১.
১৯৯৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের নাম মনে আছে? মনে থাকাটা বিচিত্র না বরং মনে না থাকাটাই একজন ফুটবল প্রেমীর জন্য লজ্জা জনক। সেই বিশ্বকাপের জয়ী দলের অধিনায়কের কথা কারো মনে আছে? ফুটবলের একটু মনোযোগী দর্শক হলে সেটাও মনে রাখাটা অমুলক নয়। পরবর্তীতে দুঙ্গা কোচ হওয়ায় ভুলে যাওয়ার যতটুকু সম্ভাবনা ছিল সেটাও মুছে গিয়েছে।
কিন্তু কেউ যদি জিজ্ঞেস করে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট শুরুর দিকে ব্রাজিলের অধিনায়ক কে ছিলেন তাহলে অনেকেই ছোট খাট একটা হোঁচট খেতে পারেন। অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের অধিনায়ক ছিলেন রাই নামক একজন খেলোয়াড়। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই রাই অধিনায়ক হিসেবে খেলেছিলেন। কিন্তু নক আউট স্টেজ থেকে অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড পায় দুঙ্গা। আর রাই মূল একাদশেই খেলার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। কোয়ার্টার আর সেমি ফাইনালে তবুও বদলী হিসেবে কিছুক্ষন খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।
কিন্তু এত কথা বাদ দিয়ে হুট করে রাই কে নিয়ে পড়লাম কেন? প্রথম কারণ বলার আগে দ্বিতীয় কারণটা একটু বলি।
বিশ্বকাপে একজন খেলোয়াড়ের সবচেয়ে আকাঙ্খিত থাকে ট্রফিটাই। এরপর একজন খেলোয়াড়ের জন্য মর্যাদাসম্পন্ন পুরষ্কার হচ্ছে সেই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়া, যদি এর সাথে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরষ্কারটাও পাওয়া যায় তাহলে সোনায় সোহাগা। তবে কাজটা একটু কঠিন বলেই এটা অর্জন করতে পেরেছেন খুবই কম খেলোয়াড়। নির্দিষ্ট করে বললে সংখ্যাটা মাত্র ৪, ব্রাজিলের গ্যারিঞ্চা (১৯৬২), আর্জেন্টিনার মারিও ক্যাম্পেস (১৯৭৮), ইতালির পাওলো রসি (১৯৮২) আর ইতালির শিলাচি (১৯৯০)। প্রথম খেলোয়াড়টা হতে পারতেন রোমারিও।
ম্যারাডোনার পরবর্তী আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলোয়াড় হলেন রোমারিও। রোমারিও হলেন একই সাথে বিশ্বকাপ ও বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল বিজয়ী সর্বশেষ খেলোয়াড়। গোল্ডেন বুটটা পাননি, ১ গোল কম করায় সিল্ভার বুট পেয়েছিলেন। কিন্তু গোল্ডেন বুটটাও পেতে পারতেন। সেটা পাননি রাই এর জন্য। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই রাশিয়ার বিপক্ষে রোমারিওর গোলে ১-০ তে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। একটু পরে ব্রাজিল একটি পেনাল্টি পায়।
ধারণা করেছিলাম পেনাল্টিটা নেবে রোমারিও কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি নেয় অধিনায়ক রাই। সেই গোলটা রোমারিও করতে পারলে মারিও কেম্পেস আর পাওলি রসির পর তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল, গোল্ডেন বুট আর বিশ্বকাপ জয়ী খেলোয়াড়দের তালিকায় পৌঁছে যেতেন। যদিও একটু শিশুসুলভ অভিমান কারণ এটা নিশ্চিত নয় যে, সেই গোল করতে পারলেও পরবর্তীতে রোমারিও বাকি গোলগুলো করতে পারতেন। তবুও সেই বয়সে বিষয়টা মনে দাগ কেঁটেছিল। পরবর্তীতে যদিও বাস্তবতা বুঝতে পেরেছিলাম।
এখন মূল কারণটা বলি।
আমার বিশ্বকাপ দেখা শুরু ১৯৯০ সাল থেকে। সেই সময় থেকেই ল্যাটিনদের (বিশেষ করে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা) ১০ নম্বর জার্সিধারী খেলোয়াড়দের দিকে আমার একটু বাড়তি নজর ছিল। সেই হিসেবে রাইয়ের প্রতি একটা আলাদা নজর ছিল। সেই সময় ইন্টারনেট এতটা সহজলভ্য ছিল না। তাই পত্রিকাই ছিল ভরসা। সেখান থেকেই জানতে পেরেছিলাম রাই ছিলেন আরেক ব্রাজিলিয়ান লিজেন্ড সক্রেটিসের ছোট ভাই। কিন্তু রাইয়ের খেলা আমাকে হতাশ করেছিল।
১৯৯৪ সাল থেকে অনেক ল্যাটিন খেলোয়াড় ১০ নম্বর জার্সি পড়ে খেলেছেন। তবে ব্যাক্তিগতভাবে সব কিছু মিলিয়ে বিশ্বকাপে আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছেন রিভালদো।
শোনা যাক তাঁর ক্যারিয়ারের কিছু কথা।
২.
