল জার্মানি এবং জাপান। এর আগে অবশ্য আগামী বৃহস্পতিবার জর্ডানের বিপক্ষে এক প্রস্তুতি ম্যাচে অংশ নেবে স্পেন।
হতে পারত, এটাই রামোসের শেষ বিশ্বকাপ। সেই সুযোগটা তিনি পেলেন না। ফলে, আর বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন না তিনি। আর এটাও ঠিক যে – হয়তো এর মধ্য দিয়ে জাতীয় দলের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে গেল তাঁর।