রিভালদো সর্বপ্রথম আমার নজরে পড়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে। সেই বিশ্বকাপটা ছিল রোনালদো লিমার। তাই রিভালদো একটু আড়ালেই ছিলেন। কিন্তু আমার চোখ ছিল নাম্বার টেনের প্রতি, তাই নজর এড়ায় নি। বিশ্বকাপের আগেও অবশ্য বার্সালোনার হয়ে রিভালদো দুর্দান্তই ছিলেন। লিগে ১৯ গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা, সাথে কোপা দেলরে আর লা লিগা। আগের তিন সিজনে বার্সালোনা লিগ জিততে পারেনি। রিভালদো আসার পরে এই জয়টা তাই খুব মর্যাদাসম্পন্ন ছিল। এই সিজনের পরেই শুরু হয় বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপে মরক্কোর সাথে গ্রুপ পর্বেই ১ গোল পেয়ে যান। কিন্তু মূল খেলাটা দেখান ডেনমার্কের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই পিছিয়ে যায় ব্রাজিল, ১১তম মিনিটে ম্যাচে ফেরান বেবেতো। ২৭ মিনিটে গোল করে এগিয়ে নিয়ে যান রিভালদো কিন্তু ৫০ মিনিটে আবারও ডেনমার্ক সমতায় ফেরে। শেষ পর্যন্ত ৬০ মিনিটে জয়সূচক গোলটা আসে রিভালদোর পা থেকেই।
সেমিতেও দূর্দান্ত খেলেন। ম্যাচে ব্রাজিলের পক্ষে লিমার করা একমাত্র গোলের অ্যাসিস্ট করেন রিভালদো। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে পুরো দলের ব্যর্থতায় রিভালদোও আর তেমনভাবে চোখে পড়েন নি। তবে সেই বিশ্বকপের অল স্টার দলে ঠিকই সুযোগ পেয়ে যান। পুরো টুর্নামেন্টে তিনটি করে গোল আর অ্যাসিস্ট করেন রিভালদো।
১৯৯৯ সিজনটা রিভালদোর কাটে স্বপ্নের মতো। এই বছরেও বার্সার হয়ে লা লিগা জেতেন, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম পর্বের বাঁধাই পার হতে পারে নি। গ্রুপ পর্বে সঙ্গী ছিল দুই জায়ান্ট ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেড আর বায়ার্ন মিউনিখ যে দুই দল কিনা সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই ফাইনাল খেলে। ব্রাজিলের হয়েও দূর্দান্ত খেলেন রিভালদো। এই বছরেই কোপা আমেরিকা জেতেন এবং কোপার সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড় হন। ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের হয়ে ট্রেবল জেতার পরেও ডেভিড বেকহ্যাম কে তাই রিভালদোর কাছে হার মানতে হয়। ব্যালন ডি অর আর ফিফা বর্ষসেরা পুরষ্কারের দুটোই বেকহ্যামকে হারিয়ে জেতেন রিভালদো।
কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ব্যর্থতার জন্য রিভালদো বার্সা ছেড়ে দিতে চান। এমনকি ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের অধিনায়ক রয় কিন তাকে দলে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রিভালদো বার্সালোনাতেই থেকে যান। সেই সিজনে কোচ ফন গালের সাথে কথা বলে রিভালদো তার নিয়মিত পজিশন লেফট উইং ছেড়ে অ্যাটাকিং মিডে খেলতে চান। কোচের সাথে বিবাদে জড়িয়েও এই পজিশনে খেলে রিভালদো সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন এবং বার্সালোনা সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে। এর পর ফন গালের চাকরি চলে যায়।
এরপরের মৌসুমে রিভালদো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল করার পরেও লিগে বার্সালোনার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত পরবর্তী সিজনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুযোগ না পাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচের আগে অবস্থাটা এমন ছিল যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুযোগ পাওয়ার জন্য ভ্যালেন্সিয়াকে ড্র করলেই চলবে, এমনকি ১-০ গোলে হারলেও সমস্যা নেই। কিন্তু বার্সালোনাকে জিততেই হবে, সেটাও কমপক্ষে ২ গোল করে।
ম্যাচটা বার্সালোনা জিতে ৩-২ গোলে, রিভালদো হ্যাট্রিক করেন। কিন্তু শুধু স্কোর লাইন রিভালদোর কীর্তিগাথা পুরোপুরি বুঝাতে পারবে না। তাই বিষয়টা একটু বর্ণনা করার চেষ্টা করি। প্রথম গোলটা ছিল তার ট্রেডমার্ক ফ্রি কিক থেকে করা, যা কিনা ডান কর্ণারের নিচ দিক থেকে বাঁক খেয়ে প্রবেশ করে।
দ্বিতীয় গোলটি করেন বডি ফেইন্টের মাধ্যমে ডিফেন্ডারকে ধোঁকা দিয়ে ডি বক্সের ২৫ গজ বাইরে থেকে। কিন্তু এর পরেও কাজের কাজটা হচ্ছিল না। কারণ ৯০ মিনিট শেষেও ম্যাচের স্কোর লাইন ২-২। অবশেষে ম্যাচের ৯০তম মিনিটে বলটা ডি বক্সের কাছে রিসিভ করে ওভারহেড বাই সাইকেল কিক দিয়ে গোলটা করেন। এই গোলটা অনেকদিন ইএসপিএন স্টার স্পোর্টস চ্যানেলে লা লিগার বিজ্ঞাপন হিসেবে দেখানো হয়েছে।
পরের সিজনে রিভালদো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট করেন এবং বার্সালোনা আবারও সেমিতে পৌঁছে। কিন্তু লিগে আবারও চতুর্থ হয়। এরপরেই শুরু হয় ২০০২ বিশ্বকাপ।
৩.
২০০২ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মূল খেলোয়াড় রিভালদোই ছিলেন। ইনজুরি থেকে ফেরত আসা লিমা যদিও শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করে দেন কিন্তু এর আগ পর্যন্ত রিভালদোই উজ্জ্বলতা ছড়িয়েছিলেন। রিভালদোর সম্পর্কে একটা অভিযোগ ছিল তিনি বার্সালোনার জার্সি গায়ে যতটা উজ্জ্বল জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ততটা নন। অথচ এর আগেই একটা কোপা জেতানো হয়ে গিয়েছে, সর্বোচ্চ গোলদাতা আর সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার পাওয়ার পরেও এমন অভিযোগ। এ থেকে বুঝা যায় ব্রাজিলিয়ানদের তার কাছে কেমন প্রত্যাশা ছিল।
প্রতিদান দেওয়ার দায় তাই ছিল রিভালদোর। সেটা ভালোভাবেই দিলেন। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই গোল করেন এবং তিনটি ম্যাচে ম্যান অব দি ম্যাচ হন। সবচেয়ে গ্রেট ম্যাচ ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচটি। সেই ম্যাচে দিনহোর সাথে যুগল বন্দীতে করা গোলটি বিশ্বকাপের ইতিহাসের একটা অন্যতম সেরা গোল। ফাইনাল ম্যাচ শুরুর আগে লিমার গোল ছিল ছয়টি আর রিভালদোর পাঁচটি। রিভালদো একটু স্বার্থপর বলেই পরিচিত ছিলেন।
সেটার প্রমাণ দিলেন ফাইনাল ম্যাচেও। ব্রাজিলের প্রথম গোলটি প্রথমে রিভালদোর শটই ছিল কিন্তু সেটা কানের হাত ফসকে ফেরত আসার পরে লিমা গোল করেন। অথচ শট না নিয়ে সুবিধাজনক পজিশনে থাকা লিমাকেই পাস দিতে পারতেন রিভালদো। লিমার পরের গোলটিতেও রিভালদো একটা ফেক পাস দিয়ে ডিফেন্ডারদেরকে বিভ্রান্ত করেন। সেই বিশ্বকাপেও রিভালদো অল স্টার দলে সুযোগ পান এবং সেই বিশ্বকাপের সিলভার বুটের পুরষ্কার জেতেন।
রিভালদো যদিও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের প্রথম তিনেও ছিলেন না, কিন্তু তার কোচ স্কলারির মতে রিভালদোই ছিলেন সেই বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। সেরা নির্বাচনে আমরা অবশ্যই কমিটির কথা মেনে নেব। এই তথ্যটা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য ছিল কোচের গেমপ্ল্যানে রিভালদোর ভূমিকা কতটুকু ছিল সেটা বোঝানো। যেখানে লিমার মতো খেলোয়াড় ছিলেন সেই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড়।
বিশ্বকাপের পরে ফন গাল আবার দলে ফেরত আসেন এবং রিভালদো দল ছেড়ে এসি মিলানে চলে যান। মিলানের হয়ে রিভালদো একটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে যদিও তার অবদান তেমন কিছু ছিল না। এছাড়াও তিনি একটা কোপা ইটালিয়া আর উয়েফা সুপার কাপ জেতেন।
মিলান ছাড়ার পর রিভালদো অনেক বার ক্লাব বদল করেন। বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে সফলও হন। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বয়সেও ২০০৬ আর ২০০৭ সালে গ্রীক লিগের সেরা বিদেশী খেলোয়াড়ের পুরষ্কার পান। এছাড়া ২০০৯ সালে উজবেক লিগের টপ স্কোরার হন।
২০১৪ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিক ভাবে ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে ২০ বছরের ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানেন। কিন্তু ২০১৪ সালে অবসর ভেঙ্গে আবার ফেরত আসেন এবং তার ছেলে রিভালদিনহোর সাথে একই দলে খেলে একই ম্যাচে দু’জনেই গোল করেন।
৪.
রিভালদো তার সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন । প্রথাগত ল্যাটিনদের মতোই ড্রিবলিং এ পারদর্শী, বাঁক খাওয়া ফ্রি কিকের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। ভিশন এবং পাসিং দক্ষতার জন্য একজন দূর্দান্ত অ্যাসিস্ট মেকারও ছিলেন। স্ট্রাইকার না হওয়া সত্বেও তার স্কোরিং দক্ষতা সাধারণ অনেক স্ট্রাইকারদের চেয়েও বেশি ছিল। ব্রাজিলের হয়ে ৭৪ ম্যাচে ৩৫ টি গোল সেই সাক্ষ্যই দেয়। তবে আমার কাছে রিভালদোর একটা বিষয় দূর্দান্ত লাগতো।
ল্যাটিন আর ইউরপিয়ানদের মাঝে একটা বড় পার্থক্য হচ্ছে খেলার স্টাইল। ইউরোপিয়ান গ্রেটরা সাধারণত লং পাসে খেলে অভ্যস্ত, যেমন বেকহ্যাম। মাঝ মাঠ থেকে বাড়ানো বেকহ্যামের পাস কিভাবে যেন ডি বক্সের মাঝে সতীর্থদের মাথা খুঁজে পেত। অন্যদিকে ল্যাটিনরা সচরাচর শর্ট পাসে খেলে অভ্যস্ত। রিভালদো শর্ট পাসের সাথে সাথে লং পাসেও পারদর্শী ছিলেন।
২০০২ সাল পর্যন্ত আমার কাছে জিদানের চেয়েও প্রিয় ছিলেন রিভালদো। সময় পাল্টায়,পছন্দ পরিবর্তন হয়। সময়ের সাথে সাথে রিভালদোও পছন্দের তালিকায় একটু নিচে নেমে গিয়েছে কিন্তু বাদ পড়ে যায় নি।বার্সা লিজেন্ড জাভির মতে বার্সালোনার সফলতার পেছনে যতজন খেলোয়াড়ের অবদান ছিল তাদের মাঝে রিভালদো ছিলেন সবচেয়ে আন্ডাররেটেড।
রিভালদো যে সময়ে বার্সেলোনার হয়ে খেলেন তখন ক্লাবটা খুব বড় কিছু ছিল না। রিভালদো ক্লাব ছাড়ার পরেও অনেকদিন বার্সেলোনা ট্রফি ছাড়া ছিল । পরে দিনহো নামের এক যাদুকর এসে বার্সেলোনা কে কক্ষ পথে পৌঁছায়। সেই গল্প আরেকদিন করা যাবে।